সাভারের আশুলিয়ায় এক গৃহবধূকে তার শিশু সন্তানের সামনেই হত্যা করা হয়েছে। হত্যার অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয়েছে প্রতিবেশি যুবককে।
মঙ্গলবার বিকালে আশুলিয়ার ভাদাইল তালতলা এলাকা থেকে ধারাল অস্ত্রসহ শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ (৩২) নামে ওই যুবককে আটক করে র্যাবের টহল দল।
নিহত নারীর নাম সুমাইয়া আক্তার। তিনি রংপুর জেলার বদরগঞ্জ থানার মাসুদ রানার স্ত্রী। তাদের আড়াই বছরের এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। মাসুদ রানা স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। পরিবার নিয়ে ভাদাইল তালতলা এলাকার একটি বাড়িতে কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন তিনি।
আটক বিদ্যুৎও পেশায় পোশাক শ্রমিক। তার বাড়ি নাটোর জেলার লালপুর থানার বিজয়পুর গ্রামে। তিনিও একই বাসায় সোহেল রানাদের পাশের কক্ষে ভাড়া থাকতেন।
র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর স্কোয়াড কমান্ডার সহকারি পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে সুমাইয়াকে প্রেম নিবেদন করেছিলেন বিদ্যুৎ। সেখানে প্রত্যাখ্যাত হয়েই তিনি এ হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছেন।
যে বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে সেটির মালিকের স্ত্রী আয়শা জানান, সুমাইয়ার মেয়ের কান্না শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখতে পান ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন বিদ্যুৎ। তার হাতে ছিল রক্ত।
প্রতিবেশি ভাড়াটিয়া নারী মেরিনা বেগম বলেন, “বাড়িওয়ালীর ডাকে আমরা ঘর থেকে বের হয়ে দেখি শহিদুল সিড়ির উপর ছুরি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। তাও আমি সাহস করে ঘরে ঢুকে দেখি সুমাইয়ার পুরো শরীরে রক্ত। শহিদুল আমাকে বলছিল, ভাবী মারিয়ামকে (সুমাইয়ার মেয়ে) সামলান, মারিয়ামের মা আর নেই।”
বিষয়টি প্রকাশ পেলে স্থানীয়রাই পুলিশে খবর দেয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানিয়েছে, গত ১ বছর ধরে একই বাসায় পাশাপাশি কক্ষে ভাড়া থাকার সুবাদেই সুমাইয়ার সঙ্গে বিদ্যুতের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকেই সুমাইয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল বিদ্যুৎ। কিন্তু বিবাহিত সুমাইয়া বারবারই বিদ্যুতের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সুমাইয়ার কক্ষে প্রবেশ করে ধারালো ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে বিদ্যুৎ। এতে সে অচেতন হয়ে পড়লে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর স্কোয়াড কমান্ডার ও সহকারি পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বিদ্যুৎ। সে প্রেমে প্রত্যাখান হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলেই এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া গেছে।”