‘গ্রিন টি আবার চা নাকি! বড় জোর ঘাস পানির মধ্যে ফুটিয়ে খাওয়া! চা খাচ্ছি টাইপ ফিল করা,’ চায়ের দোকানের এক ভদ্রলোকের মন্তব্য। তিনি কাপের পর কাপ চা খান। সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশে প্রচলিত চায়ের সঙ্গে গ্রিন টি-কে মেলানো একটু কঠিনই। স্বাদের সঙ্গেও মিল নেই।
রং বা দুধ চা, এগুলোর সঙ্গে তুলনায় গ্রিন টি কতটা চাঙা করতে পারে শরীর সে-ই জরিপ এ মুহূর্ত হাতের কাছে নেই। তবে স্বাস্থ্যকর বিবেচনায় গ্রিন টি এগিয়ে আছে নিঃসন্দেহে।
অনেকেই দাবি করেন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিভিন্ন উদ্ভিজ্জ রাসায়নিক যৌগে সমৃদ্ধ গ্রিন টি শরীরের চর্বি ক্ষয় করতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি-তে থাকা যৌগগুলোর একটি হচ্ছে ক্যাফেইন। যদিও এক কাপ গ্রিন টি-তে ক্যাফেইনের পরিমাণ ২৪ থেকে ৪০ মিলিগ্রাম। আর এক কাপ কফিতে তা ১০০ থেকে ২০০ মিলিগ্রাম। তারপরও, এই স্বল্প পরিমাণ ক্যাফেইনও শরীরে কিছু প্রভাব ফেলে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এক কাপ গ্রিন টি খেলে রক্তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এই স্বাস্থ্যকর পানীয়টি ক্যাটেচিন নামের একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর।
বাজারে ওজন কমানোর হরেক রকম সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায়। এগুলোর তালিকায় রাখা যেতে পারে গ্রিন টিকেও।এর কারণ হলোো, গ্রিন টির নির্যাস চর্বি ক্ষয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। বিশেষ করে ব্যায়ামের সময়।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ব্যায়ামের আগে যারা গ্রিন টি খান, তারা না খাওয়া দলের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি চর্বি পোড়াতে পারেন।
আট সপ্তাহের আরেকটি গবেষণা বলছে, গ্রিন টি-তে থাকা ক্যাটেচিন ব্যায়াম এবং বিশ্রাম উভয় সময়ই চর্বি পোড়াতে পারে।
শরীরে উচ্চ পরিমাণের ভিসারাল ফ্যাট টাইপ টু ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগসহ বেশ কয়েকটি গুরুতর রোগের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।
গ্রিন টি-তে থাকা ক্যাটেচিনের উপর বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্ষতিকারক ভিসারাল ফ্যাট কমানোয় এটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
সুতরাং চিরাচরিত চায়ের স্বাদ না দিতে পারলেও গ্রিন টি যে অনেক জটিল রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে সহায়তা করতে পারে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।