Beta
মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫

এইচএসসি : পাসের হার কমলেও জিপিএ-৫ বেড়েছে ৫৩ হাজার

বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গত ৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষায় বসে ঢাকার শিক্ষার্থীরা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গত ৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষায় বসে ঢাকার শিক্ষার্থীরা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মাঝপথে আটকে যাওয়া ১১টি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

এবছর পাস করেছে ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা আগের বছরের তুলনায় সামান্য কম। তবে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা অর্ধ লক্ষের বেশি বেড়েছে।

অনুষ্ঠিত সাতটি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর এবং বাকি বিষয়ের ক্ষেত্রে এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের মূল্যায়নের ভিত্তিতে মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে।

এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি, আলিম ও এইচএসসি-ভোকেশনালে ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল।

তাদের মধ্যে ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৯ জন পাস করেছে। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন।   

গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯২ হাজার ৫৯৫ জন।

গতবারের সঙ্গে তুলনা করলে এ বছর পাসের হার কমেছে শূন্য দশমিক ৮৬ শতাংশ পয়েন্ট। তবে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৩১৬ জনে।

রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেন। এরপর ফল ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।   

তার ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট বা সচিবালয় থেকে এইচএসসির ফলাফল বিস্তারিতভাবে সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবার তেমন কোনও আয়োজন রাখেনি, হয়নি কোনও সংবাদ সম্মেলন।

কোনও ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিজ নিজ বোর্ডের ফল ঘোষণা করেন।

যেভাবে জানা যাবে ফলাফল

এবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটের পাশাপাশি যে কোনও মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএস করে পরীক্ষার ফল জানা যাবে।

ঢাকা বোর্ডের ওয়েবসাইট (www.dhakaeducationboard.gov.bd) ও বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইটে (www.educationboardresults.gov.bd) গিয়ে রেজাল্ট কর্নারে ক্লিক করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম এন্ট্রির পর প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ফলাফল পাওয়া যাবে।

এছাড়া পরীক্ষার্থীরা রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর টাইপ করে ফল জানতে পারবে।

মোবাইলে ফল জানতে ইংরেজিতে এইচএসসি লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৪ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে আসবে ফল।

যেভাবে আটকে গিয়েছিল পরীক্ষা

এবছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩০ জুন। তবে বন্যার কারণে সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ৯ জুলাই।

সব মিলিয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ২৮ হাজার ২৮১ জন। অন্যদিকে মাদরাসা বোর্ডের আলিমে ৮৮ হাজার ৭৬ জন এবং কারিগরি বোর্ডের পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩৩ জন।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংসতায় গড়ানোর পর ১৮ জুলাই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তখন পর্যন্ত সাতটি বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছিল।

এরপর আন্দোলন আরও তীব্র হয়। কয়েকশ মানুষের মৃত্যুতে সেই বিক্ষোভ গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। তার জেরে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।

এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর পরীক্ষা পুনরায় শুরুর তোড়জোড় হচ্ছিল। কিন্তু সরকার পতনের পর সহিংসতায় বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র পুড়ে যাওয়ায় পরীক্ষা ফের শুরুতে দেরি হচ্ছিল।

পরে স্থগিত পরীক্ষাগুলো ১১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। সেজন্য নতুন সূচিও প্রকাশ করেছিল কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু পরীক্ষা দিতে অনাগ্রহী শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। তাদের যুক্তি ছিল, সহিংস আন্দোলনের যে ট্রমা তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠে পরীক্ষায় বসার মতো অবস্থায় নেই তারা।

তখন অন্তর্বর্তী সরকার তা আরও দুই সপ্তাহ পিছিয়ে অর্ধেক প্রশ্নে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

কিন্তু ২০ আগস্ট ৫ শতাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে ঢুকে পরীক্ষা না দেওয়ার দাবি তোলে। সেদিনই কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি মেনে নিয়ে বাকি পরীক্ষাগুলো না নেওয়ার ঘোষণা দেয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত