উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল রবিবার সন্ধ্যা বা মধ্যরাতের দিকে মোংলার কাছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ ও বাংলাদেশের পটুয়াখালীর খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এসময় উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস ও পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধস হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রবিবার আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের ১১ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে এরই মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উপকূলীয় ১৬টি জেলা, দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তাদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রেমালের অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রহমান অবশ্য বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিভিন্ন অঞ্চল ৭ থেকে ১০ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “জলোচ্ছ্বাসের সময় যদি জোয়ার থাকে, তাহলে তা ৭ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতায় হবে। ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ পরিবর্তনের এখন পর্যন্ত কোনও আভাস পাওয়া যাচ্ছে না।”
বাংলাদেশ উপকূল থেকে এ মুহূর্তে ২৯৫ কিলোমিটার দূরে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এগুচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেই জানিয়েছিল, উপকূলে আঘাত হানার সময় রেমালের গতিবেগ বেড়ে ঘণ্টায় ১৩২ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারি (২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারি (২৪ ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটার বা তার বেশি) বৃষ্টি হতে পারে।
এর ফলে পাহাড়ি জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ভূমিধস হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।