Beta
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫

এবার প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫% : এডিবি

SS-ADB-130324
[publishpress_authors_box]

চলতি অর্থ বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি খানিকটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ম্যানিলাভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

সংস্থাটি বলেছে, ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থ বছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।

প্রবৃদ্ধির এই হার গত ২০২৪-২৫ বছরের চেয়ে কিছুটা বেশি হলেও রপ্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বাড়তি শুল্ক প্রবৃদ্ধিকে চাপে ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেছে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি।

এডিবি আরও বলেছে, বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘনঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এসবের প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের (এডিও) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার সর্বশেষ পরিস্থিতি বিশ্নেষণ করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে এডিবি। এতে আমদানি, রপ্তানি, রেমিটেন্স, বিনিয়োগসহ বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

প্রতি বছর এপ্রিলে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক প্রকাশ করা হয়ে থাকে। পরে বিশ্ব অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে তিনটি আপডেট রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। একটি করা হয় জুলাইয়ে। পরেরটা প্রকাশ করা হয় সেপ্টেম্বরে। আর সর্বশেষটা প্রকাশ করা হয় ডিসেম্বরে।

সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে মঙ্গলবার। পরের তিনটি প্রতিবেদনকে সম্পূরক প্রতিবেদন বলা হয়ে থাকে।

২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৪ দশমিক ২২ শতাংশ।

গত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ধরেছিল শেখ হাসিনার সরকার। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনে অন্তর্বর্তী সরকার।

তিন মাস হয়ে গেল অর্থ বছর শেষ হয়েছে। কিন্তু এখনও ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

গত ২৭ মে যে সাময়িক হিসাব প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে গত অর্থ বছরের ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বলা হয়েছিল।

২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেটে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থ বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থ বছরেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ইতিবাচক ধারার কারণে ভোগব্যয় বাড়বে। এছাড়া আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়বে।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, “ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানোর, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনও স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য খুবই জরুরি।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে।

এজন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থ বছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।

এডিবির পূর্বাভাস অনুকূল পরিবেশ ও আঁটসাট মুদ্রানীতির ফলে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসতে পারে।

এডিবি বলছে, চলতি অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিটেন্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত