ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর তার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন এসেছে।
এই পদে নিয়োগ পেয়েছেন বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী।
মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন হয়। তাকে তিন বছরের জন্য এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও পরিবর্তন আসছে। গত ২০ আগস্ট গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদের নিয়োগের চুক্তি বাতিল করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এর পর থেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ছিল।
ড. ইউনূসের হাত ধরে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বতন্ত্র একটি আইনে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সময় এর ৬০ শতাংশ মালিকানা ছিল সরকারের, ৪০ শতাংশ ছিল ঋণ গ্রহীতাদের। পরে সরকারের মালিকানা ২৫ শতাংশে নেমে আসে।
গ্রামীণ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, ব্যাংকের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন অধ্যাপক ইকবাল মাহমুদ। এরপর যথাক্রমে মো. কায়সার হোসেন, মো. হারুনুর রশিদ, আকবর আলি খান, রেহমান সোবহান, মো. তবারক হোসেন, খন্দকার মোজাম্মেল হক এবং এ কে এম সাইফুল মজিদ এই ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সর্বশেষ চেয়ারম্যান সাইফুল মজিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) শিক্ষক। তাকে ২০২০ সালের ১৬ মার্চ প্রথম ওই পদে নিয়োগ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। প্রথমে দুই বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়ার পর তাকে দুই বছর করে আরও দুইবার পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ড. ইউনূস ২০১১ সালের ১১ মে পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখায় ২০০৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূস যৌথভাবে নোবেল পুরস্কারও পান।
বয়সসীমা অতিক্রমের কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ড. ইউনূসকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়। তার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়েও হেরে যান তিনি। এরপর তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের টানাপড়েন চলে, তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও হয়, যেগুলো হয়রানিমূলক বলে সমালোচনা রয়েছে।
ইউনূসের পর নুরজাহান বেগম, মো. শাহজাহান, এ এস এম মহিউদ্দিন, রতন কুমার নাগ, বাবুল সাহা, আবুল খায়ের মো. মনিরুল হক, জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার, মো. আব্দুর রহিম খান এবং মো. মোসলেম উদ্দিন এই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন নূর মোহাম্মদ।
গত রবিবার সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ফেরদৌসীকে গ্রামীণ ব্যাংকের পর্ষদের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনের নিয়োগ বাতিল করা হয়।