সাফারি পার্কের দুই সিংহ-সিংহী, নাম দেওয়া হয়েছিল আকবর আর সীতা। আলাদা থাকলে এই নাম নিয়ে হয়ত কোনও সমস্যা হত না, তবে তারা রয়েছে একত্রবাসে। তাই এই নাম হয়ে উঠেছে বিতর্কের বড় বিষয়। এখন এই নাম হারাতে যাচ্ছে তারা।
পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কের দুটি সিংহ-সিংহীর নাম পরিবর্তনের আদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কারণ এই নামকরণে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ উঠেছে।
ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ঘনিষ্ঠ হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) সিংহ দুটির নাম নিয়ে এই অভিযোগটি তোলে।
তাদের অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সিংহটির নাম রাখা হয়েছে মুঘল সম্রাট আকবরের নামে, আর সিংহীটির নাম রাখা হয়েছে হিন্দুদের দেবতা রামের স্ত্রী সীতার নামে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি, সীতা রামের স্ত্রী এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে পবিত্র দেবী। তাই তার নামানুসারে সিংহীর নাম দেওয়াটা ধর্ম অবমাননার শামিল। এটি হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে সরাসরি আঘাত।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরা রাজ্য থেকে ওই সিংহ দম্পতিকে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে আনার পর তাদের আকবর ও সীতা নাম দিয়ে একই খাঁচায় রাখা হয়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ভিএইচপি ১৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে নালিশ জানায়। গত মঙ্গলবার থেকে ওই মামলার শুনানি শুরু হয়ে গত বৃহস্পতিবার আদেশ আসে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুগত ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চ বিতর্ক এড়াতে প্রাণী দুটোর নাম বদলানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে হিন্দু পরিষদ বলেছে, সিংহ-সিংহীর নাম পরিবর্তন করা না হলে বিক্ষোভ হবে।
হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র বিনোদ বংশাল বলেন, “সীতা ও আকবর এক সঙ্গে থাকতে পারে না।”
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ক্ষোভের কারণ কী
মুঘল সম্রাট আকবর ছিলেন ষোড়শ শতকে ভারতের একজন উদার মুসলিম শাসক। তাকে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার আলোকবর্তিকা হিসেবে গণ্য করেন অনেকে। তার একজন হিন্দু স্ত্রী ছিলেন এবং তার অনেক সভাসদও ছিলেন হিন্দু।
কিন্তু মুঘল রাজবংশের সব সম্রাটের মতো আকবরকেও হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা ঘৃণার চোখে দেখে।
ভিএইচপির পশ্চিমবঙ্গ সম্পাদক লক্ষ্মণ বনসাল মামলার আবেদনে লিখেছেন, ভিএইচপির সদস্যরা বলছেন, তারা সারা ভারত থেকেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ পেয়েছেন।
