টাইফুন ‘ইয়াগি’র আঘাতের পর ভিয়েতনামে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর থেকে বন্যা ও ভূমিধসে এ পর্যন্ত দেশটিতে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন ‘ইয়াগি’ ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে ব্যাপক বৃষ্টি নিয়ে শনিবার ভিয়েতনামে আঘাত হানে। টাইফুনের আঘাতে একটি সেতু ভেঙে পড়ে এবং রেড নদীর তীরবর্তী প্রদেশগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
টাইফুন আঘাত হানার পর রেড নদীতে প্রবাহিত পানির পরিমাণ ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এতে নদী তীরবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তলিয়ে যায় রাস্তা-ঘাট।
এ পরিস্থিতিতে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রেড নদীর তীরবর্তী একটি এলাকার বাসিন্দা ৫৬ বছর বয়সী নগুয়েন ভান হুং বলেন, “আমার বাড়ি এখন নদীর অংশ।”
সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ভিয়েতনামজুড়ে টাইফুন এবং পরবর্তী ভূমিধস ও বন্যায় ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে ১৪৫ জন।
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থা ইভিএন বুধবার বলেছে, তারা নিরাপত্তার কারণে রাজধানীর কিছু প্লাবিত এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের পরিচালক মাই ভান খিয়েম এক বিবৃতিতে বলেন, রেড নদীতে প্রবাহিত পানির পরিমাণ দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং আগামী দুই দিনে আরও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় হ্যানয়ের কিছু স্কুল শিক্ষার্থীদের সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে বাড়িতে থাকতে বলেছে। ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে সরকার ও রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বন্যার সতর্কতা জারির পর শহরের কেন্দ্রের কাছে অবস্থিত দাতব্য সংস্থা ‘ব্লু ড্রাগন চিলড্রেন্স ফাউন্ডেশন’ বুধবার তাদের কার্যালয় সরিয়ে নিয়েছে ।
ইভিএন বুধবার জানিয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা উত্তর ভিয়েতনামের দ্বিতীয় বৃহত্তম হোয়া বিন জলবিদ্যুৎ বাঁধ থেকে রেড নদীর উপনদী দা নদীতে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে, চীনের জলবিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলো থেকে রেড নদীর আরেকটি উপনদী, লো নদীতে পানি নিষ্কাশন নিয়ে ভিয়েতনাম কর্তৃপক্ষ বুধবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। লো নদীটি চীনে প্যানলংজিয়াং নামে পরিচিত।