Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

রিমান্ডে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির, শুনানিতে ন্যায় বিচার চাইলেন হেলালুদ্দীন

আদালতে নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
আদালতে নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

আলাদা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ও সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।

জাকির হোসেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, হেলালুদ্দীন ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সচিব।

শুক্রবার আলাদা শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম নাজমিন আক্তারের আদালত তাদের যথাক্রমে তিন ও চারদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদের মধ্যে জাকির হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকার মোহাম্মদপুরে শামীম হাওলাদার নামে এক ইলেকট্রিশিয়ানকে গুলি করে হত্যা অভিযোগে করা মামলায়। আর বিএনপির কর্মী মকবুলকে হত্যার অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় ইসির সাবেক সচিব হেলালুদ্দীনকে।

জাকির হোসেনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে শুক্রবার আদালতে আবেদন করেন মোহাম্মদপুর থানার এসআই রাজু আহম্মেদ।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি রিমান্ড মঞ্জুর চান, অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম নাজমিন আক্তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর থেকে জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শামীম হাওলাদার।  তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীমের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় শামীমের ফুফাতো ভাই জাকির হোসেন মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলাটি করেন।

জাকির হোসেন ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে তিনি দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালে জাকির হোসেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হন।

ন্যায় বিচার চাইলেন হেলালুদ্দীন

বিএনপির কর্মী মকবুলকে হত্যার অভিযোগের মামলায় ইসির সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার এসআই নাজমুল হাচান তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলেন। শুনানি শেষে আদালত চার দিন মঞ্জুর করেছেন।

গত বুধবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার তুলাতলী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর এক দফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর আগে ৭ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশের হারুন অর রশীদ, মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযান চালায়। কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। কার্যালয়ের পাশে থাকা হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালায়। এতে মকবুল হোসেন নামে এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

এ ঘটনায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলাতেই হেলালুদ্দীনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুনানিতে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাইলেন সাবেক এই সচিব।

রাষ্ট্রপক্ষে পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “হেলালউদ্দীন নির্বাচনের সময় টিভিতে এমন বক্তব্য রাখতেন যে কোটি কোটি মানুষ ভোট দিয়েছে। ইভিএমে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি এর মাস্টার মাইন্ড। হাসিনা সরকারের কাছ থেকে ইভিএম এক হাজার কোটি টাকা নেন। বক্তব্য দেওয়ার সময় টিভির সামনে এমনভাবে বসতেন যেন তিনি রাজা, বাকিরা সব প্রজা।”

রিমান্ড বাতিল শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, “এই আসামি কোনোভাবেই জড়িত নয়। তাকে মিথ্যা অভিযোগে জড়ানো হয়েছে। তিনি নির্দোষ। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি।”

পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন হেলালুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, “যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে ওই এলাকায় আমি কখনো যাইনি। আড়াই বছর আগে চাকরি থেকে অবসরে যাই। ২০১৬ সালের পর ওই এলাকায় যাইনি।”

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর ইভিএম বিষয় অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, “ইভিএম নির্বাচন কমিশন ক্রয় করেনি। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এটা কেনা হয়। আমি কোনোভাবে ইভিএম ক্রয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। ৩৫ বছর চাকরি করেছি। বিএনপি, এরশাদ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চাকরি করেছি। ১০ বছর ম্যাজিস্ট্রেসি করেছি। আমি আপনার কাছে ন্যায় বিচার আশা করি।”

এসময় হেলালউদ্দীন অনেকটা ব্যাঙ্গাত্মক স্বরে বলেন, “ইভিএম তো আপনারাই কিনেছেন।”

এ কথায় ক্ষিপ্ত হন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। তারা নানা ধরনের কথা বলতে থাকেন। তখন হেলালুউদ্দীন হাত জোড় করে তাদের কাছে ক্ষমা চান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত