সিলেট সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সিলেটেও হচ্ছে বৃষ্টি। বাড়তে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। এ অবস্থায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের আশংকায় সিলেটে ফের দেখা দিয়েছে বন্যা আতঙ্ক।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ২০২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বৃষ্টি হয়েছে সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত, ১০৫ মিলিমিটার।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে টানা তিনদিন সিলেট অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের আভাস রয়েছে। বজ্রপাত নিয়ে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বজ্রমেঘ সৃষ্টির কারণে সিলেটজুড়ে বজ্রসহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সন্ধ্যা ৬টার তথ্য বলছে, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে রয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। বুধবার এই পয়েন্টে নদীর পানি ছিল ১১ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।
সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি রয়েছে ১০ দশমিক ৩৬ সেন্টিমিটার উচ্চতায়, যা একদিন আগেও ছিল ৯ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার।
একইভাবে কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের অমলসিদে পয়েন্টে ছিল ১৩ দশমিক ৬৪ সেন্টিমিটার, যা গতকালের চেয়ে প্রায় দেড় সেন্টিমিটার বেশি। একই নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে রয়েছে ৯ দশমিক ৯৬ সেন্টিমিটার উচ্চতায় যা গতকাল ছিল ৯ দশমিক ৯১ সেন্টিমিটার উচ্চতায়।
এই পয়েন্টের বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ গতকাল থেকেই এখানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমাদের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পায় মূলত উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩৪৯ মিলিমিটার। তাই উজানের ঢলে আমাদের নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি সিলেটেও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
“গত মাসের বন্যার কারণে এমনিতেই সিলেটের নদ-নদীতে পানি বেশি রয়েছে। এখন যেহেতু আবার বৃষ্টিপাত বেশি হচ্ছে, তাই নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত শুধু ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানিয়েছেন, গতকাল থেকে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারতের চেরাপুঞ্জি এবং সিলেট মিলিয়ে প্রায় ৬০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গত ২৯ মে উজানের পানি প্রবেশ করার আগের দুই দিনে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮০০ মিলিমিটার।
যেহেতু আবারও বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তাই উপজেলা প্রশাসনসহ জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, জানান সিলেটের জেলা প্রশাসক।