ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে গত ৯ আগস্ট। এরপর থেকেই এই ঘটনার বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলছে। দেশজুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া আন্দোলনটি গত কয়েকদিন ধরে রূপ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের আন্দোলনে।
বাংলাদেশেও আন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এখন পশ্চিমবঙ্গের আন্দোলন কোন পরিণতি সামনে নিয়ে আসে, সেই আলোচনাই চলছে সোশাল মিডিয়া থেকে শুরু করে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থ হয়েছেন। মমতা পদত্যাগ করা না পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ফলে ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন এক দফা দাবিতে রূপ নিয়েছে।
এক দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে রাজ্যের বিরোধীদল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও বামপন্থীদের একাংশ।
ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে
৯ আগস্ট ভোরে কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মৌমিতা দেবনাথ নামে এক তরুণী শিক্ষানবীশ ডাক্তারের মরদেহ পাওয়া যায়। ওই তরুণী সেখান থেকেই এমবিবিএস পড়ার পর পোস্টগ্র্যাজুয়েট শেষ করে হাসপাতালে যোগ দেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি টানা ৩৬ ঘণ্টার ‘অন-কল’ ডিউটিতে ছিলেন। ডিউটি শেষে সহকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে আনানো খাবার খেয়ে তিনি চারতলায় পালমোনোলজি বিভাগের সেমিনার হলে কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নিতে যান।
পরদিন সকালে সহকর্মীরা ওই হলের ভেতরেই তার অর্ধনগ্ন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
কলকাতার শহরতলীতে সোদপুর এলাকার একটি অতি সাধারণ নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছিলেন তিনি।
পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ তাদের প্রথমে জানিয়েছিল তাদের মেয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছে। পরে ময়নাতদন্তে ধরা পড়ে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
এই খবর প্রকাশের পর সোমবার কলকাতার রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার চিকিৎসক। তারা এই হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
আর জি কর মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে, বিষয়টি তিনি আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলেন। এমনকি তিনি বলেছিলেন, “রাতের বেলায় একা একা সেমিনার হলে গিয়ে মেয়েটি দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করেছে।”
পরে আন্দোলনরতদের চাপের মুখে অভিযুক্ত ওই প্রিন্সিপাল নিজের পদ ও সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। কিন্তু এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে কলকাতাসহ পুরো ভারত।
সোমবার ফেডারেশন অব রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (ফোরডা) কেন্দ্রীয় সুরক্ষা আইন দৃঢ় করা এবং চিকিৎসা পেশাদারদের সহিংসতা থেকে রক্ষার জন্য একটি কেন্দ্রীয় আইন কার্যকর করার দাবি জানায়।
২০২২ সালে পার্লামেন্টে আইনটি প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু এখনও কার্যকর করা হয়নি। অর্থমন্ত্রী জগত প্রকাশ নাড্ডা তাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। শিগগিরই আইনটি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হবে বলেও জানানো হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের চাওয়া
ডাক্তারদের অন্যান্য ফেডারেশন এবং হাসপাতালগুলো বলছে, ডাক্তারদের ওপর হামলা রোধে কেন্দ্রীয় আইনসহ একটি সুনির্দিষ্ট সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন করবেন।
আন্দোলনরতদের মধ্যে রয়েছে, ফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (এফএআইএমএ), দিল্লি ভিত্তিক অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস) এবং ইন্দিরা গান্ধী হাসপাতাল।
এআইআইএমএস রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রঘুনন্দন দীক্ষিত বলেছেন, কেন্দ্রীয় সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের লিখিত গ্যারান্টিসহ তাদের দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলবে।
ভারতের চিকিৎসা পেশাজীবীরা এমন একটি কেন্দ্রীয় আইন চান, যা ডাক্তারদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে জামিন অযোগ্য, শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করবে, যাতে ডাক্তারদের ওপর এই ধরনের সহিংস অপরাধ বন্ধ হয়।
ছাত্র ও জনতার আন্দোলনে রাজনৈতিক দলের প্রবেশ
আন্দোলনের দেড় সপ্তাহের মাথায় এতে যুক্ত হতে শুরু করে একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দল। বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের সদস্যরাও রাস্তায় নামে। ২১ আগস্ট বিকালে বিজেপি একটি মিছিল বের করে কলকাতার শ্যামবাজার এলাকা থেকে। তখন তাদের হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘দফা এক দাবি এক মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ’।
আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো প্রবেশের পরই সাধারণ মানুষ যারা রাস্তায় নেমেছিল, তাদের মধ্যে দ্বিধা দেখা দেয়। গত সপ্তাহ থেকেই আন্দোলনে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কমতে থাকে।
কলকাতার এক সাংবাদিক জানান, আন্দোলনে বিজেপির ঢোকা ঠিক হয়নি। এই কারণে সাধারণ মানুষ আন্দোলন থেকে কিছুটা হলেও সরে গেছেন।
বুধবার আনন্দবাজার পত্রিকার ‘সীমাবদ্ধতা’ শিরোনামের সম্পাদকীয়তে আর জি করের ঘটনায় ছাত্রদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিজেপির বর্তমান রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
সম্পাদকীয়র শুরুতেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের “এই আন্দোলন বিজেপির নয়, এটা সমাজের আন্দোলন” বক্তব্যটিকে সামনে আনা হয়।
সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, “সুকান্ত মজুমদার যতই একে (নাগরিক) সমাজের আন্দোলন বলে চালাতে চান, স্পষ্টতই তারা সেই সামাজিক আন্দোলনটিকে ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে উদগ্রীব। কারণ সহজ– মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনের কঠিনতম মুহূর্তে রয়েছেন, ফলে এখনই রাজনৈতিক পালাবদলের উদ্দেশ্যে সর্বশক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার সেরা সময়।
“কিন্তু, নবান্ন অভিযান বিজেপির রাজনৈতিক কল্পনাশক্তির সীমাবদ্ধতাও দেখিয়ে দিল। বুঝিয়ে দিল যে, পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক সমাজের আন্দোলনের চেহারাটি নকল করার সাধ্যও গৈরিক বাহিনীর নেই— তাদের কাছে রামনবমীর মিছিলের চেহারাও যেমন, আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদও তেমনই।”
নবান্ন অভিযান
মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ ও ভিন্নমত পোষণকারী রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ’ নামের দুইটি সংগঠন।
পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নিজেদের অরাজনৈতিক বলে দাবি করে। গত ২৩ আগস্ট তিন শিক্ষার্থী সাংবাদিক সম্মেলন করে সংগঠনটিকে সামনে নিয়ে আসেন। ওই শিক্ষার্থীরা হলেন, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র প্রবীর দাস, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএড পড়ুয়া শুভঙ্কর হালদার ও ম্যাকাউন-এর এমবিএ পড়ুয়া সায়ন লাহিড়ী। এদের মধ্যে সায়ন হলেন প্রধান আহ্বায়ক। তিনি কলেজে পড়া অবস্থায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য ছিলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনকারীরা ‘নবান্ন অভিযান’ বা সচিবালয় ঘেরাওয়ের ডাক দেয়। আন্দোলনকারীদের সামাল দিতে কলকাতা পুলিশকে জলকামান, টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জ করতে হয়। এসময় ভারতের জাতীয় পতাকা হাতে অনেককে দেখা যায়।
কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে বসানো ব্যারিকেড ভেঙে নবান্ন অভিমুখে অনেকদূর গিয়েওছিল বিক্ষোভকারীরা। এসময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে কয়েক জায়গায়। আনন্দবাজার, বর্তমানসহ একাধিক ভারতীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিতে আন্দোলনকারীদের অনেককে মুখে কাপড় বেধে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে দেখা যায়।
বর্তমান পত্রিকার বুধবারের ‘ছাত্র সেজে কারা বিক্ষোভে?’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে এনিয়ে প্রশ্নও তোলা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু হেস্টিংস মোড়ে বিজেপির পার্টি অফিসের আশেপাশে নয়, কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রের ছদ্মবেশে অশান্তি করছে আন্দোলনকারীরা। এরা ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে।
নবান্ন অভিযানের পরপরই কলকাতা পুলিশ সোশাল মিডিয়ায় ২১টি ছবি প্রকাশ করে। সেখানে পুলিশের ওপর হামলাকারী বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়। ক্যাপশনে লিখা ছিল, “সন্ধান চাই: নীচের ছবিতে যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের সন্ধান জানা থাকলে অনুরোধ, জানান আমাদের, সরাসরি বা আপনার সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে।”
মঙ্গলবার কলকাতা রণক্ষেত্র হওয়ার পর বিজেপি বুধবার ১২ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দেয়। শহরের বিভিন্ন জায়গায় সকাল থেকেই বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দ্য হিন্দুর প্রকাশিত এক ছবিতে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির এমএলএ অগ্নিমিত্রা পালকে একজন বাসচালককে বন্ধে সহযোগিতা করার কথা বলতে দেখা যায়।
তবে এনডিটিভি থেকে শুরু করে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বন্ধে কলকাতায় গাড়ি চলাচল তুলনামূলক কম। কিন্তু দোকান, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ সবই স্বাভাবিক নিয়মে চলছে।
মঙ্গলবারের রণক্ষেত্র পরিস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে নেয়নি আর জি কর মেডিকেলে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার মৌমিতা দেবনাথের পরিবার ও শিক্ষার্থীরা। মৌমিতার পরিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন করেন। কিন্তু তারা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নেই।
সহিংসতাকে সমর্থন জানায়নি আরজি কর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফোরাম (ডব্লিউবিজেডিএফ)। তাদের দাবি, ন্যায়বিচার তারাও চান। কিন্তু শান্তিপূর্ণ পথে। সহযোগিতার মাধ্যমে। পুলিশের সঙ্গে সংঘাত বা হিংসাত্মক প্রতিবাদ নয়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই তারা ন্যায়বিচার চান।
এনিয়ে সকাল সন্ধ্যার সঙ্গে কথা হয় যাদবপুর ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থী ও আন্দোলনে জড়িত থাকা ব্রতীপ্রিয়া দাসের সঙ্গে। তিনি জানান, মঙ্গলবারের সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বিজেপি, আরএসএস। ভাড়াটে লোক দিয়ে মারামারি করানো হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমাদের আন্দোলনে বিজেপি যাতে মিশে গিয়ে অন্য দিকে নিয়ে যেতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখছি আমরা। আমাদের আগের দাবিতেই আছি আমরা।”
চ্যালেঞ্জের মুখে মমতা
কয়েক মাস আগেই লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়ে বিশাল জয় পায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে আর জি করের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হওয়া আন্দোলন বলছে, রাজ্যের সবাই মমতার ব্যাপারে সন্তুষ্ট নয়।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার সম্পাদকীয়তে বলা হয়, মমতা বলপূর্বক আন্দোলন দমন করতে পারবেন না। পশ্চিমবঙ্গে মানুষ রাজনৈতিক সহিংসতা ও দুর্নীতির প্রতি বিরক্ত। সম্প্রতি মমতা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ নিলেও সাধারণ মানুষ একে যথেষ্ট মনে করছে না।
২০২৬ সালে হবে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। ভোট পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, আগামী নির্বাচনে মমতার জয় পাওয়া সহজ হবে না। কারণ এরই মধ্যে রাজ্যটিতে বিজেপির ভোট বেড়েছে আগের চেয়ে বেশি। বামদলগুলো ও কংগ্রেসও আগামী নির্বাচনে লড়াইয়ের পরিকল্পনা করছে।