যুক্তরাষ্ট্রে হারিকেন ‘হেলেন’র তাণ্ডবে অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ২০ লাখের বেশি ঘড়বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, আটলান্টিক মহাসাগরে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রে হানে আঘাত। এর প্রভাবে শুক্রবার দিনভর দেশটিতে প্রচুর বৃষ্টি হয়।
ক্যাটাগরি-৪ বা ৪ মাত্রার হারিকেন ‘হেলেন’ দেশটির ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। ফ্লোরিডা ও জর্জিয়াসহ ঘূর্ণিঝড়টি দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড শহরের উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের ঘূর্ণিবায়ুর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ মাইল (২২৫ কিলোমিটার )।
ঝড়টির প্রভাবে ফ্লোরিডার উপকূলে সর্বোচ্চ ১৫ ফুট উচ্চতার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হয়। অংসখ্য গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রাস্তা-ঘাট ডুবে যায়।
ফ্লোরিডার পর জর্জিয়া, টেনেসি, উত্তর ক্যারোলিনা এবং দক্ষিণ ক্যারোলিনার দিকে এগোতে থাকে ঘূর্ণিঝড়টি। এ সময় কমতে থাকে ঝড়ের গতিবেগও।
শুক্রবার বিকালের দিকে সাধারণ মৌসুমি ঝড়ে পরিণত হয় ‘হেলেন’, ঘণ্টায় ৫৫ থেকে ৩৫ কিলোমিটারে নেমে আসে বাতাসের গতিবেগ।
যুক্তরাষ্ট্রের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, স্থলভাগে আঘাত হানার পরবর্তী ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজের শক্তি ধরে রাখতে পেরেছিল ‘হেলেন’। পরে ধীরে ধীরে এটি সাধারণ মৌসুমি ঝড়ে পরিণত হয়। জর্জিয়ার ওপর দিয়ে উত্তরে অগ্রসর হওয়ার সময় হারিকেনটি দুর্বল হয়ে পড়ে।
আবহওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিধ্বংসী ক্ষমতার নিরিখে ঘূর্ণিঝড় হেলেনের অবস্থান ১৪ তম এবং প্রশস্ততা বা ব্যাপ্তির দিক থেকে তৃতীয়। ফ্লোরিয়ায় আছড়ে পড়ার সময় এই ঝড়টির ব্যাপ্তি ছিল ৬৭৫ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, টেনেসি, উত্তর ক্যারোলিনা এবং দক্ষিণ ক্যারোলিনার অধিকাংশ এলাকায় প্রবল বর্ষণ, ঝোড়ো হাওয়া এবং আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। কিছু স্থানে ৫০ সেন্টিমিটার (২০ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে।