Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫

৩ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

রেমালের প্রভাবে ভারি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর নিম্নাঞ্চল। সোমবার সকালে নগরীর সিরাজউদ্দৌলা রোড থেকে তোলা ছবি : সকাল সন্ধ্যা
রেমালের প্রভাবে ভারি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর নিম্নাঞ্চল। সোমবার সকালে নগরীর সিরাজউদ্দৌলা রোড থেকে তোলা ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রাতভরই বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীতে। তবে সোমবার ভোর থেকে বাড়তে থাকে বৃষ্টির মাত্রা। সকাল ৬টা থেকে টানা তিনঘণ্টায় নগরীতে ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অথচ এর আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ২০৫ মিলিমিটার। সকালের এই ভারি বৃষ্টিতে নগরীর অনেক নিম্নাঞ্চল কোমর সমান পানিতে তলিয়ে গেছে।

বিশেষ করে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় যেসব খাল পরিষ্কার করে চালু করা হয়নি সেসব এলাকা ঘিরেই জলাবদ্ধতা বেশি হয়েছে। এসব এলাকার মধ্যে আছে নগরীর চকবাজার, মুরাদপুর, মোহাম্মদপুর, বাদুরতলা, শুলকবহর, কাপাসগোলা, দুই নম্বর গেইট। সেসব এলাকার প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা, দোকানপাট দীর্ঘসময় ধরেই পানিতে ডুবে ছিল।

আর সকালে যেহেতু মানুষের অফিসে যাওয়ার সময়, তাই অফিস যেতে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। অবশ্য বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কমে এলে জলাবদ্ধতাও কিছুটা কমে আসে। তবে পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি।

চট্টগ্রাম ইপিজেডে বিদেশি একটি বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তৌফিকুর রহমান। থাকেন নগরীর শুলকবহর এলাকায়।

তিনি জানালেন, রাতের বৃষ্টিতেই তিনি প্রস্তুত ছিলেন সকালে কিছুটা আগেই বের হবেন বাসা থেকে। একঘণ্টা আগেই সকাল ৭টায় বের হয়ে দেখেন প্রধান সড়ক পানিতে থৈ থৈ। আর নিচতলার ভাড়াটিয়ার বাসায় পানি ঢুকেছে। পরে বাসায় ফেরত যান। সকাল সাড়ে ১১টায় পানি কমলে অফিসের উদ্দেশ্যে আবার বের হন তৌফিকুর।

চট্টগ্রাম চেম্বারে কর্মকর্তা আবু সায়েম থাকেন নগরীর চশমা হিল এলাকায়। তিনি জানান, বাসা থেকে বের হয়ে প্রধান সড়কে পানি দেখে ভিন্ন পথে অর্থাৎ গলি দিয়ে যাত্রা করতে গিয়েও সফল হননি। পরে বাসায় ফিরে যান। এরপর সকাল ১১টার দিকে আবার রওনা দেন আগ্রাবাদে নিজ কর্মস্থল চট্টগ্রাম চেম্বারে।

নগরীর সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধতার শিকার হন চকবাজার, মুরাদপুর, শুলকবহর চাক্তাই এলাকার বাসিন্দারা। এসব এলাকার বেশিরভাগ খালই জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খনন করা হয়েছে। তোলা হয়েছে গাইডয়াল, কিন্তু খালের আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়নি। ফলে বৃষ্টির পানি স্বাভাবিক গতিতে নেমে যেতে পারেনি। এতে করে এসব এলাকায় জলাবদ্ধতা ব্যাপক আকার ধারণ করে।

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামসকে ফোন করে সাড়া মেলেনি।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “নগরীর বহদ্দারহাট থেকে একটি খাল খনন করে কর্ণফুলী নদীতে নেওয়ার কাজ চলছে। এই খাল খনন শেষ হলে এসব এলাকার জলাবদ্ধতার নিরসন হবে।”

তিনি বলেন, “নগরীর খালগুলো সেনাবাহিনীর মাধ্যমে খননের কাজ করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। তারা আমাদের এখনও সেই খালগুলো বুঝিয়ে দেয়নি। খালের বর্জ্য অপসারণ না করায় জলাবদ্ধতা বাড়ছে।”

এর আগে ৬ মে এক দফা জলাবদ্ধতায় ডুবেছিল চট্টগ্রাম নগরী। সেদিন বিকালে টানা এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই তলিয়ে গিয়েছিল বন্দর নগরীর নিম্নাঞ্চল।

নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা এমএইচএম মোসাদ্দেক জানান, চট্টগ্রাম নগরীরে এই ভারি বৃষ্টির কারণ ঘূর্ণিঝড় রেমাল।

তিনি জানান, সোমবার সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় চট্টগ্রাম নগরীরে ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ২০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।

সোমবার সারাদিনই এই ধরনের বৃষ্টি থাকতে পারে জানিয়ে আবহাওয়া অফিসের এই কর্মকর্তা বলেন, সকাল ৯টা ২২ মিনিটে জোয়ার শুরু হয়েছে। ভাটা শুরু হবে বিকাল ৩টা ১৬ মিনিটে। বৃষ্টির পানি দ্রুত না কমার একটি কারণ জোয়ার।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত