লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা বন্ধ করা না হলে ইয়েমেনে হুতিদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।
রবিবার দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই হুঁশিয়ারি দেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর শনিবার রাতে মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম বড় ধরনের সামরিক হামলা চালান ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা কমপক্ষে ৫৩ ইয়েমেনির প্রাণ কেড়ে নেয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় পরদিন হুতি বিদ্রোহীদের নেতা আব্দুল মালিক আল-হুতি টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে জানান, যুক্তরাষ্ট্র যতদিন ইয়েমেনে আক্রমণ চালাবে, ততদিন তার যোদ্ধারাও লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা করবে।
তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র যদি আগ্রাসন অব্যাহত রাখে, তাহলে আমরাও আক্রমণ বাড়াব।”
হুতিদের ওপর শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করে ইয়েমেনের রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠনটির রাজনৈতিক ব্যুরো।
অন্যদিকে ইয়েমেনে হামলা থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানায় রাশিয়া।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধে লোহিত সাগরে ইসরায়েল ও পশ্চিমাদের বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর ২০২৩ সাল থেকেই হামলা চালিয়ে আসছে হুতিরা।
এতে বৈশ্বিক বাণিজ্যব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাহাজ লক্ষ্য করে হুতিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রতিহত করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে ব্যয়বহুল অভিযানে নামতে হয়।
গত জানুয়ারিতে ইসরায়েল ও হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলে লোহিত সাগরে হামলা স্থগিত করে হুতিরা।
তবে চলতি মাসে ইসরায়েল গাজায় খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশে বাধা দিলে সেখান থেকে সরে আসে তারা।
হুমকি দিয়ে গত ১২ মার্চ হুতিরা জানায়, গাজায় যদি ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা ঢুকতে না দেয়, তাহলে লোহিত সাগরে ইসরায়েলি জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা আবার শুরু হবে।
সোমবার ভোরে হুতিদের সামরিক মুখপাত্র দাবি করেন, লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান লক্ষ্য করে দ্বিতীয়বার হামলা চালায় তারা।
তবে এ দাবির পক্ষে কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
লোহিত সাগরে হুতিদের এ হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, রবিবার হুতিদের ১১টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। এসব ড্রোনের কোনোটিই ওই বিমানবাহী রণতরীর কাছে যেতে পারেনি।
এদিকে ইয়েমেনে হুতিদের লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান।
তাদের রেভল্যুশনারি গার্ডসের শীর্ষ কমান্ডার হোসেইন সালামি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “হুতি বিদ্রোহীরা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিয়েছে।
“আমরা আমাদের শত্রুদের সতর্ক করছি, যদি তারা তাদের হুমকি বাস্তবায়ন করে, তাহলে ইরান কঠোর ও বিধ্বংসী প্রতিক্রিয়া জানাবে।”