যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় হারিকেন ‘মিল্টন’ এর তাণ্ডবে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। শক্তিশালী ঝড়ের কারণে এই অঙ্গরাজ্যের ৩০ লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। বন্যায় প্লাবিত হয়েছে অনেক এলাকা। অনেক এলাকায় ভারি বৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় সময় বুধবার শেষরাতে ঝড়টি আঘাত হানে। এ তথ্য দেশটির ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের (এনএইচসি)।
‘মিল্টন’ ক্যাটাগরি-৩-এ পরিণত হয়ে ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলে সারাসোটা কাউন্টির সিয়েস্তা কির কাছে আঘাত হানে। এ সময় বাতাসের একটানা গতি বেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০৮ কিলোমিটার।
‘মিল্টন’ আঘাত হানার আগে ফ্লোরিডার সেন্ট লুসি কাউন্টিতে টর্নেডো আঘাত হানে। টর্নেডোর তাণ্ডবে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, উদ্ধারকাজ শেষে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
অন্য একটি বড় মাত্রার ঘূর্ণিঝড় হেলেনের আঘাতের মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মিল্টন আঘাত হানল। হেলেনের তাণ্ডবে ফ্লোরিডা ও দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি রাজ্যে ২৩৫ জন প্রাণ হারিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে এনএইচসির বিবৃতিতে জানানো হয়, অত্যন্ত বিপজ্জনক ক্যাটাগরি-৩ এর হারিকেন ‘মিল্টন’ স্থলভাগে আঘাত হানলে বড় বড় ঢেউ উপকূলের দিকে আছড়ে পড়ে।
হারিকেনের আঘাতে সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছেন হারডি কাউন্টির বাসিন্দারা। পার্শ্ববর্তী সারাসোটা ও মানাটি কাউন্টিতেও সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ফ্লোরিডা জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কেভিন গুথরি বলেছেন, হারিকেনটি স্থলভাগে আঘাত হানার আগেই প্রায় ১২৫টি বাড়ি লন্ডভণ্ড করে দেয়, যার অনেকগুলো প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বানানো।
এনএইচসি জানায়, বুধবার শেষরাতে স্থলভাগে আঘাত হানার প্রায় ৯০ মিনিট পর ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের অবস্থান ছিল সারাসোটা কাউন্টি থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে। পরে কিছুটা দুর্বল হয়ে ২ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় মিল্টন। তখন এটির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৭৫ কিলোমিটার, যা ঘণ্টায় ২৬ কিলোমিটার বেগে পূর্ব-উত্তর পূর্বে অগ্রসর হচ্ছিল।
ফ্লোরিডার বন্দরনগরী ফোর্ট শেয়ারে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর জলোচ্ছ্বাসের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সেখানকার রাস্তাঘাট।
ফ্লোরিডার আটলান্টিক উপকূলে ফোর্ট পিয়ার্সের কাছে স্পেনিস লেকস কান্ট্রি ক্লাব এলাকায় তাণ্ডব চালায় হারিকেনটি। ধ্বংস হয়ে গেছে অনেক ঘরবাড়ি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি বিবৃতি দিয়েছেন, যেখানে ঝড়ে আক্রান্ত এলাকাবাসীদের আশ্রয়কেন্দ্র যেতে এবং সড়ক এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
সোশাল মিডিয়ায় প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, “সাহায্য আসছে, তবে সেটি আসার আগ পর্যন্ত আপনার স্থানীয় কর্মকর্তারা বাইরে যাওয়া নিরাপদ না বলার আগ পর্যন্ত আশ্রয় গ্রহণ করুন।”
তথ্যসূত্র : বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরা