Beta
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনাতেই যুদ্ধবিরতি আলোচনা চায় হামাস

ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত গাজা।
ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত গাজা।
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার ভিত্তিতেই গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে চায় হামাস। গত মে মাসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন পরিকল্পনাটি তৈরি করেছিল।

গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা পুনরায় শুরু করতে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের আহ্বানের পর রবিবার এই কথা জানিয়েছে হামাস।

গত সপ্তাহে, কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তি নিয়ে ফের আলোচনা শুরুর জন্য ইসরায়েল ও হামাসকে আহ্বান জানায়। এজন্য আগামী ১৫ আগস্টকে দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল বৃহস্পতিবার জানিয়েছিল, তারা বৈঠকে অংশ নিতে আলোচকদের একটি দল পাঠাবে।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপস্থাপিত কাঠামোতে নতুন শর্ত দেওয়ার পর আলোচনা থেমে যায়।

সোমবার যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির নেতারাও আলোচনা পুনরায় শুরু করতে এক যৌথ আহ্বানে জানান, “এ নিয়ে আর দেরি করা যাবে না।”

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্মানুয়েল ম্যাঁক্রো ও জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসও যৌথ বিবৃতিতে একই কথা বলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরাও একমত যে আর দেরি করা যাবে না। উত্তেজনা রোধ করতে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করছি। উত্তেজনা কমাতে এবং স্থিতিশীলতার পথ খুঁজতে কোনও প্রচেষ্টাই বাদ যাবে না।”

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া গত ৩১ জুলাই গুপ্তহত্যার শিকার হন ইরানের রাজধানী তেহরানে। ইরান ও হামাস এর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেয়।

হানিয়াকে হত্যার কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েল লেবাননের রাজধানী বৈরুতেও হামলা চালায়। ওই হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ফুয়াদ শুকুর নিহত হন। হিজবুল্লাহও তাই ইসরায়েলের ওপর প্রতিশোধ নিতে চায়।

এরপর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে এবং ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর জোট ওআইসিসহ পশ্চিমারা ইরানকে ইসরায়েলে হামলা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে। বিনিময়ে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

ইরানও এই আহ্বানে ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা পেলে ইরানও আর ইসরায়েলে হামলা করবে না।

এমন অবস্থায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার বিষয়ে রবিবার এক বিবৃতিতে হামাস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পরিকল্পনার ভিত্তিতেই আলোচনা শুরুর কথা বলেছে। আগে যেখানে আলোচনা থেমেছিল সেখান থেকেই তারা শুরু করতে চায়।

হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন কোনও প্রস্তাব নিয়ে এখন আলোচনা করতে গেলে শুধু সময় নষ্ট হবে। এতে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যাও চলতে থাকবে। এরচেয়ে বরং ইসরায়েলকে আগের প্রস্তাব অনুযায়ীই আলোচনায় বাধ্য করা উচিৎ।

এর আগে বাইডেনের পরিকল্পনায় ইসরায়েল দুটি শর্ত জুড়ে দেওয়ায় আলোচনায় থেমে গিয়েছিল। শর্ত দুটি হলো— উত্তর গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়িঘরে ফিরে আসার সময় তাদের ভেতর থেকে হামাস যোদ্ধাদের ধরার জন্য যাচাই-বাছাই করা হবে। আর মিশর সীমান্তবর্তী ফিলাডেলফি করিডোরের নিয়ন্ত্রণও ইসরায়েলকে দিতে হবে।

কিন্তু হামাস তাতে রাজি হয়নি। এখনও হামাস সেই দুই শর্ত আরোপের আগের প্রস্তাব অনুযায়ীই আলোচনা শুরুর কথা বলছে।

এদিকে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরুর আহ্বানের মধ্যেই গত শুক্রবার ইরানের ইসলামি বিপ্লবী বাহিনী ইসরায়েলকে শাস্তি দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলকে রক্ষায় তাদের প্রস্তুত থাকার কথা জানায়।

ইরানকে চাপে রাখতে সৌদি আরবের ওপর থেকেও যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। সৌদি আরবকে আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য শক্তিশালী আক্রমণাত্মক অস্ত্র দেওয়ার ঘোষণাও দেয়।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আব্রাহামও গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে রওয়ানা শুরু করেছে। পাশাপাশি রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে একটি গাইডেড মিসাইল সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশও দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত