অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, যদি আওয়ামী লীগ আবার ফেরত আসে তাহলে আবারও ফ্যাসিবাদ ফেরত আসবে।
শনিবার চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে ছাত্র-জনতার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন বলে জানিয়েছে বাসস।
উপদেষ্টা বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে নস্যাৎ করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। বাকশাল প্রতিষ্ঠার পূর্বে বিরোধীদলীয় কয়েক হাজার মানুষ গুম খুনের শিকার হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশবিরোধী, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদীদের কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না।
মাহফুজ আলম এমন সময় একথা বললেন, যখন গণমাধ্যম থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চিত হচ্ছে আগামী মার্চে আওয়ামী লীগ নেতাদের দেশে ফেরার প্রসঙ্গ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে শনিবার ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “সাবেক মক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘সিনিয়র নেতারা মনে করেন আমাদের সবার ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া উচিত’।”
অন্যদিকে চাঁদপুরে মাহফুজ আলম বলেন, “বিএনপি, জামায়াত নির্বিশেষে যত রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন, শ্রমিক, নারী, আলেম-ওলামা আছেন সবাইকে নিয়ে একটি ইনসাফের বাংলাদেশ গঠন করব। যারা বাংলাদেশপন্থী তাদের নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পজিটিভ একটি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করব। বাংলাদেশের জনগণকে নিয়ে বৈষম্যহীন ইনসাফমূলক একটি শাসনব্যবস্থা কায়েম করব।”
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এর তিন দিন পর ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার।
এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রাণহানির ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০০টিরও বেশি মামলা হয়েছে। গণহত্যার অভিযোগে তার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার উদ্যোগও নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয় নিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, “আমাদের সরকারের অগ্রাধিকার রয়েছে খুনিদের বিচার করা। গুম-খুন-ধর্ষণের বিচার করা এবং সংস্কার করা। অবশ্যই বাংলাদেশপন্থী সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশকে উপহার দেওয়া। যেটি গত ১৬ বছরে সম্ভব হয়নি।”
এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হাজীগঞ্জের চারজন শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের আগমন উপলক্ষে জেলার হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তিতে তোরণ নির্মাণ করা হয়। উপদেষ্টাকে স্থানীয় নাগরিক কমিটির নেতারা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা, ইসলামী আন্দোলন ও ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে ফুলেল সংবর্ধনা জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল ও হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহীউদ্দীন ফারুক। ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও চাঁদপুর নাগরিক কমিটির নেতারা এবং ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের অসংখ্য নেতাকর্মী ও ছাত্র-জনতা।