Beta
রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫

রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ লাখ গবাদি পশু : বিডিএফএ

কোরবানিতে চোরাইপথে গরু আসা বন্ধ, রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সহায়তা ও গুঁড়া দুধের শুল্ক বাড়ানোর দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিডিএফএ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
কোরবানিতে চোরাইপথে গরু আসা বন্ধ, রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সহায়তা ও গুঁড়া দুধের শুল্ক বাড়ানোর দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিডিএফএ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

বাংলাদেশে গত রবিবার আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় রেমালে অন্তত ২৫ লাখ গবাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দাবি করে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ) বলছে, এতে কোরবানির উদ্দেশ্যে যারা গবাদি পশু লালন করেছেন, তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

শনিবার সকালে ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এমনটা দাবি করা হয়। কোরবানিতে চোরাইপথে গরু আসা বন্ধ, রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সহায়তা ও গুঁড়া দুধের শুল্ক বাড়ানোর দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বিডিএফএর সভাপতি মো. ইমরান হোসেনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রান্তিক খামারিরা নিজেদের কথা তুলে ধরেন।

ইমরান হোসেন বলেন, বাংলাদেশে আঘাত হানা প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে বড় ক্ষত তৈরি করেছে। বিশেষ করে কোরবানির হাটের উদ্দেশ্যে যারা গবাদি পশু লালন করেছে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে।

তিনি বলেন, ১৯ জেলার ১০৭টি উপজেলায় অন্তত ২৫ লাখ গবাদি পশু ঝড়ের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে পশুর মৃত্যুর খবর আসছে। গবাদি পশুর ৯ হাজার ৭৫৯ একর চারণভূমি প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রাকৃতিক খাবারের বড় সংকট তৈরি হয়েছে।

এ মুহূর্তে চিকিৎসা, গরুর ঘর তৈরি করে দেওয়া ও আর্থিক প্রণোদনা প্রয়োজন জানিয়ে জানিয়ে বিডিএফএ সভাপতি বলেন, যেসব খামারির গবাদি পশু মারা গেছে তাদের ব্যাংকঋণ মওকুফ করতে হবে। সহজ শর্তে সুদবিহীন কৃষিঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে এবং গবাদি পশুর জন্য ঘাসের বিকল্প খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।

ঈদ ঘিরে চোরাইপথে বাংলাদেশে গরু আসছে অভিযোগ করে ইমরান হোসেন বলেন, এবার চাহিদার চেয়ে ২৩ লাখ বেশি পশু প্রস্তুত আছে। তারপরও ঈদুল আজহা সামনে রেখে নানা কৌশলে ভারত ও মিয়ানমার থেকে সীমান্ত গলিয়ে ঢুকছে গরু-মহিষ।

তিনি বলেন, কোরবানি উপলক্ষে ভারত ও মিয়ানমার থেকে গরু আসবে না– সরকারের এমন ঘোষণায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন দেশী খামারিরা। এখন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু ঢোকায় লোকসানের শঙ্কায় নিরাশ তারা। এমন পরিস্থিতিতে সীমান্ত পথে গরু আসা বন্ধে কঠিন নজরদারি করতে হবে।

কুমিল্লার খামারি সজীব হোসেন বলেন, কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের অসুস্থ গরু আমদানি হচ্ছে। এসব গরু লবণ, পানি ও খড় ছাড়া কিছুই খায় না। এসব গরু আমদানি করে দেশীয় গবাদিপশুকে হুমকির মুখে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগ খামারিদের

সংবাদ সম্মেলনে খামারিরা অভিযোগ করেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর তাদের কোনও সহযোগিতা করছে না।

জামাল হোসেন নামে এক প্রান্তিক খামারি বলেন, “আমি ডিজির (প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিন দিন পরে দেখা করার জন্য সময় দেন। গরু অসুস্থ হলে সরকারি ডাক্তারদের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।”

ঢাকার মোহাম্মদপুরের আদাবরের খামারি রাশিদা বেগম জানান, তার ২০টি গাভীর মধ্যে ১৫টি মারা গেছে। গরু অসুস্থ হলে ডাক্তারকে ফোন দিলে ১০ হাজার টাকা চায়। একদিন পরে খামারবাড়ি থেকে ডাক্তার গেছে।

তিনি বলেন, “গরু যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন খামারবাড়ির ডাক্তারদের ফোন দিলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাবি করে। বাধ্য হয়ে ৮ হাজার টাকা দিয়েছি।

“পরে ডাক্তারের সামনেই দুটি গাভী মারা গেছে। কী রোগ হয়েছিল তা জানতে তারা পরীক্ষার জন্য আলামত নিলেও এখনও রিপোর্ট দেয়নি। আমি এখন নিঃস্ব।”

এ সময় বিডিএফএ সভাপতি বলেন, “আগে ডাক্তাররা মোটরসাইকেলে আসত, তাদের ২০০-৩০০ টাকা দিলেই হতো। বর্তমানে ৫০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। এসব ঘুষ ছাড়া সেবা পাওয়া যাচ্ছে না।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত