মানব সভ্যতার একটা সুদীর্ঘ সময় জুড়ে মানুষের পেশিশক্তি, পশুর শক্তি এবং মূলত কাঠ, গোবর, খড়ি, কাঠকয়লা ইত্যাদি দিয়ে জ্বালানির নিবারণ হয়েছে। ১৬০০ সাল থেকে মূলত যুক্তরাজ্যে কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পায়। ১৬২০ সাল নাগাদ জ্বালানির উৎস হিসেবে কয়লা অন্যান্য জৈবজ্বালানিকে (বায়োমাস) পেছনে ফেলে এগিয়ে যায়। ১৭০০ সাল থেকে পুরো তাপশক্তির ৭৫ শতাংশই এসেছে ফসিল কার্বন থেকে। আঠারো শতকের আগেই দেখা যায়, অনেকগুলি ব্রিটিশ কয়লাখনিতে বাষ্পশক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
১৮৫০ সালের এক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, মোট জ্বালানির প্রায় অর্ধেক আসে পশুর জৈবশক্তি থেকে, ৪০ শতাংশ আসে মানুষের পেশিশক্তি থেকে, ১৫ শতাংশ জলবিদ্যুৎ, বায়ুকল এবং বাষ্পইঞ্জিন থেকে এবং সাত শতাংশ আসে কয়লা থেকে। ভাস্লাভ স্মিলের হিসাব মতে, উনিশ শতকে জ্বালানির ব্যবহারে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ৬০ গুণ বৃদ্ধি পায়, বিশ শতকে তা বৃদ্ধি পায় ১৬ গুণ। গত ২২০ বছরে ১৫০০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে ফসিল ফুয়েলের ব্যবহার।
শক্তির ব্যবহার বাড়লেও শক্তি-দক্ষতার অবস্থা ছিল ভয়াবহ। ১৮০০ সালের দিকে চুলা ও বয়লারের দক্ষতা ২৫-৩০ শতাংশের বেশি ছিল না। ২০০০ সালের দিকে এসে সার্বিক রূপান্তরের হার (mean conversion rate) দাঁড়ায় ৫০ শতাংশে। নিচে জনসংখ্যার সঙ্গে জনপ্রতি শক্তি চাহিদা বৃদ্ধির একটি শতকওয়ারি তালিকা দিচ্ছি। এ থেকে বোঝা যাবে দুনিয়ায় মানুষ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাথাপিছু শক্তি চাহিদা কীভাবে বেড়েছে এবং তার সঙ্গে মনে মনে সভ্যতার অগ্রগতি বা শিল্পবিকাশের ব্যাপারটাও মাথায় রাখা যাবে:
শক্তির চাহিদার এই বৃদ্ধি শিল্পবিপ্লবের প্রত্যক্ষ ফলাফল। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক উন্নয়নের এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের একটা নির্দেশক। যদিও সে উন্নয়ন অনেকটাই একদেশদর্শী ছিল। একুশ শতকে এসে আমরা দেখতে পাই ‘গ্লোবাল সাউথ’ বা ‘দক্ষিণ দুনিয়ার’ অগ্রগতি, যার মধ্যে চীন, ভারত, ব্রাজিলসহ অন্যান্য তথাকথিত তৃতীয় বিশ্বের অনেকগুলি দেশই অন্তর্ভুক্ত। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশও শীঘ্রই মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে এগুচ্ছে। ২০২০ সাল নাগাদ চীনের উত্থানের ফলে শক্তির চাহিদা বেড়ে গেছে মাথাপিছু ৩৪ গিগাজুলে।
অন্যভাবে বলা যায়, পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের কাছে গড়ে ৮০০ কিলোগ্রাম ক্রুড তেল বা দেড় টন ভালো মানের বিটুমিনাস কয়লার মজুদ আছে। যদিও সেকথা গড় হিসাবে আমরা বলি, কিন্তু আমরা এও জানি একজন বাংলাদেশীর তুলনায় একজন মার্কিন নাগরিক ৬৭ গুণ বেশি শক্তি খরচ করে।
বিগত শতাব্দীতে হাইড্রোকার্বন উদ্ভূত জীবাশ্ম জ্বালানির রমরমা চলেছে। ফসিল ফুয়েল বা জীবাশ্ম জ্বালানির পুরোটাই হাইড্রোকার্বন উদ্ভূত কেননা তেল-গ্যাস-কয়লার সবটাই কার্বনভিত্তিক জৈবযৌগ। এসব জৈবযৌগের দহনের ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি কেন আমরা ব্যবহার করি সে প্রশ্নের উত্তর একটু পরেই দিচ্ছি, কিন্তু এদের ভৌত সুবিধাটা অনস্বীকার্য।
প্রথমত জীবাশ্ম জ্বালানির শক্তি-ঘনত্ব (energy density) অনেক বেশি। দ্বিতীয়ত হাইড্রোকার্বনের আরেকটি সুবিধা হলো এর সহজে বহনযোগ্যতা ও স্থানান্তরযোগ্যতা। খুব সহজেই গ্যাস বা তেলকে আমরা আন্তঃমহাদেশীয় পাইপলাইন বা সমুদ্রগামী বিশাল ট্যাংকারের সাহায্যে স্থানান্তর করতে পারি। পুরো ব্যাপারটির নিয়ন্ত্রণও খুব ভাল— লোকসান কম, দক্ষতা বেশি, প্রবাহ সুনিয়ন্ত্রিত এবং নিরাপত্তা পর্যাপ্ত। নিচে জীবাশ্ম জ্বালানির শক্তি-ঘনত্বের তালিকা দেওয়া হলো:
এখানে দুটো ব্যাপার লক্ষণীয়— ওজন হিসাবে ঘনত্ব এবং একক আয়তন হিসাবে ঘনত্ব। ওজন হিসাবে শক্তি-ঘনত্বের তাৎপর্য হলো কত একক ওজনের জ্বালানি কী পরিমাণ শক্তি দিচ্ছে, অর্থাৎ উচ্চ শক্তি-ঘনত্বের জ্বালানি কম ওজনের নিলেই কাজ চলবে। ফলে জাহাজ বা প্লেন চালনায় ওজনের ব্যাপারটা খুব দরকারি। আটলান্টিক পাড়ি দিতে জাহাজে কাঠ দিয়ে জ্বালানি সরবরাহের কাজ করতে হলে বিশাল ওজনের কাঠ বহন করতে হতো। কিন্তু ডিজেল দিয়ে চালালে ওজনের একটা বড় অংশ সাশ্রয় হয়, আয়তনও কম লাগে— আড়াইগুণ কম!
আবার একক আয়তনের শক্তি-ঘনত্বের ব্যাপারটাও জরুরি। প্লেনের ক্ষেত্রে বিশেষ করে, ওজন যত কম হয় তত ভালো। ফলে প্লেনের জন্য এভিয়েশন-গ্রেড কেরোসিন বেশি পছন্দনীয়, কেননা প্রাকৃতিক গ্যাসের তুলনায় তা অনেক কম আয়তনের কিন্তু উচ্চ শক্তি-ঘনত্বের (১০০০ গুণ!) হয়ে থাকে। ইলেকট্রিসিটি দিয়ে প্লেনের (বিদ্যুচ্চালিত উড়োজাহাজ) কথা যদি ভাবতে হয়, তাহলে বলতেই হচ্ছে বাড়তি ব্যাটারির ওজন এবং জায়গা-দখল দুটোই অনেক অনেক বেশি।
তরল ক্রুড বা অপরিশোধিত তেলের উত্তোলন, ধারণ ও বিতরণ অনেক সহজ। তাছাড়া তরল যে কোনও জিনিসের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণও অত্যন্ত সহজ। এ কাজে যেসব ডিজিটাল ফ্লো-কন্ট্রোলার যন্ত্র আছে সেগুলো খুবই দক্ষ এবং পরীক্ষিত।
এছাড়া ক্রুড তেলের উৎপাদনের সঙ্গে আরও কিছু উৎপাদনও বেরিয়ে আসে যাদের ব্যাপক ব্যবহার আছে। রাস্তা পাকা করার কাজে অ্যাসফল্ট, সিন্থেটিক ফাইবার, রঙ, গ্রিজ এসবের পেছনে আছে প্রোপেন বা বিউটেন যারা ক্রুডের আংশিক পাতনের রাসায়নিক প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে বেরিয়ে আসে। এত এত সুবিধার জন্যই ক্রুডের এত জয়জয়কার— বৈশ্বিক জ্বালানি হিসাবে তাই এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে, এখন পর্যন্ত এটি বিশ্বের একমাত্র জনপ্রিয় প্রাইমারি এনার্জি বা মুখ্যশক্তি উৎস।
এর বিশ্বজয়ের পেছনে আছে মধ্যপ্রাচ্যে ক্রুডের সুবৃহৎ তৈলখনির সন্ধান এবং বৃহৎ সমুদ্রগামী ট্যাঙ্কারের উদ্ভাবন। তাছাড়া আন্তঃদেশীয় পাইপলাইনের সুবিধা তো আছেই। পঞ্চাশের দশকে ইউরোপ ও জাপানে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের ব্যাপক চাহিদাও তেলের ঊর্ধ্বগামিতার অন্যতম কারণ। বৃহৎ শিল্পকারখানায় ব্যাপক ভিত্তিতে অ্যামোনিয়া এবং প্লাস্টিক উৎপাদনে পেট্রোকেমিক্যালের ব্যবহারও একটা ব্যাপার বটে।
শক্তির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে রিচার্ড ফাইনম্যান লিখেছিলেন, “এটা একটা বিমূর্ত ব্যাপার।” বিদ্যুৎশক্তির কথা চিন্তা করলে ফাইনম্যানের কথা বুঝতে সহজ হয়, কেননা বিদ্যুৎ বা তড়িতপ্রবাহ ঠিক হাতে ধরে দেখা যায় না— ক্রুড তেল যেমন যায়। বজ্রবিদ্যুতের সময়ে কেবল বৈদ্যুতিক ঝলকের দেখা পাওয়া যায়, কিন্তু তাছাড়া একে ধরা যায় না— ছোঁয়া যায় না।
ডিজিটাল বিশ্বের আগমনের ফলে সারা দুনিয়া এখন বিদ্যুৎময়। মানুষের হাতে ডিভাইসের ছড়াছড়ি, ডিভাইস চার্জের বিষয় আছে, ইন্টারনেট সংযোগের বিষয় আছে। ইন্টারনেট বা অন্তর্জালের পুরো বিষয়টিই ইলেকট্রিসিটি নির্ভর ব্যাপার। আর এই পুরো বিষয়টি আধুনিক মানুষের জীবনের সঙ্গে এমন ওতপ্রোতভাবে মিশে গেছে যে ডিভাইস বা নেট সংযোগ নেই এমন একটি মুহূর্তও ভাবা যায় না।
আধুনিক চিন্তকরা বলছেন, ডেটার সংযোগ এবং সেই সঙ্গে পরিস্রুত বিদ্যুতের অধিকার মৌলিক অধিকারসমূহের পর্যায়ে পড়ে। দুনিয়ার পুরো ডিজিটাল ব্যাকবোনই ইলেকট্রিসিটি-ড্রিভেন বা বিদ্যুচ্চালিত। এর অর্থ দুনিয়ার সর্বত্র ইন্টারনেটের আওতাভুক্ত হওয়া প্রয়োজন সেইসঙ্গে আপনি যেখানেই যাবেন না কেন, আপনার একটি টু-পোর্ট সকেট কানেকশন লাগবেই যাতে আপনি আপনার ডিভাইসসমূহ— এমনকি গাড়িও চার্জ করে নিতে পারেন।
সকেটে থাকবে ৫০/৬০ হার্জের ১১০/২২০ ভোল্টের একটি সুন্দর সরবরাহ। আর এই সরবরাহ আপনাকে দিচ্ছে অসংখ্য ট্রান্সফরমার, হাজার হাজার মাইল ব্যাপ্ত বিতরণ ও সরবরাহ লাইন এবং কোথাও না কোথাও রয়েছে এমন এক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। সকেটের পেছনে যাই থাকুক না কেন, বিদ্যুৎ যেভাবেই উৎপাদিত হোক না কেন, সকেট যেন নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অক্ষুণ্ন রাখে। এটাই পরিস্রুত বিদ্যুতের মৌলিক অধিকার।
শক্তির অন্যতম রূপ হিসেবে বিদ্যুৎ দূষণ কম ঘটায়, অবশ্য যদি এর উৎস পরিচ্ছন্ন থাকে (নবায়নযোগ্য উৎস পরিচ্ছন্ন; কিন্তু ক্রুড তেল বা বিশেষ করে কয়লা অত্যন্ত নোংরা বা ডার্টি ফুয়েল)। ডিজিটাল ব্যাকবোন ছাড়াও বিদ্যুতের আরেকটি বিরাট প্রয়োগ হয় আলোকসজ্জায়। বৈদ্যুতিক বাল্বের আলো শুধু সজ্জায় নয়, এটা অত্যন্ত দরকারিও। খুব প্রান্তিক অঞ্চলে সৌরবিদ্যুতের ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে— সেটা শুধু যে সন্ধ্যের পর বাজার করতে পারা যায় তার জন্য নয়, সৌরশক্তির ফলে দূরান্তের শস্যখেতে পানি সেচ করা যাচ্ছে সেটার জন্যেও বটে।
শুধু লাইটিং বা বৈদ্যুতিক আলোর কথাই যদি বলি, আধুনিক এলইডি (লাইট এমিটিং ডায়োড) লাইটের ফলে অত্যন্ত সাশ্রয়ে বৈদ্যুতিক আলো আমরা পেতে পারি। নিচের তালিকা থেকে দেখা যায়—আলোকীয় দক্ষতার কী অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটেছে যা অবশ্যই বৈদ্যুতিক দক্ষতায় পর্যবসিত হয়:
আলো ছাড়াও বিদ্যুতের জরুরি ব্যবহারের মধ্যে পড়ে ইলেক্ট্রিক মোটর, পাম্প, লিফট, যে কোনও কন্ট্রোল সিস্টেম ইত্যাদি। অনেক দেশই আছে যাদের পুরো রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাটি বিদ্যুতায়িত। আমাদের দেশেও মেট্রোরেল বিদ্যুৎচালিত। ভারতের রেলের অনেকটাই বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করে। সত্যি বলতে কি পুরো রেল যোগাযোগ বিদ্যুতায়িত করে ফেলতে পারলে এবং আরেকটু চ্যালেঞ্জ নিয়ে যদি পুরোটাই সৌরবিদ্যুতে বদলে ফেলা যায়, তবে সেটা দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিরাট ভূমিকা রাখবে।
আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ সামনে আসছে— সেটি হচ্ছে ইলেকট্রিক কার বা বৈদ্যুতিক গাড়ি বিষয়ে। নানান কারণে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়ছে এবং অনেকেই আশা করছেন ২০৩০ সালের মধ্যে আর কোনও তেলচালিত ব্যক্তিগত গাড়ি চলবে না।
ইভি (ইলেক্ট্রিক ভেহিকেল) বা বৈদ্যুতিক গাড়ির রমরমা দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক উৎপাদন, সরবরাহ, বিতরণের যে কাঠামো আছে তার ওপর বড় চাপ ফেলবে। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাইমারি সোর্স বা মুখ্য উৎস কী তার ওপরেও অতিরিক্ত মনোযোগ দাবি করবে। কেননা উৎস যদি পরিচ্ছন্ন না হয়— দূষণ কমবে না।
আধুনিক সমাজের সর্বত্রই বিদ্যুতায়নের একটা প্রবল গতি দেখা যাচ্ছে। এর ফলে প্রাইমারি এনার্জি বা মুখ্য জ্বালানি সরাসরি ব্যবহৃত (এক্ষেত্রে দহন) না হয়ে আগে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে পরে বৈদ্যুতিক তারবাহিত লোডসেন্টারে বা ব্যবহারের প্রান্তে যাচ্ছে।
ক্রুড তেলবাহী পাইপলাইনের নিরাপত্তা বা রক্ষণাবেক্ষণের চেয়ে বৈদ্যুতিক লাইনের নিরাপত্তা বা রক্ষণাবেক্ষণ অনেক সাশ্রয়ী। তাছাড়া বিদ্যুতের মিটারিং বা বিলের হিসাব-নিকাশ অনেক সহজতর, নিয়ন্ত্রণ তো আরও সহজ। কাজেই ভবিষ্যতের এনার্জি কারেন্সি বা জ্বালানি মুদ্রা হিসেবে বিদ্যুতের ব্যবহার দারুণ আশা জাগানিয়া।
নবায়নযোগ্য জ্বালানিগুলির মধ্যে সৌর, বায়ু অথবা জলবিদ্যুতের তিনটিই সরাসরি বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। যদিও বৈশ্বিক চূড়ান্ত শক্তি ব্যবহারের মাত্র ১৮ শতাংশ বিদ্যুৎ থেকে আসে। বিদ্যুৎ, শক্তির একটি চমৎকার রূপ হলেও এর নানা জটিলতা রয়েছে।
বৈদ্যুতিক গ্রিডের রিলায়বিলিটি বা নির্ভরযোগ্যতা ও এর স্মার্ট সঞ্চালন একটি চ্যালেঞ্জ। যদিও এর নির্ভরযোগ্যতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আঞ্চলিক গ্রিডের উপযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেটা আমরা ইউরোপের অনিঃশেষ কানেক্টিভিটি থেকে দেখতে পাচ্ছি।
বাংলাদেশ চাইছে ভারত, ভূটান ও নেপালের সঙ্গে আঞ্চলিক গ্রিডে যুক্ত হতে। আমাদের নিকটতম আঞ্চলিক গ্রিড আসিয়ান গ্রিড। কিন্তু মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উল্লেখিত গ্রিডে বাংলাদেশের সংযুক্ত হওয়াকে জটিল করে তুলেছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভূ-রাজনীতি আন্তঃমহাদেশীয় বা আঞ্চলিক গ্রিডের সম্প্রসারণকে জটিল করে তোলে।
জ্বালানির ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবেই এ কথা প্রযোজ্য। ভূরাজনীতি, আন্তর্জাতিক মুদ্রার দরের ওঠানামা, বৈরী পরিস্থিতি, আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিতিশীলতা, বৈশ্বিক মহামারী— জ্বালানি বিষয়ক আলাপকে জটিল করে তোলে।
জীবাশ্ম জ্বালানির চমকপ্রদ ব্যবহার এবং উপযোগিতা আমাদের জানা। এটির আশুনিঃশেষ হওয়ার কোনও আশঙ্কা আপাতত নেই। আগামী ১২০ বছরের জন্য কয়লার মজুদ সুরক্ষিত আছে, আগামী ৫০ বছর তেল ও গ্যাসের মজুদ আছে। নতুনতর গবেষণার ফলে আরও নতুন রিজার্ভ বা মজুদ আবিষ্কৃত হবে।
আধুনিক বৈশ্বিক অগ্রগতি ও টেকনো-সভ্যতা জীবাশ্ম-জ্বালানির অবদান, এই জীবাশ্ম সেসব উদ্ভিজ্জ ও প্রাণীদেহ থেকে উদ্ভূত যারা ক্রেটাশিয়াস যুগে জীবিত ছিল, পরে অশ্মীভূত হয়। এমনটি মনে করার কারণ হলো, ৩০ কোটি বছর আগের কার্বনিফেরাস যুগের উদ্ভিজ্জ থেকে এবং তৎপরবর্তী পারমিয়ান এবং কিছুটা ট্রিয়াসিক যুগের উদ্ভিজ্জ ও প্রাণীজ দেহাবশেষই সম্ভবত আজকের জীবাশ্ম-জ্বালানির প্রধান উৎস। সেই দেহাবশেষ ভূপৃষ্ঠের ওলটপালটে ক্রমান্বয়ে অধোগামী হয়েছে।
ফলে উচ্চতাপ ও চাপে যেসব রাসায়নিক বিক্রিয়া ও ভৌত পরিবর্তন সাধিত হতে পারে, সেসবের মিলিত ফলই আজকের হাইড্রোকার্বন। এখন এই হাইড্রোকার্বনের আবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। জীবাশ্ম জ্বালানির দহনের ফলে সৃষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাস (যেমন কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন ইত্যাদি) পৃথিবীর তাপমাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এতে পৃথিবী ক্রমাগত উষ্ণ হতে চলেছে এবং এই উষ্ণায়নের নানা প্রতিক্রিয়া আমরা জলবায়ুর পরিবর্তন, ঋতুভিত্তিক নানা অনিয়মিত পরিবর্তন, অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, খরা-বন্যা-দাবদাহ-দাবানল ইত্যাদি নানারকমের অস্থিরতার মধ্য দিয়ে দেখতে পাচ্ছি।
এখন এই উষ্ণায়নকে থামানো না গেলেও অন্তত সীমিত রাখা যায় কিনা, তাই নিয়ে পৃথিবীবাসী চিন্তিত। ২০৫০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে দেড়-ডিগ্রি বা দুই-ডিগ্রির মধ্যে সীমিত রাখার নানান পরিকল্পনার কথা কিংবা আন্তর্জাতিক চুক্তির কথা আমরা নিয়মিত পত্রিকায় পড়ি।
তাহলে করণীয় কী— জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করে দেব? জ্বালানি বন্ধ হলে কলকারখানা বন্ধ হয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি মুখ থুবড়ে পড়বে, কেননা কে না জানে এই পুরো বৈশ্বিক ইঞ্জিনের চালিকাশক্তি হলো তেল-গ্যাস-কয়লা বা জীবাশ্ম হাইড্রোকার্বন।
বিকল্প কী? একটি বাস্তবোপযোগী কর্ম-পরিকল্পনা হলো ‘নেট জিরো’ পরিকল্পনা।
অর্থাৎ আমরা সব জ্বালানি বন্ধ করে দিয়ে, জীবনের সকল আধুনিকতাকে জলাঞ্জলি দিয়ে ‘পাথর যুগে’ ফেরত যেতে পারব না, কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির উদ্ভাবনের কল্যাণে যে কার্বন বা গ্রিনহাউস গ্যাস আমাদের বিবিধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পৃথিবীর বাতাসে প্রবেশ করাচ্ছি, তা বের করে নিতে পারব– এটাই ‘নেট জিরো’। অর্থাৎ যতটুকু দিচ্ছি বা ইনজেক্ট করছি, নিঃসরণ করছি— তা বের করে নিচ্ছি।
সিম্পল আইডিয়া! এর অন্য শক্ত নাম হলো— ‘কার্বন নিউট্রালিটি’। প্রথম ধাপ হলো, নিঃসরণ কমানো। এটা আমরা এখনই পারি, এর জন্য দরকারি প্রযুক্তি এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা আমাদের আছে। কিন্তু ‘নেট জিরো’ সম্পন্ন করার মত প্রযুক্তি আমাদের উদ্ভাবন করে নিতে হবে।
এমন কোনও প্রযুক্তি এই মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই যা বড় স্কেলে বাতাস থেকে ‘কার্বন’ উদ্ধার করতে পারে। ‘নেট জিরো’ এমন একটি ধারণা যেটি পৃথিবীর উন্নত বা উন্নয়নশীল দেশের রাষ্ট্রনায়কদের একটা স্বস্তি দেয়। তারা সেই দুর্ভাবনা থেকে সরে আসতে পারে, যাতে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও শিল্প-প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত না হয়।
কিন্তু এই কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন করতে চাইলে যে ধরনের উদ্ভাবনের প্রয়োজন ও গবেষণার প্রয়োজন তার জন্য চাই বিনিয়োগ। এটা এখন একটা দরকষাকষির ব্যাপার হয়ে গিয়েছে, যদিও সেটা বাঞ্ছনীয় ছিল না। হয়ত আমরা এই জটিলতা অতিক্রম করতে পারব।
প্রথমত আমরা সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে পারি। কারণ এর খরচ কমে এসেছে এবং এর উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনও কার্বন নিঃসরণ নেই। বায়ুকলের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য, যদিও খরচ সৌরবিদ্যুতের মতো কম নয়— একেবারে শূন্যও নয়। সৌরবিদ্যুতের প্যানেল বা বায়ুকলের পাখা তৈরিতে শক্তি খরচ হয়, বায়ুকলের কাঠামো নির্মাণে যে সিমেন্ট বা ইস্পাত-কাঠামোয় তাকে স্থাপন করা হবে, তার নিঃসরণ আছে; সংশ্লিষ্ট দূষণও আছে।
মনে রাখতে হবে, সৌরবিদ্যুৎ বা বায়ুবিদ্যুৎ উভয়ই সাময়িক উৎস। অর্থাৎ এরা সার্বক্ষণিক (২৪/৭) নয়— সূর্যের আলো দিনের বেলাতেই সীমাবদ্ধ, উপরন্তু সোলার প্যানেলের পিক-পাওয়ার হয়ত ঘণ্টা-দুয়েকের জন্য পাওয়া যায়; বাতাসের প্রবাহ ঋতুভেদে বদলায়, বছরভেদেও গ্লোবাল এয়ার সার্কুলেশন বদলায়, যেটা আবার গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের একটি সম্ভাব্য ফলাফল।
আবার ধরুন আপনার একটি বৃহদাকার সোলার পার্ক আছে। ধরা যাক, সেখানে আপনি ২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করছেন। হঠাৎ একটি বড় মেঘ এসে পড়ল, আকাশ ঢেকে গেল, আপনার উৎপাদন ২০০ থেকে ধপ করে নেমে ২০ মেগাওয়াট হয়ে গেল। বাংলাদেশে এ ঘটনা অত্যন্ত স্বাভাবিক। কয়েক মিনিটের জন্য আপনার প্ল্যান্ট ‘আউট’ হয়ে গেল। পরক্ষণেই মেঘ সরে যাচ্ছে, আপনি পূর্ণ ক্ষমতা ফেরত পাচ্ছেন।
কিন্তু ওই কয়েক মিনিটের জন্য রেডিমেড ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আপনি কোন উৎস থেকে পাবেন? হয় আপনাকে সার্বক্ষণিক একটি ডিজেল প্ল্যান্ট স্ট্যান্ডবাই রাখতে হবে, নতুবা সব কিছু বন্ধ রাখতে হবে। এই ইন্টারমিটেন্সি একটি বড় সমস্যা। গ্রিড অপারেটরের জন্য এটা একটা বড় মাথাব্যথা।
এটা এড়ানোর জন্য গ্রিড-স্কেল ব্যাটারি-স্টোরেজ রাখতে হবে। এতে প্রচুর ব্যাটারি প্রয়োজন পড়ে, অনেক জায়গাও দরকার হয়, আর মেগাওয়াট-আওয়ার স্কেলের এইসব ব্যাটারি-মজুদের মূল্য অস্বাভাবিক বেশি, বিশেষ করে আমাদের জন্য। এমনকি অন্য জাতীয় শক্তি-মজুদের কৌশলও আমাদের জন্য উপযুক্ত হবে না।
একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। টোকিও শহরকে যদি শুধু ব্যাটারি চালিয়ে তিন দিন চালু রাখতে হয় তাহলে ১৪ মিলিয়ন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির প্রয়োজন হবে। যার বাজারমূল্য দাঁড়াবে ৪০,০০০ কোটি টাকা! ব্যাটারির শক্তি-ঘনত্ব খুবই কম— পেট্রোলের ৩৫ ভাগ!
ব্যাটারি-সঞ্চয় প্রযুক্তি উদ্ভাবন আমাদের খুবই প্রয়োজন— এর শক্তি-ঘনত্ব বাড়াতে হবে, এর খরচ কমাতে হবে, এর আয়তন কমিয়ে আনতে হবে, দূষণও কমাতে হবে। এটা বড় রকমের চ্যালেঞ্জের বিষয়।
নিরবচ্ছিন্ন কিন্তু পরিচ্ছন্ন বিদ্যুতের একটি বড় আর নির্ভরযোগ্য উৎস হলো পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। পরমাণু বিদ্যুৎ একটা দারুণ উদ্ভাবন। কিন্তু এর দুটো সমস্যা— এর তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের সমস্যাটি তুচ্ছ কোনও বিষয় নয়; গণমানুষের মনে এর সম্পর্কে একটা ভীতি আছে। চেরনোবিল এবং ফুকুশিমা মানুষের মনে ভীষণ ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। এই ভয়কে যদি অতিক্রম করা যায়, তাহলে পরমাণু বিদ্যুৎ (ফিশন এবং ফিউশন) আমাদের শক্তির চাহিদার একটা স্থায়ী সমাধান দিতে পারে।
নবায়নযোগ্য শক্তি-উৎসের আরেকটি সমস্যা হলো এদের গ্রিড-উপযোগিতা। যেহেতু তারা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে পারে না, তাই জাতীয় গ্রিডে সার্বিক সক্ষমতার ১৫-২০ শতাংশ এর বেশি বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে নেওয়া হয় না। যদি এর বেশি নিতে হয়, তাহলে জাতীয় গ্রিডে যথেষ্ট পরিমাণ পরমাণু বিদ্যুতের উৎস থাকতে হবে অথবা ব্যাটারি-স্টোরেজ থাকতে হবে।
আরেকটি সমাধান আছে। যদি গ্রিডটি আঞ্চলিক গ্রিডের সঙ্গে ভালোভাবে সংযুক্ত থাকে, তবে সময়ে অসময়ে আপনি প্রতিবেশীদের গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে আসতে পারবেন। ধরে নেওয়া হচ্ছে, প্রতিবেশীদের যথেষ্ট নিউক্লিয়ার পাওয়ার বা অন্য শক্তি-উৎস আছে। যেমন জার্মানি বা ডেনমার্কের মতো দেশে বাতাসের প্রবাহ কমে গেলে বা মেঘলা আবহাওয়া থাকলে তার চট করে ইউরোপিয়ান গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নিতে পারে। কারণ অন্য দেশের হয়ত ভালো বাতাস বা সৌরলোক বা নিউক্লিয়ার সোর্স যথেষ্ট আছে। আবার তার যখন প্রয়োজন পড়বে, আমি তখন সাপ্লাই দেব ইত্যাদি।
এই ধরনের কানেক্টিভিটি বা গ্রিড-যুক্ততা থাকলে জাতীয় গ্রিড যথেষ্ট পরিমাণে ‘ডিকার্বনাইজড’ বলা চলে। শক্তিশালী ও ব্যাপ্ত গ্রিড-সংযোগ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, ভালো বোঝাপড়া ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে।
একুশ শতকের প্রথম দুই দশকে জীবাশ্ম জ্বালানির বৈশ্বিক ব্যবহার ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। এর একটা বড় কারণ চীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতি। একই কারণে প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহে জীবাশ্মের অনুপাত ৮৭ শতাংশ থেকে কমে মাত্র ৮৪ শতাংশে থিতু হয়েছে। বর্তমানে জীবাশ্ম কার্বনের বার্ষিক বৈশ্বিক চাহিদা ১০ বিলিয়ন টন। এই কার্বন বাতাসে অনুপ্রবেশ করছে।
একটা হিসাব মনে রাখুন। পৃথিবীর বাতাসে পৃথিবীবাসী প্রতি বছর গড়ে ৫১ বিলিয়ন টন গ্রিনহাউস গ্যাস অনুপ্রবেশ করায় যার ৩৭ বিলিয়ন টন হলো কার্বন ডাই-অক্সাইড আর ১০ বিলিয়ন টন হলো কার্বন। এই পুরোটাকে উদ্ধার করাই আমাদের আশু চ্যালেঞ্জ।
আমাদের বৈশ্বিক নিঃসরণের একটা তালিকা করেছেন বিল গেইটস। তার হিসাব মতে, আমাদের সার্বিক নিঃসরণের এক-তৃতীয়াংশ আসে নির্মাণ শিল্প থেকে। বাকি এক-তৃতীয়াংশের কিছুটা কম আসে বিদ্যুৎ খাত থেকে, এক-পঞ্চমাংশ আসে কৃষি থেকে, আর বাকিটুকু আসে যোগযোগ খাত ও কুলার-হিটার ইত্যাদি থেকে।
বিল গেইটসের মতে আমাদের অনেকগুলো ব্রেকথ্রু প্রয়োজন এই পঞ্চখাতে উল্লিখিত নিঃসরণগুলি কমাতে। জ্বালানিবিদ্যার আলোচনা করতে গিয়ে আমরা একটা বড় সমস্যায় উপনীত হয়েছি। জ্বালানির সমস্যা ও এর থেকে উত্তরণের সীমিত আলোচনায় এত কিছুর আলোচনার সুযোগ সীমিত। কিন্তু এ থেকে বোঝা যায় জ্বালানিবিদ্যা বা শক্তি-সমস্যা পৃথিবীর কয়েকটি গোড়ার সমস্যাকে মোকাবিলা করে।
শক্তি সমস্যার সমাধানে আমাদের গ্রহের সমস্যার উত্তর নিহিত। আবার এর সঙ্গে বৈশ্বিক রাজনীতি, ভূ-রাজনীতির ঐতিহাসিক ও আঞ্চলিক মারপ্যাঁচ, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন-কৌশল, পরিবেশবিদ্যা, ভূতাত্ত্বিক তথ্য— এসবই চলে আসে। এ জন্য শক্তির সমস্যার একক কোনও সমাধান নাই।
এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া, একটি ডায়নামিক সিস্টেম, যেখানে একটি আপ্তবাক্য আপনাকে মনে রাখতে হবে— অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা!
পাঠসূত্র:
১. মানুষের শক্তি, জহুরুক হক, ১৯৮১; ২. পরমাণু বিদ্যুতের দিগ্বিজয়, ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, ২০২০, চৈতন্য; ৩. হাউ টু এভয়েড আ ক্লাইমেট ডিজাস্টার, বিল গেইটস, ২০২১; ৪. হাউ দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়র্কস, ভাস্লাভ স্মিল, ২০২২।
লেখক: অধ্যাপক ও পরিচালক, জ্বালানি ও টেকসই গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।