ভিএইচপির অভিযোগ, পুরুষ সিংহটিকে প্রথমে রাম নাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস কর্তৃপক্ষ তার নাম বদলে আকবর রাখে। তবে পশ্চিমবঙ্গ কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতে মামলা দায়েরের পরে সিংহগুলোকে আলাদা খাঁচায় স্থানান্তরিত করা হয়, যাতে একটি ‘মুসলিম’ সিংহ একটি ‘হিন্দু’ সিংহীর মিলন না হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে কট্টর হিন্দুদের আচরণ দেখে এমএফ নরওয়েজিয়ান স্কুল অফ থিওলজি, রিলিজিয়ন অ্যান্ড সোসাইটির সংস্কৃতি অধ্যয়ন বিভাগের একজন সহযোগী অধ্যাপক মৌমিতা সেন আল জাজিরাকে বলেন, “এমন একটি বিষয় নিয়েও আদালতে মামলা হওয়ায় আমি হতবাক হয়ে যাই। আমি এই ঘটনাকে বেশ উদ্বেগজনক বলে মনে করি।”
মৌমিতা সেন বলেন, “এতে যা বিপজ্জনক তা হলো এটি আইনের ক্ষেত্রে একটি বাজে নজির স্থাপন করবে।”
এর আগের বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তুচ্ছ ঘটনাও ভারতে এখন শাস্তিযোগ্য অপরাধ হয়ে উঠছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আমেরিকান শিক্ষাবিদ ওয়েন্ডি ডনিগারের বই দ্য হিন্দুস এর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ তোলার ঘটনারও উল্লেখ করেন। হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা দেশজুড়ে বইটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে এবং বইটিতে আগুন দেয়। পরে বইটি ভারতে নিষিদ্ধও করা হয়।
আর এখন এই সিংহের নামকরণের মধ্যেও হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা ‘লাভ জিহাদ’ দেখতে পাচ্ছেন।
লাভ জিহাদ কী
কোনও মুসলিম পুরুষ কোনও হিন্দু নারীকে বিয়ে করলে হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা সেই মুসলিম পুরুষের বিরুদ্ধে লাভ জিহাদের অভিযোগ করে। তাদের দাবি, হিন্দু নারীদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করার জন্যই মুসলিম পুরুষরা পরিকল্পিতভাবে এই কাজ করে।
ভারতে এই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ২০২১ সালে তুঙ্গে উঠে। সে বছর ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য হিন্দুদের ধর্মান্তর নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ণ করে। পাশাপাশি পুলিশও মুসলিম পুরুষ ও আন্তঃধর্মীয় দম্পতিদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান শুরু করে।
ইন্টারনেটে হাস্যরস
সিংহ-সিংহীর বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় সাইবারস্পেস বিশেষ করে এক্স ও ইনস্টাগ্রামে মজাদার মিম ও এআই দিয়ে বানানো চিত্র ও শিল্পকর্ম দিয়ে হাস্যরসাত্মক মন্তব্যের বন্যা বইছে।
মৌমিতা সেন বলেন, “আমি মনে করি, আপনি যখন একটি মিম তৈরি করেন, আপনি মাত্র একটি ছবির মাধ্যমে হাজার হাজার শব্দ বলে দেন।”
মৌমিতা সেন মূলত কলকাতার বাসিন্দা ছিলেন এবং ভারতের ইসলামবিদ্বেষী মিম নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি মিমকে রাজনৈতিক যোগাযোগের এমন একটি শক্তিশালী উপায় হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা ভাষা ও সাক্ষরতার সীমাবদ্ধতা ভেঙে দিয়েছে।
একটি মিম বানানো হয়েছে সিনেমার পোস্টারের মতো করে, যেখানে হিজাব পরা একটি বাঘের পেছনে আরও চারটি হিজাব পরা চিতাবাঘকে দেখা যাচ্ছে। ২০২৩ সালে ভারতে বিতর্কের জন্ম দেওয়া সিনেমা দ্য কেরালা স্টোরির অনুকরণে মিমটি বানানো হয়।
ভারতের কেরালা রাজ্যের নারীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার এবং সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসআইএলের (আইএসআইএস/আইএস) সদস্য বানানোর গল্প নিয়ে সিনেমাটি বানানো হয়। নির্মাতাদের দাবি, সিনেমাটি বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু ফ্যাক্ট-চেকিং গ্রুপগুলো বলছে, তাদের এই দাবির সমর্থনে তেমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ভারতীয় ইউনিয়ন মুসলিম লীগ পার্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত মুসলিম যুব লীগের সদস্যরাও কেরালার সবকটি (১৪টি) জেলায় এমন ঘটনার প্রমাণ সংগ্রহের জন্য কাউন্টার স্থাপন করে। তারা ঘোষণা দেয় যে, কেউ দ্য কেরালা স্টোরি নামের সিনেমাটিতে দেখানো ঘটনার মতো কোনও ঘটনার প্রমাণ দিতে পারলে তাকে ১ কোটি রুপি পুরস্কারও দেওয়া হবে।
এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বানানো একটি মিমে দেখা যায়, চারটি ছবিতে রাজকীয় পুঁতিযুক্ত মুঘল পোশাক পরা একটি সিংহের পাশে হিন্দু রাজকন্যার সাজে একটি সিংহী বসে ও দাঁড়িয়ে আছে। ক্যাপশনে লেখা, “লে ভাই কারেক্ট কার লিয়া”।
আরেকটি মিমের একটি ছবিতে একটি সিংহ ও সিংহীকে প্রেম বৃক্ষের নিচে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটির পাশে এক নারীর অট্টহাসির ভিডিও দেওয়া। ক্যাপশনে লেখা, “সিংহ আকবর ও সিংহী সীতা লাভ জিহাদের অভিযোগের মুখে কলকাতা হাইকোর্ট।”
অপর একটি মিমে দেখা যায়, কথিত মুসলিম সিংহ আকবর ও হিন্দু সিংহী সীতা মুখোমুখি জেলের ভিন্ন দুটি কামরার ভেতরে দাঁড়ানো অবস্থায় শিকের বাইরে মাথা বের করে আছে। এমন আরও অসংখ্য মিমে সয়লাব নেট দুনিয়া।
আল জাজিরা বলছে, ইন্টারনেটে আকবর ও সীতা সম্পর্কিত মিমগুলোর বেশিরভাগই হিন্দু জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সমালোচকরাই বানিয়েছেন। আবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সমর্থকরা মিমগুলো নিয়ে বিষোদগার করছেন।
ভারতে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক প্রতীক্ষা মেনন আল জাজিরাকে বলেন, এই ঘটনা এই দেশে কী নিয়ে ঠাট্টা করা যাবে বা করা যাবে না, তারও একটি ইঙ্গিত। হিন্দু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা রাজনৈতিক হাস্যরসকেও পার পেয়ে যেতে দেওয়া হয় না।
অনলাইনে ইসলামবিদ্বেষী হাস্যরসও কীভাবে জনমতকে প্রভাবিত করে, তা নিয়েও মেনন গবেষণা ও লেখালেখি করেছন। তিনি বলেন, সিংহ আকবর ও সিংহী সীতাকে নিয়ে যে তুলকালাম হলো তা পরিকল্পিত ও সংগঠিত ধারাবাহিক হিন্দুত্ববাদী প্রচারের একটি অংশ। নিয়মিত ক্ষোভের মাধ্যমে তারা নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেয়।
আদালত কী বলছে
সিংহগুলোর নামকরণ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যও প্রশ্ন তোলেন। রায়ের সময় তিনি তার পর্যবেক্ষণে বলেন, “হিন্দুদের দেবী সীতাকে ভারতের বড় সংখ্যক মানুষ পূজা করেন। আর আকবর ছিলেন একজন সুদক্ষ, সফল ও অসাম্প্রদায়িক মুঘল সম্রাট। সুতরাং তাদের নামে কোনও পশুর নাম রাখা ঠিক হবে না।”
আদালত আরও বলে, “হিন্দু দেব-দেবী, মুসলিমদের নবী বা ধর্মপ্রচারক, খ্রিস্টান ব্যক্তিত্ব, নোবেলবিজয়ী ও মুক্তিযোদ্ধাদের নামে পশুদের নাম হওয়া উচিৎ নয়।”
আদালত রাজ্য সরকারের আইনজীবী দেবজ্যোতি চৌধুরীর কাছে জানতে চায় যে, তিনি তার পোষা প্রাণীর নাম হিন্দু দেব-দেবীর নামে অথবা ইসলামের নবীর নামের রাখবেন কি না?
বিচারপতি বলেন, “আপনি কি আপনার পোষা প্রাণীর নাম কোনও হিন্দু দেবতা বা মুসলিম নবীর নামের রাখবেন? আমার মনে হয়, আমাদের কেউ কর্তৃপক্ষের আসনে থাকলে আমরা কেউ তাদের আকবর ও সীতা নাম দিতাম না। কোনও প্রাণীকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাম দেওয়ার কথা আমরা কেউ কি চিন্তা করতে পারি?”
এসময় সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, নয়াদিল্লি চিড়িয়াখানায় একটি সাদা বাঘিনীর নাম সীতা এবং মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে হিন্দুদের অগ্নি দেবতার নামানুসারে একটি চিতার নাম অগ্নি রাখা হয়েছে।
আদালত মামলাটিকে জনস্বার্থ মামলা হিসাবে পুনরায় শ্রেণীবদ্ধ করেছে।
মৌমিতা সেন এই বিবাদকে ‘হাস্যকরতার রাজনীতি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন, যার হাত থেকে এমনকি জঙ্গলের রাজাও রেহাই পায়নি।
নাম বদলের আশ্বাস সরকারের
সরকার পক্ষের আইনজীবী আদালতকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, প্রাণী দুটির নাম বদলে দেওয়া হবে। তবে তিনি বলেন, প্রাণী দুটোকে শিলিগুড়ি আনার আগেই ত্রিপুরা চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ ২০১৬ ও ২০১৮ সালে সেগুলোর এই নাম রেখেছিল।
তিনি আরও বলেন, সম্ভবত আদর করেই সিংহীটির নাম সীতা রাখা হয়।
তিনি আবেদনটি নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেন, এটি কোনও জনস্বার্থ মামলা নয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের রিট আবেদন খারিজ করারও অনুরোধ জানান সরকারি আইনজীবী।
তবে আদালত মামলার আবেদনকারীকে মামলাটিকে জনস্বার্থ মামলা হিসাবে দায়ের করার পরামর্শ দেয়। আবেদনটি এরপর জনস্বার্থ মামলার বেঞ্চে যাবে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আইনজীবী শুভঙ্কর দত্ত বিবিসিকে বলেন, “বিশ্ব হিন্দু পরিষদ প্রথমে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। এরপর আমাদের পিটিশন দাখিল করতে হয়েছে। আদালতের এই রায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জয়। আদালত তাদের যুক্তি মেনে নিয়েছেন।”
বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত পৌঁছালো কীভাবে
মামলার আবেদনকারী বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা দাবি করেছেন, তিনি সংবাদপত্রের মাধ্যমে নামকরণের বিষয়টি জানতে পারেন। কিছুদিন আগে শিলিগুড়ি থেকে প্রকাশিত একটি বাংলা সংবাদপত্রে ‘সঙ্গীর খোঁজে সীতা’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অভিযোগ, বিষয়টি আপত্তিকরভাবে ছাপা হয়েছে। এতে দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে।
মামলার আবেদনে দাবি করা হয়েছে, এ বিষয়ে তারা সারাদেশ থেকে অভিযোগ পেয়েছেন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ব্যাপক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে এবং সামাজিক অস্থিরতার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে আদালত আবেদনকারীকে প্রশ্ন করে, কেন তিনি এই বিষয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেননি? যদিও সরকারি আইনজীবীর দাবি, মামলাটি জনস্বার্থ মামলা হওয়ার যোগ্য নয়।
কিছু আইন বিশেষজ্ঞ অবশ্য বলছেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের প্রশ্নে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে।
কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী সুনীল রায় বিবিসিকে বলেন, “যেখানে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার বিষয়টি জড়িত, সেখানে আদালত সামাজিক সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখতে হস্তক্ষেপ করতে পারে। তাই আদালতের জায়গা থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত এটা।”
তিনি বলেন, “মামলাটি প্রাণীদের নামকরণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বরং একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা সম্পর্কে। এভাবে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা উচিৎ নয়।”
তথ্যসূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা