লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, তাদের হামলায় ৭০ জনের বেশি ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার এক বিবৃতিতে এই দাবি করেছে ইরান সমর্থিত সংগঠনটির অপারেশনস রুম।
এর আগে গত সপ্তাহে সংগঠনটি দাবি করেছিল, তাদের হামলায় ৫৫ জন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে।
তবে ইসরায়েল বলেছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতের পর লেবাননে স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে সেখানে তাদের প্রায় ২০ জন সেনা নিহত হয়েছেন। আর উত্তর ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় নিহত হয় আরও ৩০ জন।
গত শনিবার ইসরায়েলের তেল আবিবের উত্তরের সিজারিয়া এলাকায় নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। এ সময় নেতানিয়াহু ও তার পরিবারের সদস্যরা বাসভবনটিতে ছিলেন না। হামলায় কেউ হতাহত হয়নি বলে জানায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়ছে হিজবুল্লাহ।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সদস্যরা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে পড়ে এক নজিরবিহীন হামলা চালায়। ওই হামলায় ১ হাজার ১৩৯ নিহত হয়। এ ছাড়া হামাস ২৫০ জনকে জিম্মি করেও নিয়ে যায়।
সেদিন থেকেই ইসরায়েল গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার নামে ধ্বংসযজ্ঞে মেতে ওঠে। ইতোমধ্যে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রায় ৪৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া গাজাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে ইসরায়েল।
গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর হামাসের সমর্থনে লেবাননের হিজবুল্লাহ প্রায়ই ইসরায়েলি সামরিক অবস্থানগুলোতে রকেট হামলা চালাতে থাকে। হিজবুল্লাহর দাবি, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে ইসরায়েল সরকারকে চাপ দেওয়ার জন্যই তারা দেশটিতে রকেট হামলা চালায়।
কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই হিজবুল্লাহর সঙ্গে সীমান্তে ইসরায়েলের সংঘর্ষ হত। এতে সীমান্তের উভয় পাশের হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। ইসরায়েলের প্রায় ৬০ হাজার বাসিন্দা সরে যেতে বাধ্য হয়। হিজবুল্লাহ বলেছিল, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দারা তখনই ঘরে ফিরতে পারবে যখন দেশটি গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করবে।
এতে গত মাসের মাঝামাঝি হিজবুল্লাহর ওপর পরপর দুদিন ডিভাইস হামলার কয়েকদিন পর দক্ষিণ লেবাননে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভয়াবহ বিমান হামলার পর গত ১ অক্টোবর থেকে স্থল হামলাও শুরু করে।
ইসরায়েলি হামলায় ইতোমধ্যে হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরাল্লাহসহ একডজনের বেশি শীর্ষ নেতা নিহত হয়েছে।
এ ছাড়া হিজবুল্লাহর যোদ্ধা ও বেসামরিক নাগরিকসহ আড়াই হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ১২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ।