ইতিহাস সৃষ্টি করে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় ফিরেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি।
২৯৫টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। যেখানে হ্যারিস পেয়েছেন ২২৬ ভোট।
নির্বাচনের আগেই বেশ কিছু হলিউড সেলিব্রিটি বলেছিলেন, ট্রাম্প আবারও হোয়াইট হাউসে ফিরলে তারা আমেরিকা ছেড়ে চলে যাবেন।
শ্যারন স্টোন
গেল জুলাইয়ে অস্কারজয়ী শ্যারন স্টোন বলেছিলেন, নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে তিনি আর আমেরিকায় থাকবেন না।
‘বেসিক ইন্সটিংকট’-খ্যাত এই অভিনেত্রী এও বলেছিলেন যে তিনি ইতালিতে একটি বাড়ি কেনার কথাও ভাবছেন।
“এই প্রথম এমন কাউকে দেখলাম, যিনি এত ঘৃণা ও নিপীড়নের পরিবেশের মধ্যে থেকেও প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে নামতে পেরেছেন,” ডেইলি মেইলকে বলেছিলেন তিনি।
শের
গায়িকা ও অভিনেত্রী শের বরাবরই ট্রাম্পের একজন কট্টর সমালোচক। তার দাবি আগেরবারের যখন ট্রাম্প নেতৃত্বে আসেন তখন তার ‘স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছিল’।
গত বছর দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে শের বলেছিলেন, “গতবার প্রায় আলসার হয়ে গিয়েছিল। যদি তিনি আবার আসেন, কে জানে কী হবে? এইবার আমি (দেশ) ছেড়ে চলে যাব।”
বারবারা স্ট্রাইস্যান্ড
গতবছর সেলিব্রেটি টক শো ‘দ্য লেইট শো উইথ স্টিফেন কোলবেয়ার’-এ এই গায়িকা ও অভিনেত্রী বলছিলেন ট্রাম্প যদি হোয়াইট হাউসে ফিরে আসেন, তাহলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকবেন না।
আমেরিকার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ‘খুব খারাপ’ বর্ণনা করে, বারবারা স্ট্রাইস্যান্ড স্পষ্ট করেই বলেছিলেন তখন, “আমি বাইডেনকে পছন্দ করি। আমার মনে হয় তিনি ভালো কাজ করছেন। তিনি সহানুভূতিশীল, তিনি বুদ্ধিমান, তিনি সঠিক বিষয়গুলির পক্ষে আছেন।”
উপস্থাপক স্টিফেন কোলবেয়ার ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রসঙ্গ তুললে, তিনি বলেছিলেন, “আমি চলে যাব। আমি এই দেশে থাকতে পারব না যদি … যদি তিনি প্রেসিডেন্ট হন।”
যদি তিনি সত্যিই চলে যেতে চান, তাহলে কোথায় যাবেন- এই প্রশ্নের উত্তরে বারবারা বলেছিলেন, “সম্ভবত ইংল্যান্ডে। ইংল্যান্ড আমার ভালো লাগে।”
সোফি টার্নার
ব্রিটিশ অভিনেত্রী সোফি টার্নার, যিনি ‘গেম অব থ্রোনস’ সিরিজে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছেন, ট্রাম্পের সম্ভাব্য ক্ষমতায় ফেরার বিষয়ে সোজাসাপ্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, তিনি “এই দেশ থেকে বের হয়ে যাবেন” এবং নিজ দেশ, যুক্তরাজ্যে ফিরে যাবেন।
দেশ ছাড়ার কথা না বললেও ক্ষুব্ধ অনেক তারকাই
আরও বেশকিছু তারকা ট্রাম্পের জয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তবে দেশ ছাড়ার মত কথা বলেননি।
কামালা হ্যারিসের সমর্থক জনপ্রিয় গায়িকা বিলি আইলিশ নির্বাচনের ফলাফলের পর ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন, “নারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের শুরু।“
আরেক জনপ্রিয় গায়িকা আরিয়ানা গ্রান্ডে ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার খবরে তার দুঃখের কথা প্রকাশ করেছেন সামাজিক মাধ্যমে।
“আজকের ফলাফলে যারা সীমাহীন দুঃখ পেয়েছেন তাদের সাথে আছি,” লিখেছেন ৩১ বছর বয়সী এই গায়িকা।
অভিনেত্রী ক্রিস্টিনা অ্যাপলগেট এক্স (সাবেক টুইটারে)-এ জানিয়েছেন নির্বাচনের ফলাফলে তার ১৩ বছরের ‘মেয়ে ভেঙে পড়েছে এবং কেঁদে চলছে’।
“কেন? কী কারণে আমাকে বলেন ????? আমার মেয়ে কাঁদছে, কারণ একজন নারী হিসেবে তার অধিকার কেড়ে নেওয়া হতে পারে। কেন? আমার সাথে যদি একমত না হন, তাহলে দয়া করে আমাকে আনফলো করেন,” বুধবার লিখেছেন অ্যাপলগেট।
তবে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার ব্যাপারে যে তারকারা এবারই প্রথম বলছেন এমন না। ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে ও পরেও এমন কথা বলেছিলেন বেশ কয়েকজন হলিউড সেলিব্রেটি।
হুপি গোল্ডবার্গ, মাইলি সাইরাস, এমি শুমার, জর্জ লোপেজসহ আরও অনেক তারকা আমেরিকা থেকে তাদের জীবন গুটিয়ে নেওয়ার কথা বলেছিলেন। তবে নির্বাচনের পর তেমনটা দেখা যায়নি। ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নিয়ে পরে সামাজিক মাধ্যমে পোস্টও দিয়েছিলেন গায়িকা মাইলি সাইরাস।