সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে ঢাকায় নিজের কার্যালয়ে বৈঠকের পর তাকে নিয়ে কক্সবাজারে গেলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
কক্সবাজারে জাতিংসংঘ মহাসচিবের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের কথা রয়েছে। শুক্রবার সেখানে ১ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে তার ইফতার পার্টির আয়োজনও করেছেন ড. ইউনূস।
চার দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন গুতেরেস। তার এই সফর রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ কোনও দিশা দেবে বলে আশা করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
শুক্রবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন হোটেলে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে দেখা করেন। প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমানও দেখা করেন তার সঙ্গে।
এরপর জাতিসংঘ মহাসচিব যান তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে। সেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার বৈঠক হয় বলে বাসস জানিয়েছে।
বৈঠকের পর আন্তোনিও গুতেরেসকে নিয়ে বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার রওনা হন ড. ইউনূস। কক্সবাজার বিমানবন্দরে তাদের অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও পুনর্বাসন উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম।
কক্সবাজারে দিনব্যাপী কর্মসূচিতে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন এবং ইফতার পার্টিতে অংশ নেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
ড. ইউনূসকে সম্প্রতি লেখা একটি চিঠিতে গুতেরেস বলেছিলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন ধরে রাখতে কাজ করে যাবে জাতিসংঘ।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর নিপীড়নের মুখে ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশ সীমান্তে নামে রোহিঙ্গা ঢল। তাতে কয়েক মাসেই ৭ লাখের বেশি শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।
এর আগে থেকেই বাংলাদেশে ছিল ৩ লাখের মতো রোহিঙ্গা। শরণার্থী জীবন কাটানো রোহিঙ্গাদের ঘরে নতুন সন্তান আসায় সংখ্যাটি এখন ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়।
এই রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই আছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে। কিছু রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে নেওয়া হয় কয়েক বছর আগে।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে লাখ লাখ শরণার্থীর ভার বহন করে সবচেয়ে বেশি ভুগছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হলেও কোনও শরণার্থীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো যায়নি।
এর মধ্যে ২০০২ সালে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা নেয় সামরিক বাহিনী। এখন আবার বিদ্রোহী দলগুলো শক্তিশালী হয়ে ওঠায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।