লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সদস্যদের পেজারে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বহু মানুষ হতাহতের ঘটনার একদিন পর ফের তাদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছে।
এবার হিজবুল্লাহ সদস্যদের ব্যবহৃত ওয়াকি-টকিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এতে প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ২০ জন। আহত হয়েছে সাড়ে চারশ’ মানুষ।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলী, পূর্ব লেবাননের বেকা উপত্যকা ও দক্ষিণ লেবাননে বুধবার হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহৃত ওয়াকি-টকিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এই এলাকাগুলোর প্রতিটিতেই হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি রয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার হিজবুল্লাহ সদস্যদের পেজারে বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের কয়েকজনের জানাজা ছিল বুধবার। জানাজার সময় সেখানে উপস্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সদস্যদের ওয়াকি-টকিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আর বাকি বিস্ফোরণ ঘটে লেবাননজুড়ে ঘাঁটিতে থাকা হিজবুল্লাহর সদস্যদের বেতার যোগাযোগের যন্ত্রে।
মঙ্গলবার পেজার হামলা ও বুধবার ওয়াকি-টকিতে হামলার জন্য ইসরায়েলকেই দায়ী করছে হিজবুল্লাহ। যদিও তাদের এ অভিযোগ নিয়ে এখন পর্যন্ত মুখ খোলেনি ইসরায়েল। তবে দেশটির নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, তাদের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এসব ঘটনার জন্য দায়ী।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, হিজবুল্লাহর ওপর পরপর দুদিন অভিনব উপায়ে হামলার কিছুদিন আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট তাদের বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটিতে বলেছিলেন, যুদ্ধের নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ১১ মাসের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে ইরানপন্থী হিজবুল্লাহ শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে ইসরায়েলকে গাজা থেকে পিছু হটতে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল।
দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার একপর্যায়ে হিজবুল্লাহর সদস্যদের পেজার, ওয়াকি-টকির মতো যন্ত্রে আগে থেকে বিস্ফোরক ঢুকিয়ে পরে সেগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটানো হলো। এর মধ্য দিয়ে এই বার্তাই দেওয়া হলো, হিজবুল্লাহর সদস্যরা নিজ দেশে যেখানেই থাকুক না কেন, কোথাও তারা নিরাপদ নয়।