Beta
শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫
Beta
শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫

শেখ হাসিনার সাবেক এপিএস হাফিজুর রহমান লিকুর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ও রহিমা আক্তার। ছবি : সংগৃহীত
গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ও রহিমা আক্তার। ছবি : সংগৃহীত
[publishpress_authors_box]

ক্ষমতার অপব্যবহার, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। গত ২৯ মে পর্যন্ত যিনি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব; ২০১৯ সাল থেকে পালন করে আসছিলেন এই দায়িত্ব।

দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞায় হাফিজুর রহমান লিকুর পাশাপাশি রয়েছে তার স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামও।

এই দম্পতির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আবেদন করেছিলেন দুদকের উপপরিচালক মো. আহসানুল কবীর পলাশ। সোমবার সে আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারক দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন বলে জানান দুদকের কোর্ট ইন্সপেক্টর আমির হোসেন।

গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ছাত্রজীবনে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে ভিপি ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ পান।

কয়েকটি সূত্র সকাল সন্ধ্যাকে জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অনেক আগেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশ ছেড়েছেন হাফিজুর রহমান লিকু। তারা মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে অবস্থান করছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।

আসলেই তারা দেশে আছেন কিনা, সে বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেননা ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেই আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। যাদের মধ্যে একজন সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতাও।

তবে সাবেক সরকারসংশ্লিষ্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও এমপিদের অনেককেই এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ভারতে দেখা যায় এবং সে ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এছাড়া শামীম ওসমানকেও সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি শপিং মলে দেখা গেলে বলে দাবি করেছেন সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদনে বলা হয়, গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ক্ষমতার অপব্যবহার, নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। বিষয়টি রাষ্ট্রের স্বার্থে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

হাফিজুর রহমান লিকু ও রহিমা আক্তার বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে জানতে পেরেছে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য এই দুজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। আর তাই আদালতে আবেদন করে দুদক।

দেশে রাজনৈতিক পালাবদল বা কোটা সংস্কারের আন্দোলন প্রবল হওয়ার আগেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চাকরি হারান হাফিজুর রহমান লিকু। পদমর্যাদায় শীর্ষস্থানে না থাকলেও দল ও সরকারের বিভিন্ন স্তরে তিনি প্রভাব রাখতেন বলে অভিযোগ ছিল।

২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ২০২৪ সালের ২৯ মে সেই চুক্তি বাতিল করা হয়। বাতিলের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গাজী হাফিজুর রহমানের সঙ্গে সরকারের সম্পাদিত চুক্তিপত্রের অনুচ্ছেদ-৮ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ পদে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ২০২৪ সালের ১ জুন থেকে বাতিল করা হলো।

যদিও বাতিলের কারণ সম্পর্কে সে সময় কিছু জানানো হয়নি। তবে সেদিন বিকালেই আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ প্রসঙ্গ তোলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কর্তব্যে কোনও বিচ্যুতির কারণেই এই নিয়োগ বাতিল।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত