Beta
রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫

ইসরায়েলকে রাফায় আগ্রাসন বন্ধের আদেশ আইসিজের

ICJ
[publishpress_authors_box]

ফিলিস্তিনের গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় আগ্রাসন বন্ধের পাশাপাশি এই ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহার ইসরায়েলকে আদেশ দিয়েছে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে দক্ষিণ আফ্রিকার করা মামলায় শুক্রবার জরুরি ভিত্তিতে এই যুগান্তকারী রায় দিয়েছে আইসিজে। গাজায় ইসরায়েলি অভিযান ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রায়ে।

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে আইসিজেতে মামলাটি করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

রায়ে গাজায় মানবিক সহায়তা অবাধে প্রবেশের জন্য রাফা সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়া এবং তদন্তকারী ও ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের গাজায় প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।

গাজায় প্রাণহানি ও মানবিক দুর্ভোগ কমানোর লক্ষ্যে চলতি বছর তৃতীয়বারের মতো আদেশ জারি করল আইসিজের ১৫ বিচারকের প্যানেল।

আইসিজের আদেশ মেনে চলা আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক। তবে আদেশ বাস্তবায়নে বাধ্য করার জন্য আইসিজের নিজস্ব কোনও পুলিশ বাহিনী নেই।

শুক্রবার রায় পড়ার সময় আইসিজের সভাপতি নওয়াফ সালাম বলেন, গত ২৮ মার্চ আদালতের নির্দেশিত অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থাগুলো ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটির গাজার পরিস্থিতির পুরোপুরি সমাধানে যথেষ্ট ছিল না।ফলে নতুন করে জরুরি আদেশ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সালাম বলেন, ইসরায়েলকে অবশ্যই “অবিলম্বে রাফায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে। ইসরায়েল গাজাবাসীদের জীবনের ওপর এমন কোনও পরিস্থিতি চাপিয়ে দিতে পারবে না, যা তাদের আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারে।”

গাজার পরিস্থিতিকে ‘বিপর্যয়কর’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, সেখানকার বর্তমান অবস্থা গাজাবাসীর অধিকারের অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি করেছে।

গত ৭ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় চলা ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনে প্রায় ৩৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত ইসরায়েলকে এক মাসের মধ্যে আদেশ কতটা বাস্তবায়ন করা হয়েছে তার অগ্রগতির বিষয়েও প্রতিবেদন দিতে বলেছে।

ইসরায়েল চলতি মাসের শুরুর দিকে গাজার দক্ষিণের শহর রাফায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যেখানে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষেধ সত্ত্বেও ইসরায়েল রাফায় হামলা চালায়।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বা আইসিজে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত। এটি নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত। বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি ও আইনি বিষয়ে পরামর্শমূলক মতামত দেওয়ার জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রতিষ্ঠা করা হয় এই আদালত।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) মতো আইসিজে গণহত্যা বা অন্য কোনও চরম গুরুতর অপরাধের বিচার করতে পারে না। তবে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইসিজের মতামত বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখে।

আইসিজের আদেশ পরিপালন বাধ্যতামূলক হলেও অতীতে তা অগ্রাহ্য করার নজিরও রয়েছে। এর আগে গত জানুয়ারিতে আইসিজের এক আদেশে গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইসরায়েলকে তার পক্ষে সম্ভব সবকিছু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

তবে সেই আদেশ বাস্তবায়ন না করে ইসরায়েল বলে আসছে, তাদের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যার অভিযোগ ভিত্তিহীন। গাজায় তাদের সামরিক অভিযানকে আত্মরক্ষামূলক কার্যক্রম হিসেবে উল্লেখ করে তারা বলছে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালানো হামাসের যোদ্ধারাই তাদের আক্রমণের লক্ষ্য।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত