Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

পরিবেশ দূষণে ক্ষতিপূরণ ১৪ বছরে আদায় হয়নি অর্ধেক

জাতীয় সংসদ ভবন
জাতীয় সংসদ ভবন
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

পরিবেশ দূষণ বন্ধে অভিযুক্তদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের আইন আছে দেশে। কিন্তু নানা কারণে সবসময় ক্ষতিপূরণ আদায় করা যায় না। পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত ১৪ বছরে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতিপূরণ ধার্য হলেও আদায় হয়েছে এর অর্ধেকেরও কম।

রবিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবেশ দূষণ, পাহাড় কাটা, জলাধার ভরাটসহ পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি হয় এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় মন্ত্রণালয়। অভিযানে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক বেঁধে দেওয়া হয়।

সেখানে একটি হিসাব তুলে ধরা হয়। তাতে দেখা যায়, ২০১০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৩ হাজার ৭০৬টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়। যেখানে ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়েছিল ৫১৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ২৪৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

গত ১৫ বছরে ৭৮ হাজার ৯৭১টি শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিবেশগত ছাড়পত্র পেয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে ইটিপি প্রযোজ্য দুই হাজার ৯১২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানে। যার মধ্যে দুই হাজার ৪৮৭টিতে ইটিপি স্থাপন করা হয়েছে।

বৈঠকে রাবারকে কৃষি পণ্য হিসাবে স্বীকৃতির সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। একই সঙ্গে রাবার বাগানের ইজারা মূল্য সাড়ে সাত লাখ টাকা থেকে কমাতেও বলা হয়েছে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, “রাবারকে কৃষি পণ্য হিসাবে নির্ধারণ করতে আমরা সুপারিশ করেছি। রাবার বোর্ডের আওতায় চাষিদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ, যাতায়াতের জন্য রাস্তা তৈরি করতে অনুরোধ করেছি।

“আমদানি শুল্ক কম থাকায় দেশে উৎপাদিত রাবার বিক্রি কম হয় বলে কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বলা হয় আমদানিতে পাঁচ শতাংশ শুল্ক দিতে হয় কিন্তু রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এতে উৎপাদকেরা নিরুৎসাহিত হচ্ছে।”

দেশের বাজারে রাবারকে শিল্প পণ্য হিসেবে গণ্য করা হয় উল্লেখ করে দীপংকর তালুকদার বলেন, সে কারণে এর বিপরীতে উচ্চ শুল্ক দিতে হয়। এখন কৃষি পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হলে কোনও শুল্ক দিতে হবে না। এতে উৎপাদনে উৎসাহীর সংখ্যা বাড়বে।

আশির দশকে দেশের পাহাড়ি এলাকায় রাবার চাষের জন্য ৪০ বছর মেয়াদী প্লট ইজারা দেওয়া শুরু হয়। সে সময় প্লট প্রতি ভাড়া ছিল ৭৫ হাজার টাকা। মেয়াদ শেষের পরে ইজারা নবায়ন ফি বাড়ায় সরকার। সেসময় তা ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে সাত লাখ টাকা করা হয়।

এক লাফে এমন মূল্য বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক বলে মনে করেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি ৭৫ হাজার থেকে ১০ গুণ বাড়িয়ে সাড়ে সাত লাখ টাকা করা অযৌক্তিক। এটা এক লাখ কিংবা দেড় লাখ টাকা হতে পারে।”

বিশেষ আমন্ত্রণে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীও বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন।

বৈঠকে থাকা একজন জানিয়েছেন, ফজলে করিম চৌধুরী রাবারের হাইব্রিড গাছ রোপণের পরামর্শ দিয়েছেন। লিজ নিয়ে রাবার উৎপাদন না করার অভিযোগও তোলেন তিনি।

যারা বাগানে রাবার উৎপাদন করবে না তাদের লাইসেন্স বাতিল করার পরামর্শ দেনও ফজলে করিম চৌধুরী।

জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, “উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কম্বাইন্ড গবেষণার উদ্যোগ নিয়েছি। এ ছাড়া কেউ লিজের শর্ত ভঙ্গ করছে কিনা খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিচ্ছি। এরপর তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”

সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে সব ধরনের দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়গুলো সমন্বিতভাবে কাজ করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সংরক্ষিত বনাঞ্চল সংরক্ষণসহ নতুন বনাঞ্চল সৃষ্টির ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য আ স ম ফিরোজ, শাহাব উদ্দিন, আবদুল ওদুদ, তানভীর শাকিল জয়, গালিবুর রহমান শরীফ, এস এম আতাউল হক, ছানুয়ার হোসেন ছানু এবং আরমা দত্ত।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত