Beta
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

বাংলাদেশকে ‘ফাইনালে’ তুললেন হামজা-সোহেল রানা

বাংলাদেশ দলের জার্সিতে প্রথম গোল পেয়েছেন হামজা চৌধুরী। ছবি: বাফুফে
বাংলাদেশ দলের জার্সিতে প্রথম গোল পেয়েছেন হামজা চৌধুরী। ছবি: বাফুফে
[publishpress_authors_box]

ম্যাচের শুরুতেই পার্থক্য গড়ে দিলেন হামজা চৌধুরী। এরপর পুরো স্টেডিয়ামে এক দুর্দান্ত শটের মায়াজালে মোহগ্রস্ত করেছেন সোহেল রানা। দুইয়ে মিলে ভুটানের বিপক্ষে দুর্দান্ত বাংলাদেশকে দেখলো সংস্কার করা নতুন ঢাকা স্টেডিয়াম। ২-০ গোলের এই জয়ে বাংলাদেশ ‘সেমিফাইনাল’ জিতে এখন সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ‘ফাইনালের’ অপেক্ষায়। 

সেই ভারত ম্যাচের মতো বুধবার (৪ জুন) পরিশ্রম করতে হয়নি হামজাকে। ভুটানের খেলায় ছিল না অমন আগ্রাসী রূপ, তাই চ্যালেঞ্জও কম ছিল হামজার। তখনই এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার গোলের খাতা খুলে আবির্ভূত হয়েছেন নতুন রূপে। ৬ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার কর্নার কিকে তিনি দুর্দান্ত স্পট জাম্প করে ভুটানি ডিফেন্ডারদের ছাড়িয়ে লক্ষ্যভেদী হেড করেন। এই ‘ক্লাস’ কিন্তু আপনি ঘরোয়া ফুটবলে খুব দেখবেন না।

গোলের পর বাংলাদেশের খেলায় আরও গতি যোগ হয়। স্বাগিতকদের প্রতাপের সামনে ভুটান বড়ই সাদামাটা।  হামজা-রাকিবরা প্রবল প্রতাপে খেলে আরো গোলের সুযোগ তৈরি করেও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি প্রথমার্ধে। দুর্দান্ত খেলেছেন রাকিব, শুরুতে তার ডান দিকের ঝলক দেখা গেলেও পরে বাঁ দিকেও চমৎকার খেলেছেন তিনি। তার দৌড়ে গ্যালারিতে আরেক গোলের স্বপ্ন জেগে উঠলেও সতীর্থদের ব্যর্থতায় তা আর হয়ে উঠেনি। অধিনায়ক জামালেরও ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় গোলের সম্ভাবনা জেগেছিল। কিন্তু শেষমেষ ফাঁকি দিতে পারেননি ভুটানের রক্ষণভাগকে। ৪৪ মিনিটে তাজউদ্দিনের ক্রসে ফাহমিদুলও বলে ঠিকঠাক মাথা ছোঁয়াতে পারেননি।    

এই ফাহমিদুলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো হুল্লোড় হয়েছিল। তাকে কেন ভারত ম্যাচে বাদ দেওয়া হয়েছিল- এই বলে কোচ-কর্মকর্তাদের কাঠগড়ায় তোলার অবস্থা হয়েছিল। তার খেলা না দেখলেও তাকে বানিয়ে ফেলেছিল ফেসবুকের ‘ম্যারাডোনা’। অবশেষে তার অভিষেক হয়েছে সংস্কার করা ঢাকা স্টেডিয়ামের মাঠে। প্রায় ৩ বছর পর ফুটবল গড়িয়েছে এই মাঠে।

ইতালিয়ান লিগের চতুর্থ স্তরে খেলা ১৭ বছর বয়সী ফাহমিদুলের সামনে গোলের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন রাকিব ও কাজেম শাহ মিলে। সদ্ব্যবহার করতে পারেননি তিনি। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার মিনিট খানেক আগেও তাজউদ্দিনের ক্রসটি তার মাথায় পড়লেও কাজে লাগাতে পারেননি ফাহমিদুল।

তাই প্রথমার্ধ শেষ হয় ওই এক গোলের লিডে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে হামজা, জামাল ও কাজেমের জায়গায় নামেন ইব্রাহিম, হৃদয় ও শেখ মোরসালিন। পারে ফাহমিদুল ও রাকিবের জায়গায় নামেন ফাহিম ও আল আমিন। কোচ সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে সবাইকে পরীক্ষা করে নিচ্ছেন। তাতে শেখ মোরসালিন পাস মার্ক পেতে পারতেন। দুটো শট করেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। একবার ডিফেন্ডার আরেকবার গোলরক্ষক সেভ করেন।

তবে কাজের কাজ করেছেন সোহেল রানা। দলে নড়বড়ে হওয়া তার জায়গাটি যেন এক শটেই খানিকটা পোক্ত হয়ে গেল। ৫০ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে এই মিডফিল্ডার বাঁ পায়ের অবিশ্বাস্য এক শটে ভুটানি গোলরক্ষককে পরাস্ত করেছেন। অনেকদিন পর তার পায়ে দেখা গেছে অমন গোলার মতো শট। জাতীয় দলের এমন ম্যাচে এরকম শটই মানায়।

তাতে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা যেন একটু দ্বন্দ্বেই পড়ে গেলেন সিঙ্গাপুর ম্যাচের একাদশ বাছাইয়ে। এখন কার জায়গায় খেলাবেন শমিত সোমকে?

দলের বেশিরভাগ ফুটবলার পারফর্ম করলে এমন মধুর সমস্যা হবে। কোচও নিশ্চয়ই এমন চান। ভুটান ম্যাচের ‘সেমিফাইনাল’ শেষে সিঙ্গাপুর ম্যাচের ‘ফাইনাল’ দেখার আপেক্ষায় থাকবে সবাই। ‘ফাইনাল’ মানে ১০ জুন বাংলাদেশের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় ম্যাচ।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত