কোনো দুর্ঘটনা ও নেতিবাচক অভিজ্ঞতা মন-মানসিকতায় গভীর ছাপ রাখলে দেখা দিতে পারে মানসিক সমস্যা। অনেকদিন ধরে এমন মানসিক অস্থিরতা ঘিরে রাখলে তা ট্রমা। এতে শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের তাল কাটতে পারে।
মেডিকেল ট্রমা, দুর্যোগ ট্রমা, শৈশবকালীন ট্রমা, বৈষম্যমূলক ট্রমার মধ্যে দিয়ে যেতে পারেন একেকজন। ট্রমায় ভোগা কেউ অপ্রত্যাশিত আচরণ করতে পারে যে কোনো সময়। এদের মাথাব্যথায় ভোগার মতো উপসর্গও থাকে।
ট্রমা শরীর ও মনে চাপ তৈরি করে। সিদ্ধান্ত নেওয়া ও পরিকল্পনা করার সক্ষমতা, সামাজিক ও ব্যক্তিগত আচরণে ভূমিকা রাখে মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স। কিন্তু পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার বা পিটিএসডি হলে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সের সক্ষমতা কমতে থাকে। বিপরীতে অ্যামিগডালা হরমোন প্রচুর অ্যাড্রেনালিন নিঃসরণে ভূমিকা রাখে। তাতে যে কোনো বিষয়ে ভয় পাওয়া, আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার আচরণ বাড়তে থাকে।
এই মানসিক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে থেরাপি ও কাউন্সেলিং খুব জরুরি যে কারও জন্য।
আমেরিকান সাইকোলজিকাল অ্যাসোসিয়েশনের পরামর্শ হচ্ছে ট্রমার মধ্যে দিয়ে গেলে অবশ্যই কাউন্সেলিং করাতে হবে। এতে করে সুস্থভাবে নিজের আবেগের প্রকাশ করা যাবে।
ট্রমার যত উপসর্গ
পিটিএসডি জটিলতায় অনেকেই মানুষের সঙ্গে মেশা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। ট্রমায় যারা ভোগেন তাদের ঘুমের সমস্যা হয়, স্মৃতিশক্তি দূর্বল হয়ে আসে, কথায় কথায় উত্তেজিত হয়ে পড়েন। যখন তখন পেট ব্যথা এবং মাথাব্যথা হয়।
থেরাপি কেন উপকারি
সাধারণত থেরাপি নিতে গেলে এক থেকে একাধিক আলাপ পর্ব বা কাউন্সেলিং করার মধ্যে দিয়ে পিটিএসডি উপসর্গগুলো কমিয়ে আনার উপায় বার করা যায়। অতীতের কোন ঘটনা থেকে মনে গভীর ভয় ঢুকে গেছে তা নিয়ে খোলাখুলি কথা বললে বাস্তবতা মেনে নেওয়ার পথে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয়। অতীত থেকে মনোযোগ সরিয়ে সামনে কী হবে তা নিয়ে চিন্তাভাবনায় রোগীকে উৎসাহি করা হয় থেরাপির মধ্যে দিয়ে।
ট্রমার কারণে রোগীর মধ্যে কোনো ধরনের মাদকাসক্তি দেখা দিলে তা নিরাময়ে চিকিৎসার পরামর্শ পাওয়া যায় থেরাপিতে। কাউন্সেলিং করার মধ্যে দিয়ে রোগীর মানসিক যত্ন নেওয়া হয় যেন রোগী প্রতিদিনের কাজকর্মে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দেওয়ার মতো অবস্থায় ফিরতে পারে।
প্রযুক্তি সুবিধার কারণে এখন অনলাইনেও কাউন্সেলিং নেওয়া যায়। এক্ষেত্রে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাইরে থাকা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করা সম্ভব।