চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টের প্রথম ১০ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৪৮ কোটি ২৭ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার রেমিটেন্সের সাপ্তাহিক যে তথ্য প্রকাশ করেছে, সেখানে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
আগস্টের এ কয়দিনে যে অর্থ এসেছে, তা বর্তমান বিনিময় হারে (প্রতি ডলার ১১৮ টাকা) বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছে ৪ কোটি ৮২ লাখ ডলার; টাকার অঙ্কে ৫৬৯ কোটি টাকা।
মাসের বাকি ২১ দিনে (১১ থেকে ৩১ আগস্ট) এই হারে এলে মাস শেষে এই অঙ্ক দাঁড়াবে ১৪৯ কোটি ৬৩ লাখ (১.৪৯ বিলিয়ন) ডলার।
অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়েও রেমিটেন্স কমেছিল। ওই মাসে ১৯১ কোটি ৩৫ লাখ (১.৯৩ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছিল ৬ কোটি ১৭ লাখ ডলার। টাকার অঙ্কে যা ছিল ৭২৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে সহিংসতা, মৃত্যু, ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ, মামলা, গ্রেপ্তার ও প্রবাসীদের উৎকণ্ঠার প্রেক্ষাপটে জুলাই মাসে রেমিটেন্স কমেছিল বলে জানিয়েছিলেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা।
ওই সময় আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার জন্য সরকারকে দায়ী করে দেশে রেমিটেন্স না পাঠাতে সোশাল মিডিয়ায় কেউ কেউ প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
গত ১৯ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকিং কার্যক্রম চলে মাত্র এক দিন। শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই রাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। এরপর ২৩ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল।
ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকের অনলাইন লেনদেনও বন্ধ ছিল। কয়েক দিন লেনদেন বন্ধের পর ২৪ জুলাই ব্যাংক চালু হয়। ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ১৯ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই বৈধ পথে তথা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে কোনও প্রবাসী আয় আসেনি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর রেমিটেন্স প্রবাহে আরও ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে রাষ্ট্রক্ষমতার পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অনেকে রেমিটেন্স পাঠানোর প্রচারে নেমেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি আগস্ট মাসের প্রথম তিন দিনে (১ থেকে ৩ আগস্ট) ৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে দেশে। পরের সপ্তাহে অর্থাৎ ৪ থেকে ১০ আগস্ট এসেছে ৩৮ কোটি ৭১ লাখ ডলার।
সব মিলিয়ে ১০ দিনে এসেছে ৪৮ কোটি ২৭ লাখ ডলার।
গত বছরের আগস্টে ১৬০ কোটি (১.৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ (২.৫৪ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ ডলার; টাকার হিসাবে ছিল এক হাজার কোটি টাকা।
একক মাসের হিসাবে জুন মাসের রেমিটেন্স ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৬০ কোটি (২.৬ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিল প্রবাসীরা। গত বছরের জুনের চেয়ে এই বছরের জুনে ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি এসেছিল দেশে।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) চেয়ে ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি।