এক বছর পর ওয়ানডে খেলল পাকিস্তান। গত নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে হারার পর মেলবোর্নে আজ (সোমবার) প্রথমবার ৫০ ওভারের ফরম্যাটে কোনো ম্যাচ খেলল তারা। এর মধ্যে বদলে গেছে কত কিছু। বাবর আজম নেতৃত্ব ছেড়ে দ্বিতীয় দফা অধিনায়ক হয়ে সরে দাঁড়ান আবারও।
পাকিস্তানের ক্রিকেট চরিত্র অবশ্য বদলায়নি। মাত্র ২০৩ রানের পুঁজি নিয়েও মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল তারা। তারপরও শেষ হাসিটা অস্ট্রেলিয়ার। ৯৯ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে তারা।
মোহাম্মদ রিজওয়ানের অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় মাত্র ২০৩ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। তবে চার পেসারের আগুন ঝড়ানো বোলিংয়ে অল্প পুঁজিতেই চেপে ধরে অস্ট্রেলিয়াকে । ১৫৫ রানে ৭ আর ১৮৫ রানে ৮ উইকেটে পরিণত হয়ে ধুঁকছিল অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের দৃঢ়তায় রুদ্ধশ্বাস জয় স্বাগতিকদের।
কামিন্স ব্যাট করতে নামার সময় অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ৭ উইকেটে ১৫৫। ইনিংসের অর্ধেক ওভার (২৪.৫) বাকি থাকলেও তখনো দরকার ৪৯ রান ।অষ্টম উইকেটে অ্যাবটকে নিয়ে ৩০ রান যোগ করে কাজটা সহজ করে দেন গত বছর বিশ্বকাপ ফাইনালের পর প্রথমবার ওয়ানডে খেলা কামিন্সই।
পাকিস্তানের ২০৩ রানের চ্যালেঞ্জে অস্ট্রেলিয়া দুই ওপেনার ম্যাথু শর্ট (১ রান) ও জ্যাক-ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক (১৬) ফেরেন ২৮ রানের মধ্যে। এরপর স্টিভেন স্মিথ ও জস ইংলিসের তৃতীয় উইকেটে ৮৫ রানের জুটিতে ম্যাচে ফিরে অস্ট্রেলিয়া। স্টিভেন স্মিথকে (৪৪) সাইম আইয়ুবের ক্যাচ বানিয়ে জুটিটা ভাঙেন হারিস রউফ।
অস্ট্রেলিয়ার জয় যখন সময়ের অপেক্ষা মনে হচ্ছিল তখনই ৫ বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেয় পাকিস্তান। ৩ উইকেটে ১৩৯ থেকে একই রানে তারা পরিণত হয় ৬ উইকেটে।
৪৩ রানে থাকার সময় জস ইংলিসের একটা ছক্কা হাওয়ায় ভেসে বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করে ফিরিয়েছিলেন ইরফান খান। তবে লাফ দেওয়ার আগে পা বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করায় এটা ছক্কা দেন আম্পায়ার। ব্যাপারটা মানতে পরছিলেন না ইরফান। ঠিক পরের বলেই সেই ইরফানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইংলিস।
৪৯ করা ইংলিসকে ফেরান শাহিন শাহ আফ্রিদি। আর হারিস রউফ টানা দুই বলে আউট করেন মার্নাস লাবুশানে (১৬) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (০)। ১০ রান করা অ্যারন হার্ডলিকে বোল্ড করেন মোহাম্মদ হাসনাইন। ১৩ রান করা অ্যাবট হন রানআউট।
বিপর্যয়ের সময় অধিনায়কের মতোই বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন প্যাট কামিন্স। নবম উইকেটে মিচেল স্টার্কের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ১৯ রানের জুটি গড়ে ৩৩.৩ ওভারে জয় নিশ্চিত করেন তিনি। কামিন্স অপরাজিত ছিলেন ৩১ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩২ রানে।
হারিস রউফ ৩টি, শাহিন শাহ আফ্রিদি ২টি আর ১টি করে উইকেট নাসিম শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইনের। রান অল্প থাকায় পাকিস্তানের ৪ পেসারই করেন ৩৩.৩ ওভার।
এর আগে ব্যাট করে পাকিস্তান থামে ২০৩ রানে। ১০১ রানে তারা হারিয়েছিল ৫ উইকেট। শেষ দিকে নাসিম শাহর ৪০ রানে স্কোরটা ২০০ অতিক্রম করে। মোহাম্মদ রিজওয়ান ৪৪ ও বাবর আজম করেন ৩৩।
মিচেল স্টার্ক ৩টি আর ২টি করে উইকেট প্যাট কামিন্স ও অ্যাডাম জাম্পার। ৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার স্টার্কের।