Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫

উপদেষ্টা হাসান আরিফের জীবনাবসান

এ এফ হাসান আরিফ।
এ এফ হাসান আরিফ।
[publishpress_authors_box]

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ মারা গেছেন।

হাসান আরিফের ছেলে মুয়াজ আরিফ সকাল সন্ধ্যাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শুক্রবার দুপুরে তার বাবাকে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।  

ল্যাবএইডের জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-ই-খোদা বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হলে উপদেষ্টাকে বেলা ৩টার দিকে হাসপাতালেরে আনা হয়। ৩টা ৩৫ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

“উপদেষ্টা দুপুরে ভাত খাওয়ার সময় চেয়ার থেকে পড়ে যান। এরপর তাকে হাসপাতালে আনা হয়। তাকে মৃত অবস্থাই হাসপাতালে আনা হয়েছিল” বলেন মেহের।  

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ৮ আগস্ট গঠিত নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে ৮৩ বছর বয়সী হাসান আরিফকে প্রথমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ২৭ আগস্ট তিনি ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।  

সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল হাসান আরিফ এ নিয়ে দুই বার উপদেষ্টা হন। তিনি এর আগে ২০০৭ সালে গঠিত ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারেও ছিলেন। ২০০৮ সলে তিনি দায়িত্ব পান আইন, ধর্ম ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ‍৮ আগস্ট বঙ্গভবনে শপথ ‍নেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা। ফাইল ছবি : জীবন আমীর

১৯৪১ সালের ১০ জুলাই হাসান আরিফের জন্ম হয় কলকাতায়। তিনি কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক এবং পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এলএলবি করেন।

হাসান আরিফ ১৯৭০ সালে আইন পেশায় যুক্ত হন। তিনি ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  

হাসান আরিফ কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৬৭ সালে কলকাতা হাই কোর্টে। এই আইনজীবী ১৯৭০ সালে ঢাকায় এসে হাই কোর্টে কাজ শুরু করেন। তিনি ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন।

হাসান আরিফ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে আছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন লিমিটেড ও গ্রামীণফোন বাংলাদেশ।

তিনি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির কমপ্লেক্সের উপদেষ্টাও ছিলেন।  

প্রধান উপদেষ্টার শোক

উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার বিকালে দুবাই থেকে ঢাকায় অবতরণের পরপরই উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন তিনি। প্রয়াত উপদেষ্টাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিমানবন্দর থেকে ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে ছুটে যান প্রধান উপদেষ্টা।

এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “তার (হাসান আরিফ) আকস্মিক মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। উপদেষ্টা হাসান আরিফ একজন শীর্ষ আইনজীবী, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন।”

তার কয়েক দশকব্যাপী দীর্ঘ জনসেবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “হাসান আরিফ একজন উজ্জ্বল আইনজীবী হিসেবে এবং ভিন্নমতাবলম্বী, ভিন্নমতের কণ্ঠস্বর ও আমাদের সমাজের প্রান্তিক মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় তার সক্রিয় ভূমিকার জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”

প্রধান উপদেষ্টা শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

জানাজা

হাসান আরিফের প্রথম নামাজে জানাজা শুক্রবার বাদ এশা ধানমন্ডি ৭ নম্বর জামে মসজিদে, দ্বিতীয় জানাজা আগামীকাল শনিবার বেলা ১১টায় হাই কোর্ট চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে।

বর্তমানে বিদেশে অবস্থানরত তার মেয়ে ঢাকায় ফেরার পর দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তার মেয়ে ২২ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় দেশে পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত