ভারত ও চীনের বৈরী সম্পর্কের মধ্যে বাংলাদেশ কীভাবে দেশ দুটির সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করছে, তার একটি ব্যাখ্যা দিলেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্ধু হলো ভারত, অন্যদিকে চীন হলো উন্নয়নের বন্ধু।
গত মাসে ভারত সফর করে আসা প্রধানমন্ত্রীর এই সপ্তাহে চীন সফরে যাওয়ার আগে শনিবার ঢাকার বেইলি রোডে পাহাড়ি ফল মেলা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন কাদের।
ভারতকে ‘পরীক্ষিত বন্ধু’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “৭১ সালের রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ আমাদের এই সম্পর্ক। আমরা সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি। দুঃসময়ের বন্ধুদের আমরা ভুলে যেতে পারি না। ৬৮ বছর পর আমরা সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি। সম্পর্ক ভালো বলেই শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি।’’
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদারত্বের বিষয়টি দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভারত আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু। আর চীন আমাদের উন্নয়নের বন্ধু। চট্টগ্রামে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল হয়েছে। এটা কে করে দিয়েছে? চীনারা।
“যে রাস্তা দিয়ে আসেন ঢাকা চট্টগ্রাম ফোর লেন, এই রাস্তার নির্মাণ কাজ করেছে সিনোহাইড্রো। পদ্মাসেতুর কাজ করেছে চীনের দুটি কোম্পানি। মেট্রোরেলের জন্য জাপান আমাদের সাহায্য করেছে। আরো দুটি পাতাল রেলের কাজ চলছে। আমার উন্নয়নের জন্য যেখানে আমি সুযোগ পাবো, সুবিধা পাবো; কেন আমি নেব না?”
৬ জুলাই থেকে শুরু হওয়া পাহাড়ি ফল মেলা চলবে ১২ জুলাই পর্যন্ত। ২৫ টি স্টলে বিক্রেতারা ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে ‘সময় লাগবে’
১৯৯৭ সালে আওয়মী লীগ সরকারের আমলে করা পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে আরও সময় লাগবে মনে করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে জনসংহতি সমিতির প্রধান নেতা সন্তু লারমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি বৈঠক করেছি। তাকে বলেছি, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে সময় লাগবে।
“কারণ মূল সমস্যা হলো ভূমি। ল্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রবলেম। সবচেয়ে জটিল হচ্ছে এই ভূমি সমস্যা। এর সমাধান এত সহজ নয়। তাছাড়া গত ১৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম বদলে গেছে। যেদিকে যাই শুধু উন্নয়ন চোখে পড়ে।”
শেখ হাসিনা গঙ্গার পানিচুক্তি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা বড় বড় কথা বলে তারাই ঢাকা এয়ারপোর্টে এসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি তো গঙ্গার পানি চুক্তির কথা ভুলেই গিয়েছিলাম’।”
ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আমরা যাই না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘তাদের (বিএনপির) মুখে বড় বড় কথা শোভা পায় না। মেরুদণ্ডহীনরা নতজানু হয়। বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ কোনও দিন নতজানু হবে না।’’
খালেদ জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘তার সুচিকিৎসার দাবিতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাওয়া হচ্ছে। নিজেরা পারে নাই লীগ্যাল ব্যাটলে, জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাচ্ছে। নিজেরা পারে নাই রাস্তায় একটা আন্দোলন করতে। তার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করছে।
“এখনও তারা (বিএনপি) ইস্যু খুঁজে বেড়াচ্ছে। এখন শিক্ষকদের আন্দোলনের ওপর ভর করবে। আবার তারা কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা কোর্টের ভার্ডিক্টের ব্যাপার।”
আওয়ামী লীগ কোথাও কোটা রাখেনি দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোথাও কোটা রাখিনি। আমাদের ব্যবস্থা ছিল কোটামুক্ত। আদালতে কারা মামলা করেছে? এটা আদালতের রায়। আমাদের কী বলার আছে। সরকারের এখানে কী দোষ? সরকারের কিছু করার নেই।”