গাজায় হামলা বন্ধ করে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেই শুধুমাত্র ইসরায়েলে হামলা করবে না ইরান। দেশটির তিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
গত সপ্তাহে, কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ফের আলোচনা শুরুর জন্য ইসরায়েল ও হামাসকে আহ্বান জানায়। এজন্য ১৫ আগস্টকে দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইরানও এই আহ্বানে ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা পেলে ইরানও আর ইসরায়েলে হামলা চালাবে না।
ইরানের তিন কর্মকর্তাও জানালেন, ইসরায়েল যদি আলোচনায় গাজায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় তাহলে ইরান আপাতত ইসরায়েলে হামলা চালাবে না।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া গত ৩১ জুলাই গুপ্তহত্যার শিকার হন ইরানের রাজধানী তেহরানে।
ইরান ও হামাস এর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। হামলার পরদিনই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইসরায়েলে হামলার নির্দেশ দেন।
হানিয়াকে হত্যার কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েল লেবাননের রাজধানী বৈরুতেও হামলা চালায়। এতে হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ফুয়াদ শুকুর নিহত হন। হিজবুল্লাহও তাই ইসরায়েলের ওপর প্রতিশোধ নিতে চায়।
এরপর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর জোট ওআইসিসহ পশ্চিমারা গত দুই সপ্তাহ ধরে ইরানকে ইসরায়েলে হামলা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে। বিনিময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
এর মধ্যেই গত শুক্রবার ইরানের ইসলামি বিপ্লবী বাহিনী ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়। প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলকে রক্ষায় তাদের প্রস্তুত থাকার কথা জানায়।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের ওপর থেকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিয়েছে। সৌদিকে আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য শক্তিশালী আক্রমণাত্মক অস্ত্র দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে একটি বিমানবাহী রণতরী ও পরমাণবিক সাবমেরিনও মোতায়েন করেছে।
ইরানের এক জেষ্ঠ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ হলে বা ইসরায়েল আলোচনা বিলম্বিত করলে ইরান সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালাবে। লেবাননের হিজবুল্লাহসহ ইরাক-সিরিয়ার শিয়া মিলিশিয়ারা ও ইয়েমেনের হুতিরাও এই হামলায় যোগ দেবে।
তবে ইরান এর জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা বেধে দিয়েছে কিনা সে ব্যপারে কিছু জানাননি ওই কর্মকর্তারা।
জাতিসংঘে ইরানের মিশন গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের প্রতিক্রিয়া সময়মতো এবং এমনভাবে করা হবে যাতে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি আলোচনার ক্ষতি না হয়।”
লেবাননের হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ দুটি জ্যেষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, তেহরান আলোচনার জন্য একটি সুযোগ দেবে, তবে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা পুরোপুরি ত্যাগ করবে না।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স