ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে ভারতের ডেপুটি হাইকমিশন অভিমুখে লংমার্চ ও ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিল হেফাজতে ইসলাম। তবে শেষ মুহূর্তে সেই ঘোষণা থেকে সরে গিয়ে নগরের জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে সমাবেশ করেছে।
চট্টগ্রামের খুলশীর হাবিব লেইনে ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনের অবস্থান। ওয়াসার মোড়ের জমিয়াতুল ফালাহ ময়দান থেকে যার দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার।
শুক্রবার হেফাজতের ঘোষণা অনুযায়ী, কথা ছিল নেতাকর্মীরা প্রথমে জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে জড়ো হবেন। সেখান থেকেই লংমার্চটি রওনা দেবে খুলশীর পথে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও রাজনীতিবিদদের ‘বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার’ বন্ধের দাবিতে এই লংমার্চ ও ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
সেই অনুযায়ী সোমবার সকাল থেকেই নগরীর জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে হেফাজত ইসলামের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। লংমার্চের প্রস্তুতি না নিয়ে, সেখানে শ‘দুয়েক মানুষ জড়ো হওয়ার পর সমাবেশে বক্তব্য দেন নেতারা। সমাবেশ শেষ করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
কর্মসূচি পরিবর্তনের ব্যাখা সমাবেশে কিংবা গণমাধ্যমকে দেননি হেফাজত নেতারা।
পরে সমাবেশে উপস্থিত কয়েকজন নেতা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, ঝামেলা এড়াতেই হাইকমিশন ঘেরাও কর্মসূচি থেকে সরে এসেছেন তারা।
হেফাজতের কর্মসূচিকে ঘিরে সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল ডেপুটি হাইকমিশন এবং আশপাশের এলাকায়। সাদা পোশাকের পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ছিলেন নিরাপত্তার দায়িত্বে।
সমাবেশে হেফজাত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি হারুন ইজহার অভিযোগ করে বলেন, “ফ্যাসিবাদী শক্তি শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে শুধু ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়নি, এর পিছনে মূল চালিকাশক্তি ছিল হিন্দুস্থানি আধিপত্যবাদ। তারা দেশের প্রত্যেকটা সেক্টরকে ধ্বংস করেছে। ফ্যাসিবাদী শক্তি এখনও ভারতে বসে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। প্রতিবিপ্লবের নেশায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে ‘ইসকন’ নামের সন্ত্রাসী সংগঠনকে তারা মাঠে নামিয়েছে।”
তবে দেশের সাধারণ হিন্দুরা এই ফাঁদে পা দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পা দিয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন। যেভাবে তারা আইনজীবী আলিফকে হত্যা করেছে, তা পুরো দেশকে হতবাক করেছে। অবিলম্বে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।”
প্রতিবেশি দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে যতটুকু সম্পর্ক থাকা দরকার ঠিক ততটুকুই রাখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “তবে আধিপত্যবাদ মেনে নিব না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই- ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে কথা বলতে না পারলে এদেশের দাসত্ব থেকে মুক্তি মিলবে না।”