ট্রান্সকম গ্রুপের শীর্ষ তিন কর্মকর্তাকে নিরাপদে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দেশে ফিরে তাদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
তিন কর্মকর্তা হলেন, ট্রান্সকম গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহনাজ রহমান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান ও হেড অব ট্রান্সফরমেশন যারেফ আয়াত হোসেন।
এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে রবিবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী, অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক, সাঈদ আহমেদ রাজা ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
আদেশের বিষয়ে অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, বিদেশ থেকে নিরাপদে দেশে ফিরতে সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে দেশের ফেরার পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের যেকোনো আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছে আদালত।
গত ২১ মার্চ ট্রান্সকম গ্রুপের সিইও সিমিন রহমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আরেকটি মামলা করেন সিমিন রহমানের ছোট বোন শাযরেহ হক।
এ মামলায় নিরাপদে দেশে ফেরার সুযোগ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিন কর্মকর্তা। পরে আদালত শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেয়।
এছাড়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে করা ভিন্ন মামলায় গত ২১ মার্চ ট্রান্সকম গ্রুপের এই শীর্ষ তিন কর্মকর্তা যাতে নির্বিঘ্নে দেশে ফিরতে পারে তা নিশ্চিত করতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আদেশ দেয়। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম একই আদেশ দিয়েছিলেন।
গত ২১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) মধ্যরাতে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলাটি করেন সিমিন রহমানের ছোট বোন শাযরেহ হক। ৯ মাস আগে মারা যাওয়া তার বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে মামলাটি করেন তিনি।
ট্রান্সকম গ্রুপের শীর্ষ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যখন মামলাগুলো হয়, তার আগে থেকেই তারা দেশের বাইরে রয়েছেন বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা।
এছাড়া চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় তিনটি মামলা করেন শাযরেহ হক। এরপর ২১ মার্চ পৃথক আরেকটি মামলা করেন তিনি। প্রথম তিন মামলায় ৮ জনকে আসামি করা হয়। এর পরের মামলায় আসামি করা হয় ১১ জনকে।
২০২৩ সালের ১৬ জুন ঢাকার গুলশানের বাসায় নিজের শোয়ার ঘরে মৃত অবস্থায় আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে পাওয়া যায়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা লতিফুর রহমানের মৃত্যুর পর তার পরিবারে শুরু হওয়া উত্তরাধিকারের লড়াইয়ের মধ্যে এবার বড় বোনের বিরুদ্ধে বড় ভাইকে হত্যার অভিযোগ আনলেন ছোট বোন শাযরেহ হক।