মন্ত্রণালয়ের কাজে যেখানেই হাত দিচ্ছেন সেখানেই সমস্যা আর অনিয়ম পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। মঙ্গলবার ঢাকায় ওষুধ শিল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
নূরজাহান বেগম বলেন, “মন্ত্রণালয়ের কাজ করে যেখানেই হাত দিচ্ছি, সেখানেই সমস্যা আর অনিয়ম। তবে এ অবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি এবং তার জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের সব জায়গায় সিস্টেমে সমস্যা রয়েছে। এই যে বিভিন্ন আইন, সেই আইনের প্রয়োগ, আইন না মানা সেটা নিয়ে ফলোআপ করা হয় না।”
তিনি বলেন, আইন নানান কারণে নাও মানা হতে পারে। কারণ জবাবদিহির অভাব। আবার অনেক ক্ষেত্রে জবাবদিহি থাকলেও সেটা নিয়ে কেউ ‘চার্জ’ করে না।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, “যেসব জায়গায় ফাঁকফোকর, অনিয়ম রয়েছে, সেগুলা শুধরে নিয়ে আমরা যদি চেষ্টা করি তাহলে সাধারণ মানুষের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।”
তিনি বলেন, “২৪ এর আন্দোলনে যে অসংখ্য মানুষ আর ১৯/২০ বছর বয়সী ছেলে চোখ, পা হারালো তাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আসুন আমরা একযোগে কাজ করি।”
এসময় এ কাজে সহযোগিতা করার আহ্বানও জানানা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “মাস দুয়েক আগে হোসেন জিল্লুর রহমান আমাদের একটা প্রেজেন্টেশনে বলেছেন, আট থেকে নয় শতাংশ মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হচ্ছেন শুধু ওষুধ এবং চিকৎসাব্যয় মেটাতে গিয়ে। কিন্তু সেখানেও তারা কোনও সেটিসফেকশন পাচ্ছে না।
“যদি ডাক্তার, মন্ত্রণালয়, ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, বিক্রেতা সবাই যদি নিজেদের জায়গা থেকে চেষ্টা করি, তাহলে দেশের মানুষকে ব্যয়ভার থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিতে পারব।”
মিন্টো রোডে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে আয়োজিত এ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
তিনি বলেন, “আজকে আমরা রেগুলেটর, ম্যানুফ্যাকচারারসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেছি। সামনে চিকিৎসক এবং ওষুধ গ্রহীতাদের সঙ্গেও বসার পরিকল্পনা রয়েছে। সবার সঙ্গে কথা বলে ওষুধ শিল্পের জন্য কমপ্রিহেনসিভ একটা প্ল্যান তৈরি করব।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ওষুধ শিল্প বিজ্ঞানের বিষয়, মানুষের নৈতিক অধিকারের বিষয়, বাণিজ্যের বিষয়, স্বাধীনতার বিষয়। স্বাস্থ্য রক্ষা যেন বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয় এবং বাণিজ্য যেন স্বাধীনতা রক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শামীম হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মনজুর কাদির আহমেদ, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী ও এসিআই হেলথকেয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. মহিবুজ জামান।