শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মঙ্গলবার নিয়োগ পেলেন হরিণী অমরাসুরিয়া। তার সঙ্গে আরও দুইজন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বলে জানিয়েছে ডেইলি মিরর।
দেশটির একাধিক মিডিয়া জানিয়েছে, সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকের নেতৃত্ব শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সবচেয়ে ছোট মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হতে যাচ্ছে।
এবিষয়ে দেশটির বামপন্থী দলগুলোর জোট ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ারের (এনপিপি) নেতা নামাল করুণারত্নে বলেন, “আমাদের মন্ত্রিপরিষদ হবে শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সবচেয়ে ছোট মন্ত্রিপরিষদ। অচিরেই সংসদ ভেঙে দেওয়া হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এটা হতে পারে।”
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকে নিজেই ৫৪ বছর বয়সী হরিণীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পড়ান। তিনি এনপিপি জোটের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা। তাকে বিচার, শিক্ষা, শ্রম, শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য এবং বিনিয়োগ মন্ত্রীর পোর্টফোলিও দেওয়া হয়েছে।
এদিন এনপিপি নেতা বিজিতা হেরাথ ও লক্ষ্মণ নিপুনারাচ্চি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করবেন এবং সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে দ্রুত নির্বাচনের ডাক দেবেন।
বার্তা সংস্থা পিটিআই দেশটির একাধিক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সংসদীয় নির্বাচন নভেম্বরের শেষ নাগাদ হতে পারে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দিসানায়েকে জনগণকে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দেশটিতে সর্বশেষ সংসদীয় নির্বাচন হয়েছে ২০২০ সালে। এর সংবিধান অনুসারে, নির্বাচনের সাড়ে চার বছর পর প্রেসিডেন্ট চাইলে যেকোনও সময় পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারেন।
শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ ঘোষণা না করেই দিসানায়েকে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারবেন না।
শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের সেক্রেটারি জেনারেল কুশানি রোহানাধেরার উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য ডেইলি মর্নিং জানিয়েছে, দিসানায়েকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর যেকোনও সময় পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারেন।
দেশটির পার্লামেন্ট মূলত ২২৫ সদস্যবিশিষ্ট। তবে এর সংবিধানে সরকারের মন্ত্রিপরিষদে সর্বনিম্ন কয়জন মন্ত্রী থাকবেন তা নির্দিষ্ট নেই। মন্ত্রিপরিষদে সর্বোচ্চ কতজন মন্ত্রী থাকতে পারবেন, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট বিধান থাকলেও, সর্বনিম্ন সংখ্যা সম্পর্কে কোনও নির্দিষ্ট বিধান নেই।
কে এই হরিণী অমরাসুরিয়া
অমরাসুরিয়ার জন্ম ১৯৭০ সালে। তিনি শ্রীলঙ্কা ওপেন ইউনিভার্সিটির সোশাল স্টাডিজ বিভাগের একজন সিনিয়র লেকচারার।
তিনি সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ও অ্যাপে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এডিনবরা ইউনিভার্সিটি থেকে নৃবিজ্ঞানে পিএইচডিও করেছেন। এছাড়াও তিনি সেন্টার ফর উইমেনস রিসার্চ অ্যান্ড নেস্টের ল অ্যান্ড সোসাইটি ট্রাস্টের একজন বোর্ড সদস্য।
শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের ওয়েবসাইট অনুসারে, অমরাসুরিয়া পার্লামেন্টে মহিলা সংসদ সদস্যদের ককাস, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সেক্টরাল ওভারসাইট কমিটি, পশু কল্যাণের জন্য সংসদীয় ককাস, নীতি ও বিশেষাধিকার কমিটি, পাবলিক অ্যাকাউন্টস সংক্রান্ত কমিটিসহ বেশ কয়েকটি সংসদীয় কমিটির অংশ ছিলেন।
.