কক্সবাজারের একটি হোটেল থেকে চুরি হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর মোবাইল ফোন।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের একজন বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজারে সিলিটন নামে একটি হোটেলে ছিলেন। সেখানে তার কক্ষ থেকেই মোবাইল ফোনটি চুরি হয়।
বিষয়টি হাসনাতই থানায় জানিয়েছেন জানিয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, “দুপুরের দিকে হাসনাত আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন যে তার ফোনটি চুরি হয়েছে। পুলিশ তার ফোন উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজারের সমন্বয়করা জানান, বৃহস্পতিবার ছাত্র-জনতার আলোচনা সভায় যোগ দিতে কক্সবাজার শহরে আসেন হাসনাত। কলাতলী জোনে একটি হোটেলে তিনি বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তখনই কেউ তার ফোন চুরি করে নিয়ে যায়।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাই মাসের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারে আন্দোলনের শুরু থেকে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির ছাত্র হাসনাত।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে তিনিসহ ছয় সমন্বয়ককে গোয়েন্দা পুলিশ ধরে নিয়েছিল। ব্যাপক ক্ষোভ-বিক্ষোভের পর তাদের ছেড়েও দেওয়া হয়েছিল।
তবে সরকারের দমন-পীড়নে কয়েকশ মানুষের প্রাণহানির পর গণবিক্ষোভে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।
এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে দুজন সমন্বয়ক যোগ দিলেও হাসনাতসহ অন্য সমন্বয়করা বর্তমানে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে জেলায় জেলায় মতবিনিময় সভা করছে।
চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়িতে মতবিনিময় সভা করার পর বৃহস্পতিবার কক্সবাজার যান হাসনাত।
‘বিভাজনের রাজনীতিতে পা দিলে রাষ্ট্র পুনর্গঠন হবে না’
কক্সবাজারে নাগরিক সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ অভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “বিভাজনের রাজনীতিতে পা দিলে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না। রাষ্ট্র পুনর্গঠন না হওয়া পর্যন্ত একইভাবে ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
ছাত্র-জনতা ব্যর্থ হলে আবারও ‘ফ্যাসিবাদের উত্থানের সুযোগ তৈরি হবে’ বলেও সতর্ক করেন হাসনাত।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্র বিনির্মাণের কাজে অনেক বাধা আসবে, কিন্তু বাংলাদেশের প্রশ্নে ছাত্ররা কারও সাথে কখনোই আপস করবে না।”
বিকালে কক্সবাজারে ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভা’য় বক্তব্য রাখেন হাসনাত।
রাষ্ট্র পুনর্গঠনের জন্য পুলিশ, চিকিৎসক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ সবার সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে ছাত্রদের সম্পর্ক হবে সহযোগিতামূলক। ছাত্রদের আচরণে কেউ যেন মনে না করে যে তাকে বল প্রয়োগ করা হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কক্সবাজার জেলা শাখা আয়োজিত এই সভায় কথা বলেন আন্দোলনে নিহত কয়েকজনের স্বজন। সভার শুরুতে ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।