Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

কৃষি জমির উত্তরাধিকারে হিন্দু বিধবা স্ত্রীর ভাগবখরা-৬

বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে অল্পবয়সে বিধবা হওয়া মেয়েশিশুর যাতনার কথা উঠে এসেছে সাহিত্যে ও চলচ্চিত্রে। প্রতীকী ছবিটি ভারতীয় পরিচালক দীপা মেহতা পরিচালিত ওয়াটার (২০০৫) চলচ্চিত্র থেকে নেওয়া।

৬. বিভ্রান্তি বিদূরণ

১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশ ভারত বিভক্ত হয় ব্রিটিশ পার্লামেন্টের করা ১৯৪৭ সালের Indian Independence Act -এর বলে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের তাঁবেদার রাষ্ট্র (‘Dominion’) হিসেবে সৃষ্টি হয় পাকিস্তান ও ভারত। ব্রিটিশ ভারতে তখন ছোটো বড়ো মিলিয়ে প্রদেশ ছিল ১৭টি। ব্রিটিশ বেলুচিস্তান, নর্থ ওয়েস্ট ফ্রন্টিয়ার ও সিন্ধু প্রদেশ যুক্ত হয় পাকিস্তানে। পাঞ্জাব, বেঙ্গল ও আসাম প্রদেশ তিনটি কেটে কেটে ভাগ করে দেয়া হয় পাকিস্তান আর ভারতের মধ্যে। সেই ভাগ অনুযায়ী পশ্চিম পাঞ্জাব, পূর্ব বাংলা [আজকের বাংলাদেশ] আর সিলেট জেলা (আসাম থেকে কেটে আনা, এখনকার সিলেট বিভাগ) পড়ে পাকিস্তানে। বাকিগুলো নিয়ে হয় ভারত। হায়দ্রাবাদ, জম্মু ও কাশ্মির, সিকিম এর মতো ৫৬৫টি দেশীয় রাজ্য থেকে যায় ইচ্ছেমতো ভারত বা পাকিস্তানে যোগ দেবার এক্তিয়ার নিয়ে। সিলেটকে নিয়ে পূর্ব বাংলা হয় পাকিস্তানের প্রদেশ।

কৃষি জমির উত্তরাধিকারে হিন্দু বিধবা স্ত্রীর ভাগবখরা-৫

ভারত ও পাকিস্তানে আইন প্রণয়ণের কর্তৃত্বের কী ব্যবস্থা হলো? 

নতুন সংবিধান না হওয়া পর্যন্ত দুটি রাষ্ট্রেই সংবিধান হিসেবে বহাল রাখা হয় ছোটোখাটো কিছু সংশোধন-সংযোজনসহ ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনটাই। ভারত ও পাকিস্তানে বহাল থাকে কেন্দ্রীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় আইন পরিষদ এবং প্রাদেশিক সরকার ও প্রাদেশিক আইন পরিষদ ব্যবস্থা। ফলে, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত বিভক্তির পরেও ভারত ও পাকিস্তানে প্রদেশসমূহের কৃষি জমির হস্তান্তর ও উত্তরাধিকার সংক্রান্তে (“transfer, alienation and devolution of agricultural land”) আইন প্রণয়নের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব ও এক্তিয়ার থেকে যায় প্রাদেশিক আইন পরিষদের হাতেই। আর কেন্দ্রের এক্তিয়ারহীনতাও থেকে যায় এ-বিষয়ে। ব্রিটিশ ভারতে অন্তর্ভুক্ত থাকাকালের প্রচলিত সব আইন আনুষঙ্গিক ছোটোখাটো কিছু সংশোধন-সংযোজনসহ পাকিস্তান ও ভারতে প্রযোজ্য রাখা হয় ব্রিটিশ ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল মাউন্ট ব্যাটেনের ১৯৪৭-এর ১৪ আগস্ট জারি করা যথাক্রমে Pakistan (Adaptation of Existing Pakistan Laws) Order, 1947 এবং Indian (Adaptation of Existing Indian Laws) Order, 1947 দিয়ে। এই অ্যাডাপ্টেশন আদেশ দুটি প্রাদেশিক আইন ছিল না, ছিল পুরোদস্তুর কেন্দ্রীয় আইন।

তাতে কী হলো?

কেন্দ্রীয় ঐ অ্যাডাপ্টেশন আদেশ দিয়ে ১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act-এর ১(২) ধারায় “It extends to the whole of British India” এর স্থলে পাকিস্তানে “It extends to all the provinces of Pakistan” আর ভারতে “It extends to all the provinces of India” করে পাকিস্তানের ও ভারতের সব প্রদেশে ১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act প্রযোজ্য রাখা হয়।

তার ফলে, পূর্ব বাংলা ও পশিচমবঙ্গসহ যে-সব প্রদেশে Extension to Agricultural Land Act করা হয়নি সেসব প্রদেশের কৃষি জমির ক্ষেত্রে ১৯৩৭ সালের আইনটি অপ্রযোজ্যই থেকেই যায় প্রদেশসমূহের কৃষি জমির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আইন প্রণয়নে কেন্দ্রের এক্তিয়ারহীনতার কারণে। আসামের প্রাদেশিক আইন পরিষদে প্রণীত The Assam Hindu Women’s Rights to Property (Extension to Agricultural Land) Act 1943 (Assam Act XIII/1943)-এ Assam কেটে ১(২) ধারায় “It extends to the whole of the district of Sylhet” করে পাকিস্তানে শুধু সিলেট জেলার (এখনকার সিলেট বিভাগ) কৃষি জমির ক্ষেত্রে ১৯৩৭ সালের আইনটি প্রযোজ্য করা হয়। ফলে, পূর্ব বাংলায় শুধু সিলেটের কৃষি জমিতে হিন্দু বিধবা স্ত্রীরা এবং বিধবা পুত্রবধু ও বিধবা পৌত্রবধুরা  ১৯৩৭ সালের ঐ আইন অনুযায়ী ভাগ পাবার হকদার হয়।

ভারতে সংবিধান হবার পরে কী হলে?    

ভারতের সংবিধান বলবৎ হয় ১৯৫০-এর ২৬ জানুয়ারি। এই সংবিধানের ৭ম তপশিল অনুযায়ী ভারতেও শাসন ও আইন প্রণয়ণের ক্ষমতা কেন্দ্র ও রাজ্যসমূহের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। এই তপশিলের ২য় তালিকায়  [State List] ১৮ নম্বরে কৃষির জমির শুধু হস্তান্তর (“transfer and alienation of agricultural land”) সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের একচ্ছত্র এক্তিয়ার দেওয়া হয় রাজ্যগুলোকে, আর কৃষিজমি বাদে অন্য সব সম্পত্তির হস্তান্তর সংক্রান্ত আইন প্রণয়নে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলোকে একইসঙ্গে সমান [Concurrent] এক্তিয়ার দেওয়া হয় এই তপশিলের ৩য় তালিকায় [Concurrent List] ৬ নম্বরে। আর, সব ধরনের সম্পত্তির উইল ও উত্তরাধিকার (“Wills, intestacy and succession”) সংক্রান্ত আইন প্রণয়নে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলোকে একইসঙ্গে সমান [Concurrent] এক্তিয়ার দেওয়া হয় Concurrent এই ৩য় তালিকায় ৫ নম্বরে, স্পষ্ট করে কৃষি জমি আর বাদ রাখা হয়নি এবারে। ব্রিটিশ ভারতের সময়কার দেশীয় রাজ্য হায়দ্রাবাদকে ভারত তার এলাকাভুক্ত রাজ্যে পরিণত করে ১৯৪৮ সালে। নবসৃষ্ট হায়দ্রাবাদ রাজ্য ১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act নিজ এলাকায় প্রযোজ্য করে ১৯৫২ সালে। ভারতে ১৯৫৬ সালের Hindu Succession Act দ্বারা ১৯৩৭ সালের আইনটি সম্পূর্ণ রহিত [Repeal] করে কৃষি জমিসহ সব ধরনের সম্পত্তিতে পুত্রদের সাথে একই সময়ে সমান অংশে হিন্দু বিধবাদেরও, এমনকি কন্যাদেরও সমান অংশে উত্তরাধিকার দেওয়া হয় এবং শুধু জীবনস্বত্বে [limited interest ownership] নয়, দেওয়া হয় পূর্ণস্বত্বে [full ownership]। 

ভারতে ১৯৫৬ সালের Hindu Succession Act দ্বারা ১৯৩৭ সালের আইনটি সম্পূর্ণ রহিত [Repeal] করে কৃষি জমিসহ সব ধরনের সম্পত্তিতে পুত্রদের সাথে একই সময়ে সমান অংশে হিন্দু বিধবাদেরও, এমনকি কন্যাদেরও সমান অংশে উত্তরাধিকার দেওয়া হয় এবং শুধু জীবনস্বত্বে [limited interest ownership] নয়, দেওয়া হয় পূর্ণস্বত্বে [full ownership]।

আর, পাকিস্তানে কী হলো?

ভারতের মতো হিন্দু উত্তরাধিকারের নতুন কোনো আইন পাকিস্তানে আর হয়নি। ১৯৪৮-এর ৩১ মার্চ Transitional Period অতিক্রান্ত হয়ে গেলে ১৯৪৯ সালে গভর্নর জেনারেলের জারি করা কেন্দ্রীয় আরেকটি Adaptation Order দিয়ে ১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act সহ প্রচলিত আইনগুলো আগের মতোই প্রযোজ্য রাখা হয়। পাকিস্তানের ১ম সংবিধান বলবৎ হয় ১৯৫৬ সালের ২৩ মার্চ। তাতে পাকিস্তানের প্রদেশ হলো দুটো: পূর্ব পাকিস্তান [আজকের বাংলাদেশ] আর পশ্চিম পাকিস্তান [এখনকার পাকিস্তান]। এই সংবিধানেও ৫ম তপশিলে প্রভিন্সিয়াল লিস্টের ৮ নম্বরে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের মতোই কৃষি জমির হস্তান্তর ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত [“transfer, alienation and devolution of agricultural land”] আইন প্রণয়নের একচ্ছত্র এক্তিয়ার দেওয়া হয় প্রাদেশিক আইন পরিষদে।

১৯৬০ সালে প্রেসিডেন্টের জারি করা Central Laws (Statute Reform) Ordinance দিয়ে ১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act-এর ১(২) ধারায় “It extends to all the provinces of Pakistan” এর স্থলে “It extends to the whole of Pakistan” করে সমগ্র পাকিস্তানে ১৯৩৭ সালের অ্যাক্টটি প্রযোজ্য করা হলেও তা পূর্ব পাকিস্তানের [আজকের বাংলাদেশ] কৃষি জমির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে অপ্রযোজ্যই থেকেই যায় প্রদেশসমূহের কৃষি জমির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আইন প্রণয়নে কেন্দ্রের এক্তিয়ারহীনতার কারণে। শুধু সিলেটের কৃষি জমির উত্তরাধিকারে ১৯৩৭ সালের ঐ অ্যাক্ট প্রযোজ্য হয় ১৯৪৩ সালের সেই Extension to Agricultural Land Act-এর বদৌলতে।

১৯৬২-এর সংবিধানে কী হলো?

১৯৫৬ সালের সেই সংবিধানের পরিবর্তে ১৯৬২ সালের ৮ জুন বলবৎ হয় আইয়ুব খানের নতুন সংবিধান। ১৯৬২ সালের এই সংবিধানে ১৩২ অনুচ্ছেদে প্রাদেশিক আইন পরিষদকে এক্তিয়ার দেওয়া হয় ৩য় তপশিলে বর্ণিত কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়াবলী বাদে। এই ৩য় তপশিলে কৃষি জমির হস্তান্তর ও উত্তরাধিকার অন্তর্ভুক্ত ছিল না। কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের এক্তিয়ারভুক্ত না হওয়ায় কৃষি জমির হস্তান্তর ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আইন প্রণয়নে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব ও এক্তিয়ার থেকে যায় প্রাদেশিক আইন পরিষদেই। পুরো পাকিস্তান আমল জুড়েই প্রদেশসমূহের কৃষি জমির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আইন প্রণয়নে কেন্দ্রের এক্তিয়ারহীনতা থেকেই যায়। ফলে, ব্রিটিশ ভারত আমলের মতো পাকিস্তান আমলেও সিলেট ছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের আর কোনোখানের কৃষি জমির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে ১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act প্রযোজ্য হয়নি।

তাই, ব্রিটিশ ভারত ও পাকিস্তান আমলে এদেশে কৃষি জমির ক্ষেত্রে হিন্দু বিধবা স্ত্রী, বিধবা পুত্রবধু, বিধবা পৌত্রবধুরা ১৯৩৭ সালের ঐ অ্যাক্টের বিধান অনুযায়ী পুত্র-পৌত্র-প্রপৌত্রদের সাথে একই সময়ে উত্তরাধিকারিণী হতে পারেন শুধু সিলেট জেলার কৃষি জমিতে, অন্য কোনো জেলার কৃষি জমিতে তখন তাদের সে অধিকার জন্মায়ইনি।

তাই, ব্রিটিশ ভারত ও পাকিস্তান আমলে এদেশে কৃষি জমির ক্ষেত্রে হিন্দু বিধবা স্ত্রী, বিধবা পুত্রবধু, বিধবা পৌত্রবধুরা ১৯৩৭ সালের ঐ অ্যাক্টের বিধান অনুযায়ী পুত্র-পৌত্র-প্রপৌত্রদের সাথে একই সময়ে উত্তরাধিকারিণী হতে পারেন শুধু সিলেট জেলার কৃষি জমিতে, অন্য কোনো জেলার কৃষি জমিতে তখন তাদের সে অধিকার জন্মায়ইনি।

বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে কী অবস্থা দাঁড়াল?    

পাকিস্তানের প্রদেশ পূর্ব পাকিস্তান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ হলো স্বাধীন বাংলাদেশ। ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের [Proclamation of Independence] মাধ্যমে গঠিত হয় বাংলাদেশের অস্থায়ী প্রবাসী সরকার ও গণপরিষদ, যা কার্যকর হয় ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরে সংবিধান রচনা শেষে বলবৎ হয় ১৯৭২-এর ১৬ ডিসেম্বর থেকে। কেন্দ্র আর প্রদেশের কোনো বালাই নেই বাংলাদেশে।

১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act-টি করার সময় থেকেই ৩ ধারায় “any property”, “separate Property”, “joint property” কথাগুলোর মধ্যে কৃষি জমিও অন্তর্ভুক্ত ছিলই (ফেডারেল কোর্টের রায়েও যা বলা হয়েছে)। কৃষি জমির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে এতদিন আইনটি প্রযোজ্য হয়নি শুধু আইনটির প্রণেতা ব্রিটিশ ভারতের ও পরবর্তীতে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার ও আইন পরিষদের এক্তিয়ারহীনতার কারণে। বাংলাদেশ সরকার, গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদের সে-এক্তিয়ারহীনতা ছিল না কখনই। তাদের এক্তিয়ার সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে এবং কৃষি-অকৃষি সব ধরনের সম্পত্তির ব্যাপারে আইন করার।  

তাই, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে দেওয়া ক্ষমতাবলে ১৯৭১-এর ১০ এপ্রিল যখন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির জারি করা Laws Continuance Enforcement Order দিয়ে ২৫ মার্চ ১৯৭১ পর্যন্ত প্রচলিত সব আইন ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের উপযোগীভাবে সমগ্র দেশ জুড়ে কার্যকর রাখা হয় তখন ১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act-এ কৃষি জমির উত্তরাধিকারের ব্যাপার আর বাদ থাকার সেই এক্তিয়ারহীনতার কারণ থাকে না বলে কৃষি জমিও অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে। 

এর পর ১৯৭৩ সালে যখন জাতীয় সংসদের প্রণীত Bangladesh Laws (Revision and Declaration) Act দিয়ে ১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act-এর ১(২) ধারায় “It extends to the whole of Pakistan” এর স্থলে “It extends to the whole of Bangladesh” করে তা সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য করা হয়, তখন তাতে কৃষি জমির উত্তরাধিকারের ব্যাপার আর বাদ থাকার সেই এক্তিয়ারহীনতার কারণ থাকে না বলে কৃষি জমির উত্তরাধিকারের ব্যাপারটাও অন্তর্ভুক্ত থাকে ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে।

তাই সিলেটের মতো করে সমগ্র দেশে আলাদা Extension to Agricultural Land Act আর করা না হলেও আমাদের বাংলাদেশে ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে কৃষি জমির ক্ষেত্রে হিন্দু বিধবা স্ত্রী, বিধবা পুত্রবধু, বিধবা পৌত্রবধুরা ১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act-এর বিধান অনুযায়ীই পুত্র-পৌত্র-প্রপৌত্রদের সাথে উত্তরাধিকারিণী হতে পারেন সব জেলাতেই।

তাই সিলেটের মতো করে সমগ্র দেশে আলাদা Extension to Agricultural Land Act আর করা না হলেও আমাদের বাংলাদেশে ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে কৃষি জমির ক্ষেত্রে হিন্দু বিধবা স্ত্রী, বিধবা পুত্রবধু, বিধবা পৌত্রবধুরা ১৯৩৭ সালের Hindu Women’s Rights to Property Act-এর বিধান অনুযায়ীই পুত্র-পৌত্র-প্রপৌত্রদের সাথে উত্তরাধিকারিণী হতে পারেন সব জেলাতেই। আমাদের হাইকোর্ট বিভাগে সঠিকভাবেই সেই সিদ্ধান্ত হয়েছে জোতিন্দ্রনাথ বনাম গৌরি দাসি মামলায়, ২২ এএলআর [অ্যাপেক্স ল রিপোর্ট] ৬৯ পৃষ্ঠায়।

সিলেটের ১৯৪৩ সালের Hindu Women’s Rights to Property (Extension to Agricultural Land) Act এখন অপ্রয়োজনীয় বাড়তি একটি আইনে পরিণত হয়েছে। ১৯৩৭ সালের আইনটির ৩ ধারায় “any property” ইত্যাদি কথার সঙ্গে “including agricultural land” [কৃষি জমি সমেত] জুড়ে দিয়ে ১৯৪৩ সালের আইনটি রহিত করা হলে বিভ্রান্তি সৃষ্টির সমস্ত সুযোগ সমূলে বিদূরীভূত হয়।

(সমাপ্ত)

লেখক: প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট, আইনগ্রন্থকার; অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ও দুদকের সাবেক মহাপরিচালক।ইমেইল: [email protected]

মঈদুল ইসলাম। প্রতিকৃতি অঙ্কন: সব্যসাচী মজুমদার
ad

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত