মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে।
একই অভিযোগে পরোয়ানা জারি হয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োহাব গালান্ত এবং হামাসের সামরিক শাখার নেতা মোহাম্মেদ দেইফের বিরুদ্ধেও।
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক এই আদালত বুধবার এক বিবৃতিতে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে পরোয়ানা জারি করে বলে বিবিসি, সিএনএন ও আল জাজিরাসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।
গত বছরের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে ঢুকে হামলার পর েথকে গাজায় যুদ্ধ চলছে। বছর গড়িয়ে চলা এই যুদ্ধে গাজায় ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
আইসিসির বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় যুদ্ধে হত্যা, নির্যাতনের পাশাপাশি খাদ্য সরবরাহ আটকে মানুষকে ক্ষুধার্ত রাখার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে নেতানিয়াহুর দায় রয়েছে বলে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
রোম সংবিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত আইসিসির সদস্য হয়নি ইসরায়েল। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই আদালতে যোগ দিয়েছে।
ইসরায়েল সরকার নেতানিয়াহুর বিষয়ে তদন্তে এই আদালতের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। তা খারিজ করে দিয়েছে বিচারকরা।
সিএনএন লিখেছে, পরোয়ানা জারি করলেও তা কার্যকরের ক্ষমতা এই আদালতের নেই। ফলে কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়।
যার মানে দাঁড়ায়, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হলেও তাকে গ্রেপ্তার হতে হচ্ছে না। এমন ঘটনা আরও রাষ্ট্রনেতাদের ক্ষেত্রেও ঘটেছে।
বিবিসি লিখেছে, এই পরোয়ানা কার্যকরের বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত নেবে আইসিসির ১২৪ সদস্য রাষ্ট্র। যেখানে ইসরায়েলের পাশাপাশি তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও সদস্য নয়।
গত মে মাসে আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, গালান্ত ও দেইফের পাশাপাশি হামাসের দুই নেতা ইসমাইল হানিয়ে ও ইয়াহিয়া সিনওয়ারের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিলেন। তবে হানিয়ে ও সিনওয়ার ইসরায়েলি হামলায় এরই মধ্যে নিহত হয়েছেন।
হামাস নেতা দেইফের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে গত বছরের ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলার বিষয়টি উল্লেখ করেছে আইসিসি। তাকে ওই হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসাবে দেখানো হয়েছে।
দেইফ বেঁচে আছেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে এক বিমান হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েল দাবি করছে। তবে হামাস তা স্বীকার করেনি।
দেইফও খুন, ধর্ষণ, নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটানোর নেপথ্যে ছিলেন, এমন বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে আইসিসি।