ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোতে সংস্কারের দাবিতে উত্তাল পুরো বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম পাড়া। শনিবার সকালে সাবেক নারী ফুটবলাররা বাফুফে ভবনের সামনে মানব বন্ধন করে। দুপুরে ৭ দফা দাবি জানায় পেশাদার ফুটবলাররা। এরপর বিকেলে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় দাড়িয়ে মানব বন্ধন করেছেন বিভিন্ন সময়ে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত খেলোয়াড় ও সংগঠকেরা।
‘খেলাধুলায় রাজনীতি নয়’, ক্রীড়াঙ্গন থেকে দুর্নীতি দূর হোক- এমন নানা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে এসেছিলেন অনেক সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়। এদের মধ্যে ছিলেন ব্যাডমিন্টনের সাবেক তারকা কামরুন নাহার ডানা, টেবিলে টেনিসের জোবেরা রহমান লিনু, সাইদুর রহমান সাদী, শুটিংয়ের সাইফুল আলম রিংকি, সাবরিনা সুলতানা, ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমসহ অনেকে।
মানব বন্ধনে দাঁড়িয়ে কামরুন নাহার ডানা বলেন, “আমরা প্রকৃত ক্রীড়া সংগঠকরা বিভিন্ন সময় ধরে অবহেলিত। স্বাধীনতার ৫৫ বছরেও আমরা সঠিক মূল্যায়ন পাইনি। বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা সভাপতি ও টেকনিক্যাল পদ সাধারণ সম্পাদক পদে। বিভিন্ন জেলায় ও বিভাগে পলিটিকাল লিডাররা চলে আসে এবং মহিলা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায় ওরা চলে আসে। এটা নৈরাজ্য।”
তিনি যোগ করেন, “ আমরা জীবনের বেশিরভাগ সময় খেলাধুলায় দিয়েছি। অন্য জায়গায় সময় দিলে আরও ব্যক্তিগত জীবনে অন্যভাবে দাড়াতে পারতাম। কিন্তু আমরা গর্ব বোধ করি। দেশকে বিদেশের মাটিতে পরিচিত করিয়েছি। প্রতিনিধিত্ব করেছি। কিন্তু আমরা কাজ করার কোনও সুযোগ পাই না। আমরা আশা করব অন্তবর্তীকালীন সরকার এখানকার অসামঞ্জস্যতা দূর করার জন্য এমন একটা রূপরেখা তৈরি করবে যে ক্রীড়াঙ্গনের লোক দ্বারা যেন পরিচালিত করা হয়। আমরা চাইনা ক্রীড়াঙ্গনে রাজনীতির কেউ প্রতিনিধিত্ব হোক।”
ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, “যে উদ্দেশ্য সামনে নিয়ে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা জীবন দিয়েছে তারা যে পরিবর্তনটা চেয়েছে সেই পরিবর্তনের দিকে আমাদের যাওয়া উচিত। গত ১৫ বছর যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়েছে যেভাবে ক্রীড়াক্ষেত্র পরিচালিত হয়েছে আমরা চাইনা সেভাবে পরিচালিত হোক। আমরা দেখেছি এখানে যাদের যোগ্যতা নেই যাদের সঙ্গে খেলাধুলার সম্পর্ক নেই তারাই এসে খেলাধুলার হাল ধরার চেষ্টা করেছে। তাদের নিজস্ব স্বার্থের কারণে। গত কিছুদিন আমাদের ক্রীড়াক্ষেত্রে কোনও সাফল্য নেই অর্জন নেই আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আমরা এখানে পরিবর্তন চাই। আমরা চাই যাদের যোগ্যতা আছে যারা খেলাধুলা নিয়ে জীবন কাটিয়েছে এটা নিয়ে চর্চা করেছে তারা যেন এটা সামলানোর দায়িত্ব পায়। যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন তারা যেন এটার দিকে মনোযোগি হন।”
জোবেরা রহমান লিনু বলেন, “আমরা একত্রিত হয়েছি রাজনীতিমুক্ত ক্রীড়াঙ্গন চাই। আমি ১২ বছর ক্রীড়াঙ্গন থেকে দূরে। আমাকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। ক্রীড়াঙ্গনে আমার জন্য দুঃখজনক। আমি ক্রীড়াঙ্গনে আছি ৫০ বছর। কেড়ে নেওয়া হয়েছে ১২ বছর। ফেডারেশনে ঢুকতে পারিনি। আমি চাই যেই আসুক না কেন ফেডারেশন পরিচালান করবে যে সেরকম যোগ্য ব্যক্তি দরকার। এখন পছন্দের লোক নিয়ে ফেডারেশনে কমিটি করা হয়েছে। টিটিতে এটা হয়েছে। আমরা আসতে চাই। দেশের জন্য কাজ করতে চাই।”
এরপর সোনাম সুলতানা সোমা বলেন, “এখানে অনেক আরাজকতা হয়েছে। ক্যাম্পে অনিয়মের প্রতিবাদ করি। তাই আমাদের ক্যাম্প থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। এটা করেন সহসভাপতি খন্দকার হাসান মুনীর। এই ধরনের লম্পটের থেকে ফেডারেশনকে বাঁচাতে চাই।”