২০১৭ সালে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের আগে মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক ও ইমরুল কায়েস একসঙ্গে ইনজুরিতে পড়েন। ওই সিরিজের দলের সঙ্গে স্রেফ অভিজ্ঞতা নিতে গিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাটারের অভাবে ওই টেস্টে তার অভিষেক হয়ে যায়।
৭ বছর পর শান্ত নিজেই ওই রকম অবস্থানে। দলের হাল ধরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয় এনে দিয়েছেন। অথচ সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে খেলতে পারছেন না চোটের কারণে।
মুশফিকুর রহিমের পর নাজমুল হোসেন শান্তর ইনজুরিতে আফগানদের বিপক্ষে ব্যাটিং অর্ডার ঠিক করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাংলাদেশ। তবে একটা জায়গায় দুশ্চিন্তা নেই, তা হল নেতৃত্বে। এই সিরিজে সহ-অধিনায়ক হিসেবে যাওয়া মিরাজ গত ম্যাচেই ফিল্ডিংয়ের সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন। বোলিং পরিবর্তন করে বেশ সফলও ছিলেন।
নেতৃত্ব নিয়ে দুশ্চিন্তা না থাকলেও ব্যাটিং চিন্তা নিয়ে আজ সিরিজ জয়ের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শারজাতে জিততে না পারার গেরো কাটানো গেছে। সেই ধারাবাহিকতায় মাঠটিতে এবার সিরিজ জয়ের আনন্দ করতে চায় বাংলাদেশ। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাটিং দুশ্চিন্তা।
মুশফিককে না পাওয়ায় দলের একজন অভিজ্ঞ ব্যাটার হারিয়েছে বাংলাদেশ। ওই অর্ডারে ব্যাট করছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এবার শান্তর বদলী তিন নম্বরে ব্যাট করবেন কে!
এই প্রশ্নেরও উত্তর হতে পারেন মিরাজ। এর আগে তিন নম্বরে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা আছে তার। তবে শান্তর মতো সফল হতে হবে। মিরাজ ছাড়া এই পজিশনে খেলার অভিজ্ঞতা আছে সৌম্য সরকারের। এ সিরিজে ওপেনার হিসেবে যথেষ্ট সফল সৌম্য তিনে নামলে আজ জাকির হাসান একাদশে সুযোগ পাবেন।
ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলেও স্বস্তি আছে বোলিং নিয়ে। সবশেষ ম্যাচে দুর্দান্ত বল করেছেন নাসুম আহমেদ। ব্যাট হাতে ২৫ রানের ক্যামিও এবং বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে প্রায় বছর খানেক পরে রাজার মতো ফিরেছেন ওয়ানডেতে।
নাসুমের সঙ্গে তাসকিন, শরিফুলদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংটাই বাংলাদেশকে ভরসা দিচ্ছে। সেই ভরসায় ব্যাটিং বিভাগ নিয়ে দুশ্চিন্তা ভুলতে চায় বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ে দুশ্চিন্তা ভোলানোর পথ তৈরি করে দিয়েছে দ্বিতীয় ম্যাচ। আল্লাহ রহমান গাজানফার প্রথম ম্যাচে ২৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে যে ভয় তৈরি করেছিলেন তা কাটানো গেছে। শনিবার মাত্র ৩৫ রানে ২ উইকেট নিতে পেরেছেনন গাজানফার।
শান্ত ও সৌম্য বেশ ভালো ভাবে সামলেছেন এই বোলারকে। সৌম্য এই সিরিজে বিধ্বংসী হওয়ার দিকে নজর দিয়েছেন কম। বরং তার চরিত্র বদলে ইনিংস বড় করতে চেয়েছেন। খুব বেশি সফল না হলেও দুটো ইনিংসে বেশ ভালো করেছেন। তাতে শুরুর ১০ ওভার কাটিয়ে দেওয়ায় মিডলঅর্ডারদের কাজ সহজ হয়েছে।
এবার সৌম্য-শান্তকে দেওয়ায় অ্যাসাইনমেন্ট ধরেই এগোতে হবে টপঅর্ডারদের। তাতে শুরুর ১০ ওভারে ৩০-৪০ রান এলেও ক্ষতি নেই। একজন ব্যাটার দাঁড়িয়ে গেলে পরের দিকে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায়। শেষদিকে জাকের আলি ২৭ বলে ৩৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে দলকে জয়ের পথ দেখান।
প্রথম ম্যাচ বাজে ভাবে হারের পর এ সিরিজে বাংলাদেশ দলের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখছিল না অনেকেই। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আত্মবিশ্বাস এসেছে দ্বিতীয় ওয়ানডে থেকে। এবার সেই আত্মবিশ্বাস পুঁজি করে সিরিজ জয়ের জন্য এগোবে বাংলাদেশ।