Beta
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

হার্টেরও ব্রেইন আছে!

হার্টেরও ব্রেইন আছে!
ছবি: ল্যাব ম্যানেজার ডট কম
[publishpress_authors_box]

শুধু মস্তিষ্ক থেকে আসার সংকেতের উপর ভর করেই সচল থাকা প্রতঙ্গ নয় হৃদযন্ত্র। বরং হৃদযন্ত্রের পুরো প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্টেও বসানো আছে ক্ষুদে ব্রেইন।

রহস্যে ঘেরা জটিল এক প্রত্যঙ্গের নাম হৃদযন্ত্র। একসময় ধারণা করা হতো, মস্তিষ্কের সংকেত অনুসারে হৃদযন্ত্রের স্পন্দন বজায় থাকে।

নেচার কমিউনিকেশনসে প্রকাশিত এক গবেষণা এই ধারণা পাল্টে দিয়ে বলছে, হৃদযন্ত্রের নিউরন নেটওয়ার্ক বা স্নায়ুতন্ত্রের বিস্তারিত জাল দিয়েই শরীরে জটিল ভূমিকা রেখে চলেছে এই প্রত্যঙ্গ।

হার্টের নিউরন সিসটেম

সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট এবং নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকরা হার্টের নার্ভাস সিসটেমের নাম দিয়েছেন ইনট্রাকার্ডিয়াক নার্ভাস সিসটেম।

হৃদস্পন্দনের ছন্দ ধরে রাখা ছাড়াও এই ইন্ট্রাকার্ডিয়াক নার্ভাস সিসটেমের বহু সক্রিয় ভূমিকা খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। আর তাতেই মস্তিষ্ক থেকে আসা সংকেতে হৃদস্পন্দন চালিত হওয়ার সেই পুরনো ধারণা ভেঙ্গে যাচ্ছে এবার।

নতুন এই গবেষণায় দেখা গেছে, হার্টের নার্ভাস সিসটেম একেবারে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। যে কারণে হৃদস্পন্দন চালু রাখার পাশাপাশি মস্তিষ্কের নির্দেশনা ছাড়াও হার্ট চলতে পারে। অর্থ্যাৎ মস্তিষ্কের উপর নির্ভর করে থাকার বদলে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ ভালোভাবেই রয়েছে হৃদযন্ত্রের।

আর এ কারণে গবেষকরা বলছেন, বস্তুত হার্টের নিজেরই রয়েছে একটি ছোটখাটো মস্তিষ্ক। আর মূল মস্তিষ্ক শরীরের সব প্রতঙ্গের যাবতীয় কাজে সরাসরি ভূমিকা রাখে না।

নিউরন না কি পেসমেকার

জেব্রাফিশ নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন গবেষকরা। এই মাছ এবং মানুষের হৃদযন্ত্রের গঠন এবং কাজের প্রক্রিয়া খুব অদ্ভুত ভাবেই মিলে যায়। হৃদযন্ত্রের মূল হলো সাইনোট্রিয়াল প্লেক্সাস (এসএপি)। এই অংশ হৃদযন্ত্রে বসানো পেসমেকারের মতো কাজ করে। এখানেই চোখ রেখে হৃদযন্ত্রে বহু নিউরনের খোঁজ মিলেছে গবেষণায়।

অ্যাসিটাইলকোলিন, গ্লুটামেট এবং সেরোটোনিন এমন অনেক নিউরোট্রান্সমিটার দিয়ে একটি নিউরন আরেকটির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। যে কারণে মস্তিষ্কের বদলে হৃদযন্ত্র নিজেই হৃদস্পন্দন সচল রাখতে পারে; যা এতোদিন আলোচনার বাইরেই রয়ে গেছে।

হৃদযন্ত্রে থাকা নিউরনের পেসমেকারের মতো কাজ করার এই সক্ষমতা জানার বাইরে ছিল; এবার তা অনুসন্ধানে উঠে আসায় বিস্মিত হয়েছেন গবেষকরাও।

এই নিউরনে ছন্দময় তড়িৎ তরঙ্গ প্রবাহিত হয়। মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কর্ড যেভাবে হাঁটাচলা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ করে, হৃদযন্ত্রের নিউরনের ছন্দ অনেকটা সেরকমই।

গবেষণায় উঠে আসা এই তথ্য চিকিৎসা ক্ষেত্রের ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে; বিশেষ করে অ্যারিথমিয়া বা হৃদযন্ত্রের অনিয়মিত ছন্দ এবং যে কোনো কার্ডিয়াক জটিলতায়।

তবে দ্য হিন্দুস্থান টাইমসের এই প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গবেষণার বরাতে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি পেশাদার চিকিৎসায় প্রয়োগ করার মতো নয় এখনই।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত