ভারত টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিয়ের এক নম্বর দল। বিশ্বকাপ শুরুও করেছে দাপটে। সেখানে পাকিস্তান হেরে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। তাই আজ ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানকে ফেভারিট মানছেন না খোদ পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ওয়াসিম আকরাম।
সম্প্রচারকারী চ্যানেল স্টার স্পোর্টসে আকরাম পাকিস্তানের জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে বললেন, ‘‘ভারতের ফর্ম দেখলেই বুঝবেন ওরা এগিয়ে থাকা দল। আমি এই ম্যাচে জয়ের হিসেবে ভারতকে ৬০ আর পাকিস্তানকে ৪০ শতাংশে এগিয়ে রাখছি। তবে টি-টোয়েন্টিতে একটা ভালো ইনিংস বা স্পেলে দ্রুত বদলে যায় ম্যাচ। আমার মনে হয় সবাই অপেক্ষায় আছে ম্যাচ অব দ্য টুর্নামেন্টের জন্য।’’
পাকিস্তানি সাবেক অধিনায়ক ওয়াকার ইউনিস একই অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক স্টেডিয়ামের পিচের জন্য ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।
স্টার স্পোর্টসে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমিরও হুমকি দিয়ে রাখলেন রোহিত শর্মাকে, ‘‘রোহিত বিশ্বমানের ব্যাটার। ও একবার ছন্দ পেয়ে গেলে, যে কোনও বোলিংকে শেষ করে দিতে পারে। রোহিতের বিপক্ষে বোলারের একমাত্র সুযোগ থাকে শুরুতে। তখন ওকে বোল্ড বা এলবিডব্লিউ করার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু ১৫-২০টা বল একবার খেলে ফেললে, ওকে থামানো অসম্ভব। তাই আমার টার্গেট থাকবে, প্রথমেই রোহিতের প্যাডে বল করা। আগেও যা করে আমি সাফল্য পেয়েছি ওর বিপক্ষে।’’
পাকিস্তানের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন দলের নতুন কোচ গ্যারি কারস্টেন। ভারতের ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী এই কোচ জানালেন, ‘‘আশা করছি জিতব। আমাদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে। আমি মাত্র তেরো দিন দলটার দায়িত্ব নিয়েছি। তবে সবাইকে দেখছি, নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে। টি-টোয়েন্টিতে আসলে খেলা খুব দ্রুত বদলে যায়। ইতিহাস নিয়ে আমি ভাবি না। আমাদের জিততে হলে সেরা খেলাটা খেলতে হবে।’’
পাকিস্তানি সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক অবশ্য আশাবাদী নন পাকিস্তান নিয়ে। টেন স্পোর্টসে তিনি বলেছেন, ‘‘ একজন ফাস্ট বোলিং অলরাউন্ডার নেই। কন্ডিশন বলছে একজন স্পিনার খেলাও, কিন্তু তুমি তা করোনি। এটা খুবই নিষ্প্রভ (অধিনায়কত্ব)। দেখে মনে হচ্ছে, আমরা সবকিছু আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি আর বিপক্ষকে আমাদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে দিচ্ছি।’’
পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে নিয়ে আগে থেকে অনুমান করা যায় না কখনও। তারা কখন কী করে বসে বলা কঠিন। ১৯৯২ বিশ্বকাপে তারা ছিল পিছিয়ে থাকা এক দল। কিন্তু ইমরান খানের নেতৃত্বে বিদায়ের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতেছে বিশ্বকাপ।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটাও তারা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে। তাই আজ ভারতের কাছে বাবরের দলের বিধ্বস্ত হওয়ার অনুমান করছেন অনেকে। তবে সুনীল গাভাস্কার ব্যতিক্রম। ‘পিএমজি’তে লেখা নিজের কলামে পাকিস্তানকে নিয়ে সতর্কতা জানালেন তিনি, ‘‘দুই দলের ম্যাচে সবসময়ই বলা হয় ভারতের ব্যাটারদের সঙ্গে পাকিস্তানের বোলারদের লড়াই। এবারও তাই হবে। ভারত অবশ্যই ফেবারিট আর পাকিস্তান আনপ্রেডিক্টেবল। নিউইয়র্কের পিচের চেয়েও বেশি আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। ওরা কখন কি করবে কেউ অনুমান করতে পারে না।’’
এই মাঠেই মহারণে মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। পিচ নিয়ে গাভাস্কার লিখেছেন, ‘‘নিউইয়র্কের পিচে বল থমকে আসছে। পাকিস্তানের বোলাররা সেটা কাজে লাগাতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ওরা যেমন বল করেছে, এর চেয়েও ওদের বোলিং শক্তি অনেক ভালো। ওরা জানে ভারতের বিপক্ষে ভালো বল করে ম্যাচ জেতাতে পারলে সবাই মনে রাখবে।’’
গত এক দশকে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়েছে ভারতের ক্রিকেট। মুখোমুখি লড়াইয়ে এই সময়ে তাই এগিয়ে রোহিত শর্মারাই। এ নিয়ে গাভাস্কার লিখেছেন, ‘‘আগের চেয়ে এখন ভারতীয় সমর্থকরা স্নায়ুর চাপে কম ভোগেন। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাকিস্তান হেরে যাওয়ায় এবার সেই আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে। তবে পাকিস্তানও চাইবে ভারতকে হারিয়ে নিজেদের সমর্থকদের বিশ্বাস জিততে। এটা ছোট ফরম্যাটের খেলা। দুইটা ভালো বল বা ভালো শটই কিন্তু ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে।’’