Beta
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

হামাসপ্রধানকে হত্যা : মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা

বুধবার (৩১ জুলাই, ২০২৪) লেবাননের দক্ষিণ বন্দর নগরী টায়ারে আল-বাস ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসমাইল হানিয়ার হত্যার নিন্দায় হামাস সদস্যদের বিক্ষোভ। ছবি: এপি।
বুধবার (৩১ জুলাই, ২০২৪) লেবাননের দক্ষিণ বন্দর নগরী টায়ারে আল-বাস ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসমাইল হানিয়ার হত্যার নিন্দায় হামাস সদস্যদের বিক্ষোভ। ছবি: এপি।
[publishpress_authors_box]

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া ইরানে গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন। বুধবার ভোররাতে ইরানের রাজধানী তেহরানে এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিনি নিহত হন।

হামাস ও ইরান এই হত্যাকাণ্ডের জন্য জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইতোমধ্যে ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল ‘যে কোনও ফ্রন্টে আমাদের বিরুদ্ধে যে কোনও আগ্রাসনের জন্য খুব চড়া মূল্য আদায় করবে’।

‘সামনে চ্যালেঞ্জিং দিন আছে’, বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কিন্তু নেতানিয়াহু ইসমাইল হানিয়াকে হত্যায় ইসরায়েলের দায় স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেননি।

তবে গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল ইসমাইল হানিয়াসহ শীর্ষ হামাস নেতাদের হত্যার প্রতিজ্ঞা করেছিল।

হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়া গত কয়েক বছর ধরে কাতারে বসবাস করছিলেন। ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তেহরানে গিয়েছিলেন তিনি।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ধ্বংস কামনা করে দেওয়া দর্শক-শ্রোতাদের স্লোগানের মধ্য দিয়ে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শপথ গ্রহণ করেন।

ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে ইসমাইল হানিয়া তেহরানের একটি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সেখানেই মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর তার ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।

ইসমাইল হানিয়ার ওপর হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েল লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ কমান্ডারকে লক্ষ্য করেও হামলা চালায়।

বৃহস্পতিবার তেহরানে হানিয়ার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, শুক্রবার দোহায় জানাজা শেষে কাতারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লুসাইলে তাকে দাফন করা হবে।

উত্তেজনায় বিস্ফোরণের আশঙ্কা

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষিতে এই হত্যাকাণ্ড, বিশেষ করে এর সময় এবং স্থান বিবেচনায়, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনায় বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইসরায়েল ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে এই হামলা চালিয়েছে। ইরান পাল্টা জবাব দিলে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ বেধে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। আর ইরান ও ইসরায়েল সংঘর্ষে জড়ালে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রতিশোধ নেওয়া আমাদের কর্তব্য। ইসরায়েল আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমাদের প্রিয় অতিথিকে হত্যা করে নিজের জন্য কঠোর শাস্তি প্রস্তুত করেছে।”

এর আগে গত এপ্রিলে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেট ভবনে বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইসরায়েল ১৬ জন ইরানিকে হত্যা করেছিল। ওই হামলার পরও দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধ বেধে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।

ওই হামলার পর ইরান প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের ওপর সরাসরি হামলা চালায়। ইসরায়েল সেই হামলা প্রতিহত করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টায় সেই উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারেনি।

হানিয়ার হত্যাকাণ্ড হামাসকে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তির জন্য আলোচনা থেকে সরে যেতেও প্ররোচিত করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা বলছেন, আলোচনায় বেশ অগ্রগতি হচ্ছিল।

এ ছাড়া এই হত্যাকাণ্ড ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ইতোমধ্যে উত্তেজনাকেও আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। গত রবিবার ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে রকেট হামলায় ১২ জন যুবক নিহত হয়। ইসরায়েল ওই হামলার জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করলেও হিজবুল্লাহ তা অস্বীকার করেছে।

রবিবারের ওই হামলার পর ইসরায়েল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর একজন শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করে। হিজবুল্লাহ বুধবার তাদের কমাণ্ডার ফুয়াদ শুকুরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, তিনি ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনেই ছিলেন।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরাও এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ইরান ও ইসরায়েলের সঙ্গে হামলার বিষয়ে আলোচনার জন্য বুধবার একটি জরুরি সভা করেছে। তবে জাতিসংঘের সবচেয়ে শক্তিশালী সংস্থাটি বৈঠকের পর কোনও সম্মিলিত বার্তা জারি করেনি।

পরিষদের ১৫ সদস্য বিভিন্নভাবে সতর্ক করেছেন যে, মধ্যপ্রাচ্য একটি অনিশ্চিত পর্যায়ে রয়েছে এবং উত্তেজনা বাড়ার ঝুঁকি নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। তারা সংযম এবং কূটনীতির মাধ্যমে বিরোধ নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন এবং দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা উত্তেজনার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র কী বলছে

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার কোনও লক্ষণ নেই এবং গাজার জন্য একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি এখনও সম্ভব। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনভাবে তেহরানে কী ঘটেছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি।

প্রশ্ন উঠেছে, ইসরায়েল তার শীর্ষ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে হামলার আগেই বিষয়টি জানিয়েছিল কিনা। হানিয়া হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, “এটি এমন একটি বিষয় যা আমরা জানতাম না বা এর সঙ্গে জড়িত ছিলাম না।”

চ্যানেল নিউজ এশিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় ব্লিনকেন বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় এই হত্যার প্রভাব সম্পর্কে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেছেন, তিনি এখনও ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত সংঘাতের কূটনৈতিক উপায়েই সমাধানের আশা করছেন।

অস্টিন বলেন, “আমি মনে করি না যে যুদ্ধ অনিবার্য। আমি মনে করি কূটনীতির জন্য সর্বদাই একটি জায়গা এবং সুযোগ রয়েছে। আমি সব পক্ষকে সেই সুযোগগুলোর সদ্ব্যবহার করতে দেখতে চাই।”

তবে উত্তেজনা প্রশমণে চেষ্টারত আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ উত্তেজনা কমাতে চেষ্টারত একটি পশ্চিমা দেশের একজন কূটনীতিক বলেছেন, বৈরুত ও তেহরানে হামলা গাজা যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনাকে ‘প্রায় নিহত’ করেছে।

স্পর্শকাতর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কূটনীতিক বলেন, এই দুই হামলা মধ্যপ্রাচ্যকে ‘বিধ্বংসী আঞ্চলিক যুদ্ধের’ দিকে ঠেলে দিতে পারে। তবে তার দেশ ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ উত্তেজনা কমাতে কাজ করছে।

প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে হামাস

ইসমাইল হানিয়ার ঘনিষ্ঠ হামাসের আরেক শীর্ষ নেতা খলিল আল-হাইয়া ইরানে সাংবাদিকদের বলেছেন, হানিয়ার পর যিনি হামাসের নেতা হবেন তিনিও যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে একই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করবেন। পাশাপাশি একই নীতিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাবেন।

হামাসের শীর্ষ পরামর্শক পরিষদ কাতারে হানিয়ার শেষকৃত্যের পর তার উত্তরাধিকারী নির্বাচনের জন্য শিগগিরই বৈঠকে বসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হামাসের সামরিক শাখা এক বিবৃতিতে বলেছে, “হানিয়ার হত্যাকাণ্ড যুদ্ধকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে এবং পুরো অঞ্চলে এর বড় প্রভাব পড়বে।”

গাজায় গত প্রায় ১০ মাস ধরে চলমান ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ ও স্থল হামলায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ১ লাখ মানুষ আহত হয়েছে। এ ছাড়া গাজার প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়িঘর ও হাসাপাতাল ধ্বংস হওয়াসহ বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মানুষ।

এমন ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের পরও হামাস দেখিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা এখনও গাজায় লড়াই করতে এবং ইসরায়েলে রকেট হামলা চালাতে পারে। তবে হানিয়া হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য হামলা বাড়ানোর ক্ষমতা হামাসের আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

ইসরায়েল প্রস্তুত

ইসরায়েল সাধারণত তাদের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ পরিচালিত হত্যাকাণ্ড বা ভিন দেশে হামলার বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এক বিবৃতিতে বলেছেন, “বৈরুতে হিজবুল্লাহ কমান্ডারের ওপর হামলার পর ইসরায়েল যুদ্ধ চায় না। তবে আমরা সব সম্ভাবনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

তিনি অবশ্য হানিয়াকে হত্যার কথা উল্লেখ করেননি এবং লয়েড অস্টিনের সঙ্গে তার ফোনালাপের বিষয়েও কিছু বলেননি।

হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বকে গাজায় হত্যা করার ক্ষেত্রে সাফল্য না পাওয়ার কারণেই ইসরায়েল হানিয়াকে ইরানে গুপ্তহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ৭ অক্টোবরের হামলার পরিকল্পনার জন্য ইসরায়েল হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বকে দায়ী করে হত্যার ঘোষণা দেয়।

ইসমাইল হানিয়া ২০১৯ সাল থেকে গাজা ছেড়ে কাতারে নির্বাসিত জীবনযাপন করছিলেন। গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েল লেবানন ও সিরিয়ায় হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে ইরানে অবস্থানরত অবস্থায় হানিয়াকে হত্যা করা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ।

ইসরায়েল অতীতেও ইরানে বহু গুপ্তহত্যা চালিয়েছে। ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের ওপর বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েল গুপ্তহত্যা অভিযান চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সালে একজন শীর্ষ ইরানী সামরিক পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ তেহরানের বাইরে গাড়িতে ভ্রমণ করার সময় একটি রিমোট-নিয়ন্ত্রিত মেশিনগানের গুলিতে নিহত হন।

মৃত্যুর আগে ইসমাইল হানিয়াকে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে বেশ প্রাণবন্ত দেখাচ্ছিল। তিনি হাসছিলেন এবং হাততালি দিয়েছিলেন।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তোলা ছবিতে তাকে ফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদ ও হিজবুল্লাহর নেতাদের পাশাপাশি বসে থাকতে দেখা যায়। ইরানি গণমাধ্যমে পেজেশকিয়ানের সঙ্গে তার কোলাকুলির দৃশ্য দেখানো হয়। মঙ্গলবার অনুষ্ঠানের আগে হানিয়া খামেনির সঙ্গেও দেখা করেছিলেন।

তার কয়েক ঘণ্টা পরই তেহরানে হানিয়ার অস্থায়ী বাসভবনে একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে এবং তিনি নিহত হন। হানিয়ার ঘনিষ্ঠ হামাস কর্মকর্তা আল-হাইয়া পরে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, হানিয়া একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েল গাজায় তাদের অভিযান চালিয়ে যাবে। বুধবার তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরায়েল দেশি-বিদেশি চাপ এড়িয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় অনেক সাফল্য অর্জন করেছে।

ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার পর বৃহস্পতিবার ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজায় তাদের সাম্প্রতিক এক হামলায় হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, গত ১৩ জুলাই গাজার খান ইউনিস এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় মোহাম্মদ দেইফ নিহত হন।

ওই বিমান হামলার পর হামাসের আরেক কমান্ডার রাফা সালেমেহ নিহত হওয়ার খবরও দিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।

আইআরজিসির হুঁশিয়ারি

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) সতর্ক করেছে, ইসরায়েলকে ইরান এবং এই অঞ্চলে তার মিত্রদের কাছ থেকে “কঠোর ও বেদনাদায়ক প্রতিক্রিয়া”র মুখোমুখি হতে হবে। জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত একটি প্রভাবশালী ইরানি সংসদীয় কমিটি বুধবার এই হামলার বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক করে।

ইসরায়েলের ওপর সরাসরি প্রতিশোধ নেওয়ার পাশাপাশি, ইরান তার মিত্রদের মাধ্যমেও আক্রমণ বাড়াতে কাজ করতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর জোট ‘প্রতিরোধের অক্ষ’ নামে পরিচিত। এর মধ্যে রয়েছে হিজবুল্লাহ, হামাস, ইরাক ও সিরিয়ার শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো এবং ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা।

হামাসের প্রতি সমর্থন দেখাতে হিজবুল্লাহ ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই গুলি বিনিময় করছে। এটি একটি উত্তপ্ত এবং মারাত্মক সংঘাত, যা বারবার সর্বাত্মক যুদ্ধে পরিণত হওয়ার হুমকি তৈরি করছে।

হানিয়া হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে লেবানন, ইরাক ও ইয়েমেনের আঞ্চলিক বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠকও করেছে ইরান।

রয়টার্স জানায়, ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসলাামিক জিহাদ, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী, লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইরাক ও সিরিয়ার শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীগুলোর প্রতিনিধিরা সেই বৈঠকে অংশ নেয়।

ধারণা করা হচ্ছে ইরান, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেন থেকে এক যোগে ইসরায়েলে হামলা চালানো হতে পারে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত