ভারতীয় ক্রিকেটে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিতিশ কুমার রেড্ডি। তা হওয়ারই কথা, তার ঝলমলে পারফরম্যান্সেই যে বদলে গেছে মেলবোর্ন টেস্টের ছবি। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস থেকে ভারত এখনও বেশ পিছিয়ে, এরপরও যে ফলোঅন শঙ্কা কাটাতে পেরেছে ভারতের জন্য এটাই পরম স্বস্তির। আর এটা সম্ভব হয়েছে নিতিশের চমৎকার সেঞ্চুরিতে।
টেস্ট ক্যারিয়ারে এই ব্যাটার পেয়েছেন প্রথম সেঞ্চুরি। পরিস্থিতির বিবেচনায় এই শতকের মাহাত্ম্য তার কাছে অনেক বেশি। নিতিশ সেটি জানিয়েছেনও। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে থাকা দলকে টেনে তুলে ভালো অবস্থানে আনার পথে সেঞ্চুরি পাওয়ার তৃপ্তিই আলাদা। নিতিশ তার ক্যারিয়ারের প্রথম শতকে পেয়েছেন সেরকম তৃপ্তিই।
এজন্য মোহাম্মদ সিরাজ কৃতিত্বের দাবিদার! শেষ ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে এসে প্যাট কামিন্সকে না সামলালে যে সেঞ্চুরি অধারাই থেকে যেত নিতিশের। শেষ ব্যাটার হিসেবে সিরাজ যখন ক্রিজে এলেন, নিতিশ তখন ননস্ট্রাইক প্রান্তে ৯৯ রানে অপরাজিত। তখনও ওই ওভারে কামিন্সের ৩ বল বাকি।
মেলবোর্নে ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকরা জেগে উঠলেন। নিতিশকে সেঞ্চুরিতে বঞ্চিত করতে কামিন্স ও তার দলকে চিয়ারআপ করতে লাগলেন। কঠিন চাপে থাকা সিরাজ দৃঢ়মনোবলে কামিন্সের ৩ বল প্রতিহত করলেন। পরের ওভারে স্ট্রাইকে এসে চোখজুড়ানো স্ট্রেইট ড্রাইভে সেঞ্চুরি পূরণ করেন নিতিশ।
সিরাজের ক্রিজে আসার সময় ননস্ট্রাইক প্রান্তে থাকলেও সেঞ্চুরি মিস হওয়া নিয়ে ভাবেননি এই অলরাউন্ডার। তার বিশ্বাস ছিল, সিরাজের ওপর। এজন্য কৃতিত্বও তিনি দিয়েছেন এই পেসারকে। মেলবোর্ন টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিতিশ লিখেছেন, “সিরাজ ভাইয়ের ওপরও আমার বিশ্বাস ছিল।”
অবশ্য তার এই পোস্টে অন্য বিষয়ও খুঁজছেন অনেকে। বলা হচ্ছে, সিরাজকে তার কথাই অন্যভাবে মনে করিয়ে দিয়েছেন নিতিশ। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে ভাইরাল হওয়া এক সাক্ষাৎকারে জসপ্রিত বুমরার পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হওয়া সিরাজ বলেছিলেন, “শুধুমাত্র জাসি ভাইয়ের (বুমরা) ওপর আমার বিশ্বাস ছিল।”
নিতিশ আট নম্বরে যখন ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন, ভারতের স্কোর ছিল তখন ৬ উইকেটে ১৯১ রান। ওই জায়গা থেকে ওয়াশিংটন সুন্দরকে সঙ্গে করে দলকে টেনে তোলেন তিনি। সুন্দরের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে গড়েন ১২৭ রানের রেকর্ড জুটি। সুন্দর আউট হলেও ১০৫ রানে অপরাজিত নিতিশ।
