ইচ্ছাকৃত খেলাপি না হলে শিল্প গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক। তবে খেলাপি প্রতিষ্ঠানের ঋণ এক বছরের মধ্যে পরিশোধ বা সমন্বয় না করা হলে পরবর্তী সময়ে ওই গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ পাবে না।
এ বিষয়টি উল্লেখ করে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে সার্কুলার জারি করা হয়েছে। সেখানে খেলাপি গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানকে নতুন ঋণ দিতে নির্দেশনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৭ কক (৩) ধরায় কোনও খেলাপি ঋণগ্রহীতার অনুকূলে কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোনরূপ ঋণ সুবিধা দিতে পারবে না বলে উল্লেখ রয়েছে। তবে ওই আইনের ৫ (গগ) ধারার বিধান অনুসারে পরষ্পর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গ্রুপভুক্ত কোনও খেলাপি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যদি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা না হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যদি প্রতিয়মান হয়, ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে, তাহলে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান খেলাপি হওয়ার কারণে ওই গ্রুপভুক্ত অন্য কোনও প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি খেলাপি বলে গণ্য হবে না।
এই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রুপভুক্ত কোনও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা না হলে সেক্ষেত্রে গ্রুপভুক্ত অন্য ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে ঋণ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক্ষেত্রে কোনও ঋণগ্রহীতা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হলে ওই খেলাপি ঋণগ্রহীতার অনুকূলে ব্যাংক কর্তৃক কোনোরূপ ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে না।
গ্রুপভুক্ত খেলাপি কোনও একটি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত বা তালিকাভুক্ত হলে ওই গ্রুপভুক্ত অন্য কোনও বা সব প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পূর্বানুমোদন নিয়ে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক।
তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গ্রুপভুক্ত কোনও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে চূড়ান্তভাবে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে তালিকাভুক্ত করার পর ওই তালিকাভুক্তির বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ঋণগ্রহীতা কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আপিল করা হলে, ওই আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঋণের অনুমোদনের জন্য আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো যাবে না।
গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে এ ধরনের ঋণ দেওয়ার পরবর্তী ১ বছরের মধ্যে গ্রুপভুক্ত খেলাপি ঋণ হিসাবটি বিদ্যমান আইন বা নীতিমালা অনুসরণ করে সমন্বয় বা নিয়মিত করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে খেলাপি ঋণটি সমন্বয় বা নিয়মিত না হলে গ্রুপভুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে নতুন করে আর কোনও ঋণ দেওয়া যাবে না।
গত ১২ মার্চ ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের আটকাতে নতুন নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে ইচ্ছাকৃত খেলাপির সংজ্ঞা নির্ধারণ ছিল। এ ধরনের খেলাপিদের চিহ্নিত করে তাদের নামে নতুন করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশনা দেওয়া হয় ওই নীতিমালায়।