যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে ভুয়া তথ্য, এআই দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব শেয়ার করে হাজার হাজার ডলার আয় করছেন ব্যবহারকারীরা। এই কাজে সম্পৃক্ত বেশ কয়েকজন এক্স ব্যবহারকারীর সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানতে পেরেছে বিবিসি।
বিবিসি কয়েক ডজন এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টের এমন কয়েকটি নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করেছে, যেগুলো দিনে একাধিকবার একে অপরের কনটেন্ট বারবার শেয়ার করে। সত্যের সঙ্গে ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও ভুয়া উপাদানের মিশ্রণে তৈরি এসব কনটেন্ট শেয়ার করে নিজেদের রিচ বাড়ানোসহ প্রচুর আয়ও করেন তারা।
এমন অনেক ব্যবহারকারী বিবিসির সোশাল মিডিয়া অনুসন্ধান প্রতিবেদক মারিয়ানা স্প্রিংকে বলেন, তাদের নিজস্ব এবং অন্যান্য অ্যাকাউন্ট থেকে আয় কয়েকশ থেকে হাজার ডলার পর্যন্ত। তারা আরও বলেন, তারা বিভিন্ন ফোরাম এবং গ্রুপ চ্যাটে একে অপরের পোস্ট শেয়ারও করেন।
এই নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে কিছু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করে, অন্যরা কমলা হ্যারিসকে এবং কিছু প্রোফাইল স্বাধীন। এই প্রোফাইলগুলোর মধ্যে কোনও দলের অফিসিয়াল প্রচারের সঙ্গে যুক্ত নয়- এমন বেশ কয়েকটির আইডির মালিকরা জানিয়েছেন, প্রার্থীসহ অনেক রাজনীতিবিদ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
গত ৯ অক্টোবর এক্স তার নিয়মে কিছু বদল এনেছে, যার সুযোগে ব্যবহারকারীরা এভাবে আয় করার সুযোগ পেয়েছেন। এক্স নতুন নিয়ম করেছে যে, এখন থেকে প্রিমিয়াম ব্যবহারকারীদের পোস্টে বিজ্ঞাপনের সংখ্যার পরিবর্তে লাইক, শেয়ার ও মন্তব্যের সংখ্যার ভিত্তিতে তাদের অর্থ দেওয়া হবে।
আরও অনেক সোশাল মিডিয়া সাইটও ব্যবহারকারীদের তাদের পোস্ট থেকে অর্থ উপার্জনের সুযোগ দেয় বা স্পনসরকৃত কনটেন্ট থেকে আসা আয় শেয়ার করে। কিন্তু তাদের সাধারণত এমন নিয়ম থাকে যা তাদেরকে ডি-মনিটাইজ করার বা ভুয়া তথ্য পোস্ট করে এমন প্রোফাইল স্থগিত করার অধিকার দেয়। কিন্তু এক্সে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর দায়ে এমন কোনও শাস্তির নিয়ম নেই।
অন্যান্য সাইটের তুলনায় এক্সের ব্যবহারকারীর সংখ্যা কম হলেও রাজনৈতিক আলোচনায় এটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার মাত্র এক মাসে আগে এক্স তার নিয়মে এই পরিবর্তন এনেছে।
তাই প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচনের আগে এক্স তার ব্যবহারকারীদের উস্কানিমূলক পোস্ট দিতে উৎসাহিত করতেই এই পরিবর্তন করেছে কিনা। উল্লেখ্য, এক্সের মালিক ইলন মাস্ক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশ্য সমর্থক এবং ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারণায়ও নেমেছেন।
এসব প্রোফাইল থেকে শেয়ার করা বিভ্রান্তিকর পোস্টগুলোর মধ্যে রয়েছে, নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির দাবি, যা কর্তৃপক্ষ প্রত্যাখ্যান করেছে। এবং প্রেসিডেন্ট ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের বিরুদ্ধে শিশুকাম ও যৌন নির্যাতনের ভিত্তিহীন অভিযোগ।
এক্সে শেয়ার করা কিছু বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা পোস্ট ফেসবুক এবং টিকটকের মতো বড় সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে। যেমন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর জুলাইয়ের হত্যা প্রচেষ্টা সম্পর্কে এক্স থেকে ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোতেও ছড়ায়।
নতুন নিয়ম করে ব্যবহারকারীদেরকে এই ধরনের পোস্ট করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে কিনা বিবিসির এমন প্রশ্নের কোনও জবাব দেয়নি এক্স। এক্সের মালিক ইলন মাস্কও এ ব্যাপারে কোনও সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হননি।
‘আয় করা অনেক সহজ হয়ে গেছে’
ফ্রিডম আনকাট নামের একটি এক্স আইডির মালিক বলেন, তিনি একজন স্বাধীন ব্যবহারকারী। তবে কমলা হ্যারিস নয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হোক সেটাই চান তিনি। তার বন্ধুরা তাকে ফ্রি বলে ডাকে। তিনি নিজেই কনটেন্ট বানান ও শেয়ার করেন।
ফ্রি বলেন, এক্সে পোস্ট করার জন্য তিনি প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় ব্যয় করেন। কয়েক ডজন কনটেন্ট নির্মাতার একটি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখেন, তিনি নিজেও যার অংশ। তাদের নেটওয়ার্কটি মূলত এআই দিয়ে তৈরি ছবি শেয়ার করে।
তিনি তার পুরো নাম বা আসল পরিচয় শেয়ার করেন না। কারণ তার পরিবারের ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে ফাঁস করে তাকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
তিনি কোনোভাবেই চরম পোস্টাদাতাদের একজন নন এবং বিবিসির প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা করে এক্সে এই নেটওয়ার্কগুলো কীভাবে কাজ করে তা ব্যাখ্যা করতে রাজি হন।
তিনি বলেন, নির্বাচন সম্পর্কে নিয়মিত পোস্ট দেওয়া শুরু করার পর থেকে গত কয়েক মাসে তার পোস্টে মোট ১ কোটি ১০ লাখ ভিউ হয়েছে। ফ্লোরিডার টাম্পায় তার বাড়িতে কথা বলার সময় তিনি অনেকগুলো পোস্ট বিবিসির প্রতিবেদককে দেখান।
এসব পোস্টে কিছু ছিল স্পষ্টতই ব্যঙ্গাত্মক। যেমন, একটি পোস্টে দেখা যায় ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্য ম্যাট্রিক্সের একটি চরিত্রের মতো তাকে ছোঁড়া বুলেটগুলোকে হাত দিয়ে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। আরেকটি পোস্টে প্রেসিডন্ট জো বাইডেনকে একজন স্বৈরশাসক হিসাবে দেখানো হয়।
আরেকটি ছবিতে দেখা যায় এক ব্যক্তি তাদের বন্যায় প্লাবিত বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে আছেন। আর একটি যুদ্ধবিমান পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় মন্তব্য করছে, “মনে রাখবেন, রাজনীতিবিদরা ৫ নভেম্বরে আপনার কোনও তোয়াক্কা করে না।”
ছবিটি ট্রাম্পের দাবির প্রতিধ্বনি করে যে, হারিকেন হেলেনের পরে নর্থ ক্যারোলিনার মানুষদের উদ্ধারে কোনও হেলিকপ্টার পাঠানো হয়নি। তবে নর্থ ক্যারোলিনা ন্যাশনাল গার্ড এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ১৪৬টি ফ্লাইট মিশনে শত শত মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ফ্রিডম আনকাটের মালিক বলেন, তিনি তার তৈরি ছবিগুলোকে ‘শিল্প’ হিসাবে দেখেন, যা আলোচনা তৈরি করে।
তিনি বলেন, তিনি কাউকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন না। তিনি চাইলেই এআই ব্যবহার করে আরও অনেক কিছুই করতে পারেন।
তার দাবি, এক্স থেকে তিনি মাসে অন্তত ৩ হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন। তিনি বলেন, “আমি মনে করি এক্সে মানুষের পক্ষে অর্থ উপার্জন করা অনেক সহজ হয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, তার পরিচিত কিছু এক্স ব্যবহারকারী ১০ হাজার ডলারেরও বেশি আয় করেন, যাদের পোস্টের রিচ অনেক বেশি। আর বিতর্কিত কনটেন্ট সবচেয়ে বেশি ভিউ পায়।
তার দাবি, তিনিও ‘উস্কানিমূলক জিনিস’ পোস্ট করেন, তবে তা ‘সাধারণত বাস্তবতার কিছু সংস্করণের উপর ভিত্তি করে’ তৈরি করা হয়। কিন্তু অনেক প্রোফাইল থেকে পুরোপুরি মিথ্যা কনটেন্টও ছড়ানো হয়। তিনি বলেন, এটি একটি সহজ ‘অর্থ-উৎপাদক’।
ভুয়া তথ্য নির্বাচনকে প্রভাবিত করার দাবির বিষয়ে উদ্বেগ নাকচ করে দিয়ে ফ্রিডম আনকাট বলেন, সরকার নিজে পুরো ইন্টারনেটের চেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়ায়।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় রাজনীতিবিদরা তাদের পক্ষে সমর্থনের জন্য তার মতো অ্যাকাউন্টগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তার লাইভ স্ট্রিমগুলোতে উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে তার সঙ্গে চ্যাট করেছে এবং তাদের জন্য মিম, এআই ছবি এবং আর্টওয়ার্ক তৈরি এবং শেয়ার করার বিষয়েও তার সঙ্গে কথা বলেছে।
সত্য বা মিথ্যা যাইহোক না কেন, এই পোস্টগুলো কি নির্বাচনে বাস্তব প্রভাব ফেলতে পারে?
এমন প্রশ্নের জবাবে ফ্রিডম আনকাট বলেন, “আমি মনে করি আপনি বর্তমানে এটি দেখছেন। আমি মনে করি যে এই প্রচারণা থেকেই ট্রাম্পের অনেক সমর্থক তৈরি হচ্ছে।”
তার মতে, প্রথাগত মিডিয়া কোম্পানির তুলনায় স্বাধীন মিডিয়ার উপরই মানুষের বেশি আস্থা রয়েছে। এমনকি এআই-জেনারেটেড ছবি এবং ভুয়া তথ্য শেয়ার করা অ্যাকাউন্টগুলোকেও তারা মূলধারার গণমাধ্যমের চেয়ে বেশি বিশ্বাস করেন।
‘সত্য জানার কোনও উপায় নেই’
ফ্রিডম আনকাট বলেন, ট্রাম্পপন্থী অ্যাকাউন্টগুলোর সঙ্গে টেক্কা দেওয়া একটি এক্স প্রোফাইলের নাম ‘ব্রাউন আইড সুসান’, যার ২ লাখের বেশি ফলোয়ার রয়েছে।
প্রোফাইলটি ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সমর্থনে প্রতি ঘন্টায় একাধিকবার কনটেন্ট পোস্ট করা ‘ডাই-হার্ড’ অ্যাকাউন্টগুলোর একটি নেটওয়ার্কের অংশ। সুসানও অনলাইনে প্রাপ্ত হুমকি এবং অপব্যবহারের কারণে শুধু তার নামের প্রথম অংশ ব্যবহার করে কিন্তু পুরো নাম প্রকাশ করে না।
লস এঞ্জেলেস থেকে বিবিসির প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় সুসান বলেছেন, তিনি কখনোই তার পোস্টগুলো থেকে অর্থ উপার্জন শুরু করতে বা তার অ্যাকাউন্টের পোস্টগুলোর রিচ এতো বেশি হোক তা চাননি। এখন তিনি দিনে ১০০টিরও বেশি বার্তা পোস্ট করেন এবং পুনরায় শেয়ার করেন। তার পোস্টগুলো কখনও কখনও প্রতিটি ২০ লাখেরও বেশি ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছায়।
তিনি বলেন, এক্স তার প্রোফাইলে নীল টিক চিহ্ন দিয়ে দেওয়ার কারণেই তিনি তার পোস্টগুলো থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারছেন। সাধারণত যারা এক্সকে অর্থ দেন তাদের প্রোফাইলেই নীল টিক চিহ্ন দেওয়া হয়। এ ছাড়া কিছু বিশিষ্ট অ্যাকাউন্টকে চিহ্নিত করতেও নীল টিক দেওয়া হয়।
সুসান বলেন, “আমি এটা চাইনি। আমি এটি লুকাতেও পারি না এবং আমি এটি ফিরিয়েও দিতে পারি না। তাই আমি মনিটাইজেশনে ক্লিক করেছি।” তিনি জানান, মাসে তিনি কয়েকশ ডলার উপার্জন করতে পারছেন। তার কিছু ভাইরাল পোস্ট ৩০ লাখেরও বেশি ভিউ হয়েছে।
তিনি তার আইডি থেকে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় নীতির বিষয়ে পোস্টের পাশাপাশি ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারও করেছেন। যেমন, গত জুলাইয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হত্যা প্রচেষ্টাকে তিনি ট্রাম্পের নিজেরই সাজানো নাটক বলে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন।
ওই পোস্টে তিনি বলেন, সমাবেশের একজন সাধারণ দর্শক-শ্রোতা এবং বন্দুকধারী নিহত হলেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঘাত, নিরাপত্তার ব্যর্থতা এবং ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করা হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে তার জেনুইন কিছু প্রশ্ন রয়েছে।
পোস্টটিতে তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনার সত্যটা কী তা জানার কোনোও উপায় নেই। তাই কেউ যদি এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্রমূলক বলতে চায় তবে তারা তা বলতে পারেন।”
সুসান মিমও শেয়ার করেন। যার মধ্যে কিছু মিমে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এআই দিয়ে আরও বেশি বুড়ো বা অসুস্থ বানিয়ে দেখানো হয়। ক্যাপশনে তিনি বলেন, এগুলো তার বর্তমান অবস্থার চিত্র তুলে ধরে।”
কিছু মিমে ট্রাম্পকে একজন স্বৈরশাসকের মতো দেখাচ্ছে। সুসান বলেন, তার সমস্ত ছবিই এআই দিয়ে বানানো এবং সত্য নয়।
সুসান বলেন, ফ্রিডম আনকাটের মতো তার সঙ্গেও প্রার্থীসহ রাজনীতিবিদরা সমর্থনের জন্য যোগাযোগ করেছেন। তিনি বলেন, তিনি তাদের জন্য যতটা সম্ভব ‘সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার’ চেষ্টা করেন।
‘তারা চায় এটা বাস্তব হোক’
কমলা হ্যারিস ম্যাকডোনাল্ডসে কাজ করেছিলেন কিনা তা নিয়ে বিতর্কের পরে, ফাস্ট ফুড চেইনটির ইউনিফর্মে তার একটি ফটোশপ করা ছবি তার সমর্থকরা ফেসবুকে ভাইরাল করে।
কিছু ট্রাম্প-পন্থী অ্যাকাউন্ট যখন বুঝতে পারে, ছবিটি বাস্তবে অন্য এক নারীর ছবি ছিল, তখন তারা অভিযোগ করে যে ছবিটি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে এসেছে। তবে তাদের সেই অভিযোগ ছিল ভিত্তিহীন।
‘দ্য ইনফিনিট ডুড’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট সর্বপ্রথম ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছিল: ‘দিস ইজ ফেইক’। সেটিই পরে কমলার সমর্থকরা ভাইরাল করে দেয়।
ছবিটির পেছনে থাকা ব্যক্তি বিবিসির প্রতিবেদককে বলেন, তার নাম ব্লেক এবং তিনি এটি একটি পরীক্ষার অংশ হিসাবে শেয়ার করেছেন। এর আগে বিবিসি প্রতিবেদক যেসব অ্যাকাউন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন, ব্লেকের প্রোফাইলে তাদের সমান অনুসারী নেই।
তিনি যে ছবিটিতে কারসাজি করেছেন, বিবিসির প্রতিবেদক তার কাছে সেই প্রমাণ চাইলে ব্লেক বলেন, তার কাছে ‘মূল ফাইল এবং তৈরির টাইমস্ট্যাম্প’ রয়েছে। কিন্তু তিনি সেগুলো বিবিসির প্রতিবেদকের সঙ্গে শেয়ার করেননি। কারণ, তিনি বলেন, প্রমাণ আসলেই গুরুত্বপূর্ণ নয়।
তিনি বলেন, “লোকে কোনও কনটেন্ট শুধু বাস্তব বলেই শেয়ার করে না, তারা আসলে সেটা বাস্তব হোক তা চায়। উভয় পক্ষই এটি সমানভাবে করে— শুধু বিশ্বাস করার জন্য ভিন্ন গল্প বেছে নেয়।”
ব্লেক তার রাজনৈতিক আনুগত্য অস্পষ্ট রেখেছেন এবং তিনি বলেন এটা ‘রাজনীতির বিষয় নয়’।
এক্স বলছে, তাদের অগ্রাধিকার হল ব্যবহারকারীর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখা এবং রক্ষা করা। সাইটটি কিছু এআই দিয়ে তৈরি এবং কারসাজি করা ভিডিও, অডিও ও ছবিতে ‘ম্যানিপুলেটেড মিডিয়া’ লেবেল লাগিয়ে দেয়। এটিতে কমিউনিটি নোটস নামে একটি ফিচারও রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে তথ্য যাচাই করে।
যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের সময় এক্স বিবিসির প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসা ভুয়া ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করা কিছু অ্যাকাউন্টের নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রচারণায় ভুয়া কনটেন্ট নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদক তার প্রশ্ন বা ইলন মাস্কের সাক্ষাৎকার নেওয়ার অনুরোধের জবাব পাননি।