Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫

সব কোটা বহাল, হার বাড়াতে-কমাতে পারে সরকার : হাইকোর্ট

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবারও শাহবাগে অবস্থান ছিল শিক্ষার্থীদের। ছবি : হারুন অর রশীদ রুবেল
সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবারও শাহবাগে অবস্থান ছিল শিক্ষার্থীদের। ছবি : হারুন অর রশীদ রুবেল
[publishpress_authors_box]

হাইকোর্টের যে রায়ের পর থেকে আন্দোলন হচ্ছে, সব কোটা পুনর্বহালের সেই রায়ে বলা হয়েছে যে চাকরিতে নিয়োগে কোটার হার সরকার প্রয়োজনে বাড়াতে-কমাতে পারে।

গত ৫ জুন দেওয়া রায়ে এই মত দেয় উচ্চ আদালত। রায়টির লিখিত সংক্ষিপ্ত রূপ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে।

তবে সরকার ও দুই শিক্ষার্থীর আবেদনে এই রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ একদিন আগেই দিয়েছে আপিল বিভাগ।

ফলে হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহালের আদেশ দিলেও এই মুহূর্তে কোনও নিয়োগে কোটা প্রয়োগ এখন কার্যকর হচ্ছে না বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়টি দিয়েছিল। রায়টি লিখেছেন বিচারক খিজির হায়াত, তাতে সম্মতি দেন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক কামরুল কাদের।

আংশিক রায়টি প্রকাশের খবর দিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান (জামান) সকাল সন্ধ্যাকে বলেছেন, “কোটা বাড়ানো বা কমানোর সুযোগ সরকারের থাকবে, বলে রায়ে বলা হয়েছে।”

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত দিয়ে হাইকোর্ট বলেছে, প্রয়োজনে কোটার অনুপাত পরিবর্তন কিংবা কমানো-বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই রায় সরকারের জন্য কোনও বাধা হবে না।

কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে তা পূরণের কথাও বলেছে উচ্চ আদালত।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষণ করা হতো। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩০ শতাংশ পদ। এছাড়া নারী কোটা ১০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী কোটা ১ শতাংশ ছিল।

২০১৮ সালে এক আন্দোলনের মুখে সরকার কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে।

ওই কমিটি সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোনও কোটা না রেখে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নিয়ম চালু করতে সুপারিশ দেয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি হয়।

ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নেতা অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে আবেদন করেন। তার শুনানি শেষে গত ৫ জুন ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্ট রায় দেয়।

তবে আংশিক রায় প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, হাইকোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কোটাই শুধু নয়, জেলা, নারী, প্রতিবন্ধীসহ সব কোটাই পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছে।

রায়ের এই আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে কোটা পুনর্বহাল করতেও নির্বাহী বিভাগকে বলেছে হাইকোর্ট।

পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার বিকালে শাহবাগে অবস্থান নেয় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা। ছবি : হারুন অর রশীদ রুবেল

এজলাসে ওই রায় দেওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষ তা স্থগিতের আরজি নিয়ে গিয়েছিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে। সেখান থেকে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে।

রাজপথে আন্দোলন চলার মধ্যে দুই শিক্ষার্থীও এই মামলায় পক্ষভুক্ত হয়ে রায়টি স্থগিতের আবেদন করে, যাতে কোটা বাতিলই থাকে।

তবে বুধবার প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা জারি করার পাশাপাশি বলেন, এবিষয়ে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে, আর এই প্রক্রিয়ায় আন্দোলনকারীরা চাইলে তাদের বক্তব্য আদালতকে জানাতে পারে।

রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে জানিয়ে আন্দোলনকারীদের থামাতে চেয়েছিল সরকার। আদালতের এই আদেশের পর আন্দোলনের কোনও যৌক্তিকতা নেই বলেও বক্তব্য আসে সরকারের কর্তা-ব্যক্তিদের কাছ থেকে।

তবে আন্দোলনকারী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ আপিল বিভাগের রায়কে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখলেও প্ল্যাটফর্মটির নেতারা বলছে, তাদের দাবি সরকারের কাছে। আর তাহলো সংস্কারের মাধ্যমে কোটার পরিমাণ ৫৬ থেকে ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে কমিয়ে আনা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত