Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

মানবপাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার সাবেক মন্ত্রীর

আদালত চত্বরে ইমরান আহমেদ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
আদালত চত্বরে ইমরান আহমেদ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সিন্ডিকেট করে অর্থ আত্মসাৎ ও মানবপাচারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তার দাবি, অনিয়ম করেছে এজেন্সিগুলো। সেখানে তার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।

সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম মেহেরা মাহবুবের আদালতে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন সাবেক এই মন্ত্রী।

তবে তিনি সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করলেও তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বিচারক।

ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে ঢাকার পল্টন থানায় মামলা হয়েছিল গক ৩ সেপ্টেম্বর। আফিয়া ওভারসিজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী আলতাব খান ১০৩ আসামির বিরুদ্ধে ২৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন। এই আসামিদের মধ্যে রয়েছে সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর নামও।

এই মামলায় রবিবার রাতে বনানী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে সোমবার তাকে আদালতে তোলেন পল্টন মডেল থানার এসআই নাজমুল হাচান।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “উনি দেখতে বয়স্ক কিন্তু চুরিতে যুবক। মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর ক্ষেত্রে তিনি ও তার ছেলে কয়েকটি রিক্রুটিং এজেন্সি সিলেক্ট করেন। তারপর তাদের কাছ থেকে প্রতি লোকের জন্য দেড় লাখ টাকা নেন। মামলার বাদীর কাছ থেকেও ১২ কোটি টাকা নিয়েছেন। এছাড়াও এ খাত থেকে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।”

পাল্টা বক্তব্যে আসামিপক্ষের আইনজীবী কামরুজ্জামান রিমান্ড বাতিল চান। তিনি বলেন, “মামলায় সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। ঘটনার সময় তিনি মন্ত্রীর দ্বায়িত্বে ছিলেনও না। আর আনুষ্ঠানিকভাবে এসব কাজ করে সেক্রেটারি লেভেলের লোকজন। কোন কোন রিক্রুটিং এজেন্সি থাকবে সেটাও মালশিয়া সরকার ঠিক করে দিয়েছিল।

“উনি এর সঙ্গে জড়িত নন। উনি বয়স্ক মানুষ, আমি উনার জামিন আবেদন করছি।”

এরপর ইমরান আহমদ কিছু বলতে চান কিনা তা জানতে চান বিচারক।

তখন আদালতকে ইমরান আহমেদ বলেন, “মাননীয় আদালত, তখন আমি মন্ত্রী ছিলাম ঠিকই কিন্তু আমি এসব কিছু করিনি। আমি ব্যবসা করিনি। আমি যা কাজ করেছি তা সবকিছুই ফাইল অনুযায়ী করেছি। মানুষের কাছ থেকে টাকা যা নেওয়ার তা এজেন্সিগুলো নিয়েছে।

“তারাই নির্দিষ্ট সংখ্যার অতিরিক্ত লোক নিয়েছে। আমার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।”

শুনানি শেষে আদালত ইমরান আহমেদকে তিন দিনের রিমান্ডে নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।

ইমরান আহমেদ সিলেট-৪ আসন থেকে বেশ কয়েকবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর প্রথমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। পরে তাকে এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। তবে সে দফায় মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি।

যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার এজাহারে বলা হয়েছে, “জনশক্তি রপ্তানিতে দুই হাজারের বেশি রিক্রুটিং এজেন্ট থাকলেও মামলার আসামিরা মাফিয়া সিন্ডিকেট চক্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করে সংবিধানের মূলনীতি পরিপন্থি জঘন্য অপরাধ করেছে। মামলার আসামি সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, সরকারি চাকরিরত অবস্থায় নিজ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছেলেকে সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য হিসেবে ব্যবহার করেছেন। আর সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ তার পরিবারের সদস্য অর্থাৎ তার স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলেকে বিধিবর্হিভূতভাবে প্রবাসী নামে অ্যাপস চালু করার অনুমোদন দিয়ে চক্রকে সহযোগিতা করেছেন।”

আসামিরা নিজেদের মধ্যে যোগসাজশে বাদীর সরলতার সুযোগে নিয়ে এবং ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে জোর করে অতিরিক্ত চাঁদা হিসেবে ১২ কোটি ৫৬ লাখ এক হাজার টাকা আদায় করেছে। এছাড়া অন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও ২৪ হাজার কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে আত্মসাৎ করেছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত